বছর পাঁচেক আগে পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগম (ডব্লিউবিটিসি)-এর প্রতিটি এসি ও প্রায় প্রতিটি নন-এসি বাসে ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড বসানো হয়েছিল। এই বোর্ডে বাসের রুট নম্বর ও দুই প্রান্তিক গন্তব্যের নাম ইংরেজি বা বাংলা বা উভয় ভাষায় পর্যায়ক্রমে ফুটে ওঠে। কখনও কখনও দুই প্রান্তিক গন্তব্যের নাম ছাড়াও বাসটির যাত্রাপথের উপর গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোর নামও এই ডিসপ্লে বোর্ডে প্রদর্শিত হয়। প্রায় প্রতিটি বাসের সামনে, পিছনে ও মাঝখানের দরজার উপরে এই বোর্ডগুলো লাগানো থাকে। এর আগে সরকারি বাসে রুট নম্বরটুকু লেখা থাকত শুধুমাত্র বাসের সামনে এক টুকরো লোহা বা প্লাস্টিকের পাতের উপর, কিংবা সাদা কাগজে অথবা উইন্ডস্ক্রিনের উপর চক বা চুন দিয়ে। সেই লেখা পড়তে দিনের বেলাতেই মানুষকে যথেষ্ট বেগ পেতে হত, বিশেষত বয়স্কদের। আর সন্ধ্যার পরে তা হয়ে উঠত দুষ্পাঠ্য। নিত্যযাত্রীদের সেই দুর্ভোগ থেকে অনেকটাই মুক্তি দিয়েছিল এই ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ডগুলো।
কিন্তু আমাদের রাজ্য তথা দেশে সরকারি ক্ষেত্রে উন্নয়নের আগ্রহ যতটা বেশি, রক্ষণাবেক্ষণের গরজ ততটাই কম। করোনাকালে প্রায় দু’বছর বাস চলাচল অনিয়মিত ছিল। তার পর যখন আবার স্বাভাবিক ভাবে পথে গণপরিবহণ চলা শুরু হল, তখন লক্ষ করা গেল কিছু কিছু বাসে ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ডগুলো অকেজো হয়ে গেছে। সেই বোর্ডগুলো সারানো তো হয়ইনি, বরং অন্য আরও অনেক বাসে তা অকেজো হয়েছে। এখন তো হাতেগোনা সরকারি এসি ও নন-এসি বাসে এই বোর্ডগুলো জ্বলতে দেখা যায়। বহু সরকারি বাসে ফের সেই মান্ধাতার আমলের চক-চুন, কালি-কাগজ বা রংচটা বোর্ড ফিরে এসেছে। সঙ্গে ফিরে এসেছে বিনামূল্যে নিত্যযাত্রীদের চোখের ক্ষমতা যাচাই করার সরকারি সুযোগও। দূর থেকে ছুটে আসা কোনও সরকারি বাসের ঝাপসা হয়ে যাওয়া রুট নম্বর পড়ে সঠিক বাসে উঠতে পারলে আমাদের নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে হয়। কিছু মানুষ তো সরকারি বাস দেখলেই হাত দেখিয়ে দাঁড় করিয়ে দেন। তার পর যখন বুঝতে পারেন এটি তাঁর গন্তব্যের বাস নয়, তখন তিনি দূরে সরে দাঁড়ান। এতে সংশ্লিষ্ট বাসের যাত্রী ও কর্মীদের সময় এবং জ্বালানি উভয়েরই খানিক অতিরিক্ত ব্যয় হয়।
পরিবহণমন্ত্রী ও সচিবের কাছে দাবি রইল, তাঁরা যেন সপ্তাহে অন্তত এক দিন সরকারি গাড়িতে না চড়ে সরকারি বাসে নিজ নিজ গন্তব্যে ভ্রমণ করেন। তা হলে শুধু এই ব্যাধিটাই নয়, সরকারি পরিবহণ ব্যবস্থার বাকি ব্যাধিগুলোও মাসখানেকের মধ্যে মর্মে মর্মে উপলব্ধি করতে পারবেন তাঁরা। তাতে আগামী দিনে সেই ব্যাধিগুলি সারাতে ওঁদের অবশ্যই সুবিধা হবে।
ইন্দ্রনীল ঘোষ, লিলুয়া, হাওড়া
দুর্নীতি বন্ধ
গত ৭ অগস্ট তারকেশ্বরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে আমার কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। জন্ম শংসাপত্রের জন্য সমস্ত প্রয়োজনীয় নথিপত্র আমরা প্রথমেই নার্সিংহোমে জমা দিয়েছিলাম মেয়ের নামটি ছাড়া। এর পর ৯ অগস্ট জন্ম শংসাপত্রের প্রাথমিক নথিভুক্তিকরণের মেসেজটি আমার মোবাইলে পাই। পরের দিন নার্সিংহোম থেকে ছাড়া পাওয়ার পর আমাদের মৌখিক ভাবে সন্তোষপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে যোগাযোগ করতে বলা হয় নার্সিংহোমের তরফে। এর দু’সপ্তাহেরও বেশি পরে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে গেলে ওখানে সমস্ত নথিপত্রের জ়েরক্স কপি আবার জমা দিতে হয়। সঙ্গে আমাকে ২০০ টাকাও দিতে বলা হয়। তার পর ওই পঞ্চায়েতের কর্মী আমাকে একটি অন্য ডোনেশন লেখা রশিদ দেন। আমার মতে এটি সম্পূর্ণ বেআইনি, যে-হেতু পুরো প্রক্রিয়াটিই এখন অনলাইনে হয় যাতে আমরা বাড়ি থেকেই শিশুর নাম দিতে পারি এবং এর জন্য কোনও ফি নেই। ওই ঘটনার দু’দিন পর মেসেজের মাধ্যমে ডিজিটাল স্বাক্ষর করা জন্মের শংসাপত্র আমার মোবাইলে পাই।
