স্বামীজির শেষ ছবি নিয়ে শংকর-প্রণীত নিবন্ধের (‘স্বামীজির শেষ ছবি কোথায়?’, পত্রিকা, ৪-৭) প্রসঙ্গে বলা চলে, শ্রীরামকৃষ্ণের ছবি নিয়ে প্রথম বিস্তারিত গবেষণা করেন স্বামী বিদ্যাত্মানন্দ (পূর্ব নাম জন ইয়েল)। বেদান্ত সোসাইটি অব সাদার্ন ক্যালিফর্নিয়া থেকে প্রকাশিত ‘বেদান্ত অ্যান্ড দ্য ওয়েস্ট’ জার্নালে মার্চ-এপ্রিল, ১৯৬৫ সংখ্যায় প্রকাশিত হয় তাঁর ‘দ্য ফটোগ্রাফস অব শ্রীরামকৃষ্ণ’ প্রবন্ধটি। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, মহাসমাধির পর সুশোভিত পালঙ্কে শায়িত, ভক্তপরিবৃত শ্রীরামকৃষ্ণের দু’টি ছবি তোলা হয়। সেই পূর্ণাঙ্গ ছবি সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয় ক্রিস্টোফার ইশারউডের লেখা ‘রামকৃষ্ণ অ্যান্ড হিজ় ডিসাইপলস’ (১৯৬৫) গ্রন্থের মার্কিন সংস্করণে। কিন্তু বইটির ভারতীয় সংস্করণে ছবিটি কর্তিত। বিদ্যাত্মানন্দ লিখেছেন, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন থেকে প্রকাশিত বইগুলিতে এই ছবির নীচের অংশে শ্রীরামকৃষ্ণের শায়িত দেহটি বাদ দেওয়ার রীতি প্রচলিত। কারণ তাঁর রোগশীর্ণ দেহ ভক্তদের কাছে বেদনাদায়ক হতে পারে, এবং ভক্তের পক্ষে শ্রীরামকৃষ্ণের মৃত্যু অকল্পনীয়। ভক্ত হৃদয়ের ভাবাবেগকে সম্মান জানিয়ে রামকৃষ্ণ মঠের এই রীতিতে কোনও ভুল নেই। তাই এই ছবি লোকচক্ষুর আড়ালেই থেকে গিয়েছে। একই কারণে হয়তো, স্বামী বিবেকানন্দের তিরোভাবের পর তাঁর অন্তিমযাত্রার ছবি তোলা থেকে বিরত থেকেছেন তৎকালীন সন্ন্যাসীগণ।
বিভাস চন্দ
উইমেনস কলেজ, মেদিনীপুর