আবার আট হাজারি পর্বতাভিযানে মৃত্যু। মাত্র তিন বছর (২০১৬) আগে এভারেস্ট আর ধৌলাগিরি অভিযানে গিয়ে জীবন্ত ফেরেননি গৌতম ঘোষ, পরেশ নাথ, সুভাষ পাল এবং রাজীব ভট্টাচার্য। এ বছর কাঞ্চনজঙ্ঘা আর মাকালু নিল তিন জন বাঙালি পর্বতারোহীকে— বিপ্লব বৈদ্য, কুন্তল কাঁড়ার এবং দীপঙ্কর ঘোষ।
রুদ্রপ্রসাদ হালদারের পাঠানো সংবাদে জানা গিয়েছে ‘‘অক্সিজেন আর জলের অভাবেই হার মানতে হয়েছে ওই দুই (বিপ্লব বৈদ্য, কুন্তল কাঁড়ার) এভারেস্টজয়ী পর্বতারোহীকে।’’ তা হলে আবার আঙুল তুলতে হয় পর্বতারোহণ সংস্থার ব্যর্থতার দিকে।
এজেন্সি বা সংস্থাগুলো লক্ষ লক্ষ টাকা নিচ্ছে অভিযানের ব্যবস্থাপনার জন্যে, কিন্তু সেই ভাবে পরিষেবা দিচ্ছে না বা দিতে পারছে না। তাদের বিরুদ্ধে সব থেকে বড় অভিযোগ, পর্যাপ্ত অক্সিজেনের ব্যবস্থা না রাখা। ২০১৬-তে সফল এভারেস্ট অভিযান থেকে ফিরে দেবরাজ দত্ত বলেছিলেন ‘‘নীচের ক্যাম্পগুলোতে শেরপা আর অক্সিজেনের ব্যাকআপ থাকে না।’’
২০১৩ সালে এভারেস্ট অভিযানে গিয়েছিলেন ছন্দা গায়েন। হাওয়ার প্রচণ্ড দাপটে তিনি নেমে আসেন সাউথকলে। লিখেছেন, ‘‘জোর করে টেন্টে ঢুকলাম।... আমাদের কাছে আর অক্সিজেন সিলিন্ডার নেই।’’ বেশি টাকা দিয়ে তাঁর শেরপা তাসি দুটো সিলিন্ডার জোগাড় করেছিলেন। সামিটের আগেই অক্সিজেন ফুরিয়ে গেল? এজেন্সি কী হিসেব করেছিল? এটা তো ঠিক, অত হাই অল্টিটিউডে সব সময় হিসেব মেলে না। স্নো-ব্লাইন্ডনেস বা চরম ক্লান্তিতে গতি মন্থর হতেই পারে। আর তাতেই টান পড়তে পারে অক্সিজেনে। তাই যথেষ্ট অক্সিজেনের জোগান নিশ্চিত করা খুব জরুরি। ওই রকম দুর্গম পথে ক্লান্ত হয়ে পড়া স্বাভাবিক। কিন্তু সেই ক্লান্তি যাতে বিপদ না বাড়ায়, সেই জন্যেই দরকার পর্যাপ্ত অক্সিজেন।
অনেক সময় সিলিন্ডারে অক্সিজেনের পরিমাণ কম থাকে এবং যান্ত্রিক ত্রুটিও থাকে। ২০১৬ সালে দেবরাজ দত্ত এক মারাত্মক অভিযোগ করেছিলেন। সাধারণত সিলিন্ডারের চাপ থাকা উচিত অন্তত ২৪০ মিলিবার, কিন্তু তিনি দেখেছিলেন সিলিন্ডারগুলোর চাপ ছিল ২০০ মিলিবার। এভারেস্ট জয় করে ফিরে সত্যরূপ সিদ্ধান্ত বলেছিলেন, ‘‘এ দিকে দেখছি অক্সিজেন আসছে, কিন্তু অক্সিজেন পাচ্ছি না।’’ যেখানে এভারেস্টের মতো শৃঙ্গ অভিযানে (শুধু এভারেস্ট কেন, যে কোনও উচ্চ শিখরাভিযানে) অক্সিজেন সিলিন্ডারগুলিই অভিযাত্রীদের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন, সেখানে এই ধরনের প্রতারণা অবশ্যই শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
