কবি: বাসবী ফ্রেজ়ার ও তাঁর লেখা কবিতার বই পেশেন্ট ডিগনিটির প্রচ্ছদ।
বাংলার শিকড় আর স্কটল্যান্ডের জীবনকে বারে বারে জুড়েছেন বাসবী ফ্রেজ়ার। এডিনবরা নেপিয়ার ইউনিভার্সিটি-র এই ইমেরিটাস অধ্যাপক ও সাহিত্যিকের কবিতার বই বেরিয়েছে: পেশেন্ট ডিগনিটি। কবির কাছে লকডাউন যেমন বিচ্ছেদ আর উৎকণ্ঠার, তেমনই মানুষের কর্মযজ্ঞ স্তব্ধ হওয়ায় নির্মল আকাশ দেখতে পাওয়ার, পাখির ডাক শুনতে পাওয়ার সময়ও বটে। তিনি লিখেছেন, মানুষের বেঁচে থাকাটাই যখন যুদ্ধ হয়ে দাঁড়ায়, তখন অন্য সব যুদ্ধ আর অস্ত্রশস্ত্রের অর্থহীনতা মানুষের কাছে স্পষ্ট হবে, এটুকুই আশা। তাঁর বইয়ে অতিমারির বহু দিকই রয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্কল্প, নির্বিঘ্ন প্রকৃতির সৌন্দর্য। ছবি এঁকেছেন স্কটল্যান্ডবাসী ভারতীয় শিল্পী বিভা পঙ্কজ।
ফ্রেজ়ার ভাবছেন, পয়লা বৈশাখে কতটা একলা থেকে গেল কলকাতার ময়দান! ট্র্যাফিকহীন পাঁচমাথা দেখে নেতাজিমূর্তি নিশ্চয়ই অবাক! লিখেছেন, গঙ্গার বুক থেকে ধোঁয়াশার চাদর সরতেই ফিরেছে ডলফিনেরা। প্রশ্ন করেছেন, হাজার বুটের আঘাত, গুলির শব্দ আর হ্রদের জলে রক্ত লাগার আগে কতটা সবুজ ছিল কাশ্মীর উপত্যকা? পরিযায়ীদের মিছিল দেখে মনে পড়েছে দেশভাগের পর ভিটেহীন মানুষের স্রোত। কিন্তু আজ তাঁরা নিজের দেশেই হাঁটছেন, ঘর হতে বহু ক্রোশ দূরে। ফ্রম দ্য গঙ্গা টু দ্য টে-র লেখিকা তাঁর দুই শহরের দুই বিখ্যাত মাঠের প্রসঙ্গ এনেছেন। অতিমারির হানায় কলকাতার ময়দান ফাঁকা। এডিনবরার ঘাসজমিতেও নেই পিকনিক দল। সব স্তব্ধ।
রঙিন সুযোগ
অগস্টে ন্যাশনাল গ্যালারি প্রতি দিন ট্রাফালগার স্কোয়ারে ত্রিশটা করে ইজ়েল সাজাচ্ছে। যে কোনও বয়সের সাধারণ মানুষ সেখানে আঁকতে, কল্পনার রং ফোটাতে পারেন। তবে আগে থেকে বুক করতে হবে। ন্যাশনাল গ্যালারির নানা সেশনেও যোগ দিতে পারেন। শিল্পের কলাকৌশল শেখা, শিল্প-ইতিহাস, সপরিবারে আঁকাজোকা— সব সুযোগই সবার জন্য। ‘স্কেচ অন দ্য স্কোয়ার’— বিনেপয়সার এই অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য সাধারণ মানুষকে অসাধারণ শিল্পকীর্তি সৃষ্টিতে উদ্বুদ্ধ করা। অনুষ্ঠানের সব সেশনের সব আসন ইতিমধ্যেই ভর্তি।
হলুদ তালিকায়
অতিমারির দুশ্চিন্তা বয়ে আরও একটি বছর সাঙ্গ হল, শুরু হল গরমের ছুটি। শেষমেশ ব্রিটিশ সরকারও ভারতের জন্য দরজা খুলল। আজই ভারত এল হলুদ তালিকায়। অর্থাৎ, ভারত থেকে ফিরলে হোটেল কোয়রান্টিনের দরকার নেই। আজ থেকেই ভারতে যাওয়ার ও ব্রিটেনে ফেরার উড়ানগুলি ভরে যাবে।
লন্ডনে হাতির হানা
গরমের মধ্যেও লন্ডনের পার্কে, গাছের ফাঁকে, পুকুরের ধারে দল বেঁধে ঝাঁকে ঝাঁকে দাঁড়িয়ে আছে হাতির দল। সত্যি নয়, পূর্ণাবয়ব মূর্তি। বনে হাতির সঙ্গে ঘর করা তামিলনাড়ুর জনজাতির মানুষ মূর্তিগুলি তৈরি করে পাঠিয়েছেন। যখন মূর্তিগুলো পার্কে যাচ্ছিল, মনে হচ্ছিল রাস্তা জুড়ে, বাকিংহাম প্যালেসের দরজার সামনে দিয়ে হাতি চলেছে দুলকি চালে। লন্ডনে খোলা আকাশের নীচে বৃহত্তম এই প্রদর্শনীটির বিষয় হল মানুষ ও বন্য পশুর সহাবস্থান। লক্ষ্য, হাতি সম্পর্কে ও পৃথিবীর জীববৈচিত্র রক্ষার বিষয়ে লোকশিক্ষা। উদ্যোক্তা ‘এলিফ্যান্ট ফ্যামিলি’ ও ‘রিয়েল এলিফ্যান্ট কালেকটিভ’। প্রথমটি শুরু করেছিলেন ক্যামিলা পার্কার বোলসের প্রয়াত ভাই মার্ক শ্যান্ড। মার্ক ভারতের হাতিদের নিয়ে প্রবল উৎসাহী, অসমের হাতি তারাকে দত্তক নিয়েছিলেন, লিখেছিলেন বই। চার্লস-ক্যামিলা প্রদর্শনীতে সহায়তা করছেন। রিয়েল এলিফ্যান্ট কালেকটিভের কর্ত্রী শুভ্রা নায়ার হাতিগুলির বিন্যাস-পরিকল্পনা করেছেন। মূর্তিগুলি নিলামের অর্থ যাবে ভারতে, যাতে সেখানে মানুষ ও বন্যপ্রাণী শান্তিতে সহাবস্থান করতে পারে।
বিস্ময়: বাকিংহাম পেরোচ্ছে হাতিমূর্তিরা।
টম চাচার কীর্তি
নাম যদি টম হয়, তা হলে জুটলেও জুটে যেতে পারে টোকিয়ো অলিম্পিক্স-এর সোনার মেডেল। ব্রিটেনের পাঁচ জন টম (ড্যালে, পিডকক, ম্যাকাওয়েন ও ডিন) সোনা জিতেছেন— রুপো আর ব্রোঞ্জ মিলিয়ে মোট ন’টা পদক টমদের। অলিম্পিক্স-এ সব টম নামধারীরা যদি একটা দেশ হতেন, তবে সে দেশ পদকসারণিতে একাদশ স্থানে থাকত!