এ ক্ষেত্রে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এই কারণে যে, একটি শিশুর জন্মগ্রহণের শুরু থেকেই দুর্নীতির আশ্রয় নিতে হল। এটি বন্ধ হওয়া উচিত।
প্রমিত রেজ, ধনেখালি, হুগলি
স্টেশনে অব্যবস্থা
এই বাংলার বিভিন্ন রেলওয়ে স্টেশনে যাতায়াতের সুবাদে কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতা পেশ করার উদ্দেশ্যে এই পত্রের অবতারণা। অধিকাংশ স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে অসংখ্য দোকানের অস্তিত্ব রীতিমতো মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নানা ধরনের দ্রব্যসামগ্রীর স্থায়ী দোকানের জন্য প্ল্যাটফর্মের আসল চেহারাটাই দেখা যায় না। দোকানগুলির কারণে যাত্রী-সাধারণের ট্রেনের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকাটা যথেষ্ট সমস্যার ব্যাপার। কারণ কোনও ভাবে দোকানের সামনে দাঁড়ালেই ঘোর আপত্তি ওঠে। অনেক ক্ষেত্রে আবার যাত্রী-সাধারণের জন্য বরাদ্দ বসার জায়গাতেও দ্রব্যসামগ্রী সাজিয়ে রাখা থাকে। মাঝে-মাঝে মনে হয় কোনও স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে নয়, হাটে-বাজারে দাঁড়িয়ে আছি।
বহু স্টেশনে ট্রেন আসা-যাওয়ার পূর্ব ঘোষণাও করা হয় না। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, গড়িয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে এমন ঘোষণার কোনও ব্যবস্থা নেই। সাধারণ মানুষ হন্যে হয়ে এ দিক-ও দিক দৌড়োদৌড়ি করে ট্রেনের গন্তব্যস্থল জেনে নিতে বাধ্য হন। এমন অব্যবস্থা ভারতীয় রেলওয়ের মতো প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে বেমানান। অনবরত ‘যাত্রা শুভ হোক’ বা ‘স্টেশন চত্বর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন’-এর মতো যান্ত্রিক ঘোষণা সে ক্ষেত্রে প্রহসন মনে হয়। রেল কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধ, উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণে তৎপর হন।
বিশ্বজিৎ কর, কলকাতা-১০৩
লিখিত সতর্কতা
অন্যান্য টেলিকম পরিষেবা কোম্পানির মতো আমার টেলিকম পরিষেবার রিচার্জের মূল্যও অনেকটাই বেড়েছে। সমস্যা হল, রিচার্জ শেষ হওয়ার তিন-চার দিন আগে থেকেই লিখিত সতর্কবার্তা আসতে শুরু করে। শুধু তা-ই নয়, কাউকে ফোন করলেও প্রথমে রিচার্জ শেষের কথা শোনানো হয়, তার পর লাইন দেওয়া হয়। জরুরি অবস্থায় ফোন করতে গেলে ব্যাপারটা অত্যন্ত বিরক্তিকর লাগে। কোম্পানিগুলোকে অনুরোধ, শুধুমাত্র লিখিত ভাবে সতর্ক করলেই ভাল হয়।
সুরশ্রী চক্রবর্তী,কলকাতা-২৯
নরম মোড়ক
বেশ কিছু দামি ট্যাবলেট ও ক্যাপসুলের মোড়ক এত শক্ত হয় যে তা ছিঁড়ে ওষুধ বার করতে গিয়ে অনেক সময় মোড়কের ধারালো কোণ লেগে আঙুল কেটে যায়। মোড়ক ফাটিয়ে বার করলেও ট্যাবলেট এ দিক-ও দিক ছড়িয়ে যায়। তাই ওষুধ প্রস্তুতকারকদের কাছে আবেদন, ওষুধের সংরক্ষণের জন্য নরম মোড়ক ব্যবহার করা হোক।
বলীন্দ্র বৈদ্য,ডায়মন্ড হারবার, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
ভিড় মেট্রো
পুজোর আগে কেনাকাটা পুরোদমে চলছে। দোকানের উপচে পড়া ভিড় নেমে এসেছে রাস্তায়। সঙ্গে চলছে বৃষ্টি, ফলে রাস্তায় গাড়ির গতি যথেষ্ট ধীর। অনেক স্কুল, অফিস এখনও খোলা। ফলে ব্যস্ত সময়ে কলকাতার একমাত্র ভরসার জায়গা হতে পারত মেট্রো। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে তারও ভয়ঙ্কর অবস্থা। সন্ধের দিকে ট্রেন সময়ে মিলছে না। দেরি করে যেগুলি আসছে, তাতে প্রবল ভিড়। ভিড়ের চাপে দরজা ঠিকমতো বন্ধ হচ্ছে না। এমন ভিড় যে এই সময়ে হবে, মেট্রোকর্তারা কি আগে তা জানতেন না? জানলে সেইমতো ব্যবস্থা করা হয়নি কেন?
অনিন্দিতা পাত্র, কলকাতা-৩৩