তিন পর্বতারোহীর মৃত্যুর ক্ষেত্রে এমন কোনও ত্রুটির ভূমিকা আছে কি না, তদন্ত হোক।
সুবীর ভট্টাচার্য
কলকাতা-৬৭
ক্ষমতা বুঝে
যে পর্বতারোহীরা ২০১০ সাল থেকে আট হাজার মিটার ঊর্ধ্বের শৃঙ্গগুলিতে একক অভিযান করে সফল হয়েছেন, তাঁরাই একই সঙ্গে আত্মহননকারী অভিযানের উৎসাহও জুগিয়েছেন। ‘মাউন্টেনিয়ারিং স্পোর্টস’ দলবদ্ধ হওয়াই কাম্য, এত দিন সেটাই ছিল স্বাভাবিক।
এজেন্সিরা ভাল উপার্জনের ব্যবসা ফেঁদেছে, আর সেই ফাঁদে পা দিয়ে শুধুমাত্র নামের মোহে সহজলভ্য জয়ের আকাঙ্ক্ষায় অনেকেই ছুটে চলেছেন, পরিণতিতে কেউ মায়েদের কোল খালি করছেন।
নিজের ক্ষমতা, দম, দক্ষতা তথা ফিটনেস না বুঝে (৫ কেজি ওজন নিয়ে হাঁটতে সক্ষম লোক যদি ২০ কেজি নিয়ে এগোতে শুরু করে, পরিণতি সহজেই অনুমেয়) কঠিন শৃঙ্গাভিযানে অংশগ্রহণ করতে যাওয়া (বিশেষ করে একক অভিযানে) মোটেই সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। এক ক্যাম্প থেকে পরবর্তী উপরের ক্যাম্পের পথে রুট তৈরি করা, মাল ফেরি করা, বার বার নেমে আসা, আবার পরবর্তী উচ্চতার ক্যাম্পে যাওয়া— এই ভাবে পরের পর ক্যাম্পগুলি স্থাপন করাতে অংশগ্রহণ করতে পারলে বিভিন্ন উচ্চতার শরীর সক্ষমতা লাভ করতে পারে। সেই সঙ্গে মেডিক্যাল চেক-আপও জরুরি। এই পদ্ধতিগুলি একক অভিযানের ক্ষেত্রে প্রায় ব্রাত্য। হয়তো চার নম্বর ক্যাম্পে গিয়ে মনে হচ্ছে বুকটা চিনচিন করছে, প্রকাশ করলেই শীর্ষ ছোঁয়ার স্বপ্নটা ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে, তার চেয়ে ওটুকু চেপে রেখে এগিয়ে যাওয়াই শ্রেয়। এর পরিণতি ভয়াবহ, অথচ সেটাই ঘটে চলেছে। অনেক ক্ষেত্রে এজেন্সি নিয়োজিত শেরপাকে দুর্যোগ-মুহূর্তে অভিযাত্রী সদস্যের কাছে পাওয়াই যায় না।
২০১০ থেকে শুরু, পটাপট আট হাজার মিটার ঊর্ধ্বের শৃঙ্গগুলিতে অনেকে চড়ে বসছে, জয়ের পতাকা উড়ছে, সেই সঙ্গে মৃতদেহ উদ্ধার করে নামাতে হচ্ছে একের পর এক। অতীতের অভিজ্ঞরা বুঝেই উঠতে পারছেন না, কী ভাবে কী ঘটছে। এ যেন হায়ার সেকেন্ডারি অতিক্রম না করে গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট। ১৬/১৮/২০ লাখ টাকা স্পনসরশিপও জোগাড় হয়ে যাচ্ছে— যা অতীতে ছিল কল্পনাতীত। কিন্তু তার পর? সব দায়দায়িত্ব সবই ওই অংশগ্রহণকারী সদস্যের একারই।
শ্রীকণ্ঠ মিত্র
হাওড়া
‘দলিত’?
‘যোগী-রাজ্যে দলিত বালিকা খুন’ (২২-৬) শীর্ষক সংবাদটির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
মাননীয় হাইকোর্ট অব জুডিকেচার অ্যাট বোম্বে, নাগপুর বেঞ্চ-এর একটি জনস্বার্থ মামলা (পিআইএল নং-১১৪/২০১৬)-য় প্রদত্ত ৬ জুন ২০১৮’র আদেশের ৬ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, তফসিলি জাতি/জনজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত কোনও সদস্যকে বোঝাতে ‘দলিত’ শব্দটি ব্যবহার করা যাবে না।
এ প্রসঙ্গে রেজিস্ট্রার অব নিউজ়পেপার্স ফর ইন্ডিয়া (মিনিস্ট্রি অব ইনফর্মেশন অ্যান্ড ব্রডকাস্টিং, ভারত সরকার), দ্বারাও একটি সুনির্দিষ্ট বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
অনাদিরঞ্জন বিশ্বাস
পোর্টব্লেয়ার, দক্ষিণ আন্দামান
নো বল
এখন ক্রিকেটে অনেক সিদ্ধান্তই তৃতীয় আম্পায়ারের মারফত হয়। প্রতিটা আউটেই দেখে নেওয়া হয়, সেটা নো বল ছিল কি না। কিন্তু অনেক সময় এমন হয়, বোলার হয়তো নো বল করলেন, মাঠের আম্পায়ার সেটা দেখতে পেলেন না। সে ক্ষেত্রে যখন থার্ড আম্পায়ারকে জানানোর কেউ থাকে না, থার্ড আম্পায়ার নিজেই মাঠে জানাতে পারেন সেই মিস হওয়া নো বলটি। সেই ওভারের শেষে বা সেই বোলারের পরের ওভারেই একটা এক্সট্রা বল/ ফ্রি-হিট দেওয়া যায়।
অরিত্র মুখোপাধ্যায়
সৎচাষি পাড়া লেন, হুগলি
ওখানে এখানে
রেডিয়োতে শুনলাম, কেরলের কুদুলগানাল পুরসভা, বাড়ি রেজিস্ট্রি করতে গেলে দু’টি গাছ লাগানো বাধ্যতামূলক করেছে। প্রাণ জুড়িয়ে গেল। আর আমাদের এখানে?
বিনয় কুমার বসু
উত্তরপাড়া, হুগলি
তাঁরাই শেখাননি
‘আজকের দিন’ (১৫-৬) চিঠিতে লেখক বলেছেন, এখনকার প্রবীণরাই আদর যত্ন দিয়ে বর্তমান প্রজন্মকে লালন করেছেন। কিন্তু সেই নবীনরা আজ প্রবীণদের প্রতি বিরূপ। মুশকিল হল, আজকের প্রবীণরাই তাঁদের সন্তানদের মানবধর্ম না শিখিয়ে, অর্থমুখী করে লালন পালন করেছেন, যার পরিণতি আজ প্রবীণরা ভোগ করছেন এবং আক্ষেপ করছেন।
আজকের তরুণরাও চলেছেন ভোগবাদের পথে। তাঁরা কেউ সন্তানদের শেখান না, ‘সকলের তরে সকলে আমরা’। আইন করে এই মানসিকতার পরিবর্তন অসম্ভব। বর্তমান প্রজন্ম যখন প্রবীণ হবেন, একই আক্ষেপ করবেন।
অর্ণবকুমার সরকার
কলকাতা-৫৬