সুজিষ্ণু মাহাতোর ‘সাইকেলে মহামারি জয়’ (রবিবাসরীয়, ১৪-৬) নিবন্ধে সাইকেলে করে বাঙালির গবেষণা, বিপ্লবীদের কর্মকাণ্ডের কথা সহ আরও অনেক কিছু লেখা হলেও, বাদ পড়ে গেছে সাইকেলে বাঙালির বিশ্বভ্রমণের কথা। ১৯২৬ সালে বাঙালি ভূপর্যটক বিমল মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আরও তিন অভিযাত্রী অশোক মুখোপাধ্যায়, আনন্দ মুখোপাধ্যায় ও মণীন্দ্র ঘোষ— সাইকেল নিয়ে বিশ্বভ্রমণের উদ্দেশ্যে বার হন। যদিও তার আগে বিমলবাবু ১৯২১ থেকে ১৯২৬-এর মধ্যে সাইকেলে ভারতভ্রমণ করেন।
১৯২৬ সালের ১২ ডিসেম্বর কলকাতার টাউন হলে সভা করে তাঁদের যাত্রা শুরু হয়। এর পর আরব, ইরান, সিরিয়া, তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র, কলম্বিয়া, ইকুয়েডর, পেরু, হাওয়াই দ্বীপ হয়ে ব্রিটেন, আইসল্যান্ড, সুইডেন ঘুরে জাপান, চিন, হংকং, তাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া প্রভৃতি দেশ ঘুরে ১৯৩৭ সালে ভারতে ফেরা। যদিও মণীন্দ্র জার্মানিতে থেকে যান এবং অশোক ও আনন্দ ইংল্যান্ডের পর থেকে বিশ্বভ্রমণে ইস্তফা দিয়ে পাকাপাকি ভাবে ব্রাজিলে থেকে যান। এর পর বিমল মুখোপাধ্যায় একাই বাকি পথ রওনা দেন এবং অবশেষে প্রথম যাত্রা শুরুর দীর্ঘ ১১ বছর পর স্বদেশের মাটিতে ফেরেন। ভূপর্যটক বিমলবাবুর সাইকেল নিয়ে বিশ্বভ্রমণের কাহিনি লিপিবদ্ধ আছে তাঁর লেখা (১৯৮৬ সালে প্রকাশিত) দুচাকায় দুনিয়া গ্রন্থে।
প্রণয় ঘোষ
কালনা, পূর্ব বর্ধমান
শিক্ষক বদলি
রাজ্যের সকল শিক্ষক শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মী স্কুলে যেতে প্রস্তুত। কিন্তু গণপরিবহণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কী ভাবে দূর দূরান্তে যাতায়াত করবেন, তা নিয়ে চিন্তিত। বিশেষ করে যাঁরা ভিন্ন জেলা বা দূরে কর্মরত। তাই অতি শীঘ্রই ইচ্ছুক সকলকে নিজ জেলায় অথবা নিকটবর্তী স্থানে বদলির প্রক্রিয়া শুরু করুক শিক্ষা দফতর। দূরে যাতায়াতের ফলে শ্রম ও সময় নষ্ট হচ্ছে, আর তার প্রভাব পাঠদানেও পড়ছে।
বদলি প্রক্রিয়ার দুটি পদ্ধতি: আপস (মিউচুয়াল) ও সাধারণ (জেনারেল) আরও আধুনিক ও সরল করতে হবে। প্রসঙ্গত, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী কয়েক মাস আগে সকলকে নিজ জেলায় পোস্টিং দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। সেই অনুযায়ী শিক্ষা দফতরের আদেশানুসারে, বিদ্যালয়গুলি iOSMS স্যালারি পোর্টালে সকলের কর্মস্থল ও স্থায়ী ঠিকানা সহ পেশাগত তথ্যাদি আপডেট করে। সুতরাং, এই তথ্যগুলি লিপিবদ্ধ থাকায়, সত্বর বদলি সংক্রান্ত প্রক্রিয়া শুরু করা যেতে পারে।
আমাদের পরামর্শ: ১) অনলাইনে সকলের পোস্টিং অপশন নিয়ে জেলা, পড়াবার বিষয়, আর পোস্ট অনুযায়ী একটা তালিকা প্রকাশ করলে, নিজ জেলায় অথবা নিকটবর্তী স্থানে বদলির জন্য মিউচুয়াল ট্রান্সফারে সকলের সুবিধা হবে। ২) শূন্যপদে সাধারণ বদলির মাধ্যমে বদলি করতে হবে। ৩) যাঁরা এক বার মিউচুয়াল বা জেনারেল ট্রান্সফার নিয়েছেন, তাঁদের এই মুহূর্তে আবেদনে বিরত রাখতে হবে।
৪) সন্তান সহ শিক্ষিকাদের বদলিতে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। সন্তানের বয়স অনুযায়ী একটা যোগ্যতামান নির্ধারণ করতে হবে । ৫) নিজের বা সন্তান, স্ত্রী, পিতা বা মাতার দুরারোগ্য রোগের জন্য আবেদনকারীকে অতি দ্রুত বদলির সুযোগ করে দিতে হবে। ৬) আমপান, লকডাউন সহ করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে বদলি প্রক্রিয়া সুষ্ঠু, সরল ও দ্রুততর করতে স্কুল সার্ভিস কমিশনের আঞ্চলিক কার্যালয়গুলিতে বদলি সংক্রান্ত কাজ শুরু করতে হবে।
চন্দন গরাই
সম্পাদক, অল পোস্ট গ্র্যাজুয়েট টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন
উচ্চ প্রাথমিক
পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন কর্তৃক আয়োজিত আপার প্রাইমারি বা উচ্চ প্রাথমিক চাকুরিপ্রার্থীরা আজ বিপন্ন। ২০১৬ সালের ১৫ অগস্ট হয়েছিল উচ্চ প্রাথমিকের টেট পরীক্ষা। দীর্ঘ তিন বছর পর ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে জুন অবধি তিন দফায় প্রার্থীদের ভেরিফিকেশন করায় স্কুল সার্ভিস কমিশন। জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত হয় ইন্টারভিউ পর্ব।
মামলা কখনও এই নিয়োগের পিছু ছাড়েনি। মহামান্য কলকাতা উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ২০১৯ সালের ৪ অক্টোবর প্রকাশিত হয় প্রভিশনাল মেরিট লিস্ট। তার পর বিস্তর অভিযোগ ওঠে। প্রায় ১০০০০ অভিযোগ জমা পড়ে কমিশনের সল্ট লেকের সদর দফতরে। আজ পাঁচ বছর পরেও মামলার অছিলায় নিয়োগ আটকে রাখা হয়েছে। মেরিট লিস্টেড ২৪০০০ আপার প্রাইমারি চাকুরিপ্রার্থী আজ চরম অনিশ্চয়তায়।
সুরজিৎ ভারতী
কালনা, পূর্ব বর্ধমান
তিনটি সমস্যা
১৩ জুন রাজ্যের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, ‘‘শুধু ফাইনাল সিমেস্টারের ৫০% পরীক্ষার ভাবনা। পরীক্ষা হতে পারে হোম অ্যাসাইনমেন্ট বা অনলাইনে। বাকি ৫০% বরাদ্দ আগের সিমেস্টারের গড় নম্বরে।’’ এই পদক্ষেপে ছাত্রছাত্রীদের তিনটি সমস্যা দেখা দেবে।
এক, যে সব ছাত্রছাত্রী আগের সিমেস্টারে কম নম্বর পেয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে নম্বরের ঘাটতি পূরণ করার কোনও সম্ভাবনা থাকল না। দুই, পরীক্ষা হোম অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে হলে সেই ছাত্রছাত্রীদের অসুবিধা হবে, যারা হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করে। কারণ ১৫ মার্চ স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ১৫ দিনের জন্য ছুটি ঘোষণা হয়েছিল, তখন অনেকেই, ১৫ দিন পর আবার হোস্টেলে ফিরতে হবে ভেবে বাড়িতে বইখাতা নিয়ে আসেনি। তিন, পরীক্ষা অনলাইন হলে, প্রত্যন্ত গ্রামের ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা, কারণ সেখানে নেটওয়ার্ক ঠিকঠাক কাজ করে না। শিব প্রসাদ জানা
রাজনগর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
হাজিরায় বিভ্রান্তি
লকডাউন শিথিল পর্বে রাজ্য সরকারের সতত পরিবর্তনশীল নির্দেশিকায় রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর যথেষ্ট উপাদান রয়েছে। নবান্ন নির্দেশিকা দিয়েছে সত্তর শতাংশ হাজিরা দিলে চলবে, আর কলকাতা পুরসভা সর্ব স্তরের কর্মীর জন্য একশো শতাংশ হাজিরা দাবি করছে। পুরসভার জরুরি বিভাগের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিক কর্মচারীদের জন্য শর্তসাপেক্ষে একশো শতাংশ হাজিরা যুক্তিযুক্ত মনে হলেও, সকলের জন্য তা বাধ্যতামূলক করা নিশ্চিত ভাবে নবান্নের নির্দেশিকার পরিপন্থী।
একই ব্যাপার লক্ষ করা গিয়েছে পরিবহণ নিগমগুলির ক্ষেত্রেও। ৮-৬ তারিখ থেকে ৭০% হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও, নিগমগুলি স্ব স্ব নির্দেশ জারি রেখেছে। এতে কর্মচারীদের মধ্যে শুধু বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে তা নয়, দূরত্ববিধি শিকেয় তুলে কর্মচারীদের অফিসে যেতে হচ্ছে। রাস্তায় ভিড় বেড়েছে।
অপ্রতুল পরিবহণ ব্যবস্থার ওপর চাপ পড়ছে।
রাজশেখর দাস
কলকাতা-১২২
বিরোধীর পাশে
আমপান-পরবর্তী আর্থিক সাহায্য দেওয়ার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা তৈরিতে দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলি, বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বহু গ্রামবাসীও। অভিযোগের তির মূলত শাসক দলের দিকেই। অভিযোগ, যাঁদের ক্ষতি হয়নি তাদের ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া হচ্ছে, আর প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের অনেকের নাম তালিকায় নেই। উচিত হল, শাসক দল, এলাকার প্রধান বিরোধী দল এবং সরকারি প্রতিনিধি নিয়ে কমিটি গড়ে, যে কোনও ধরনের কাজের উপভোক্তা নির্বাচন। এতে অনেকটাই নিরপেক্ষতা বজায় রাখা সম্ভব। কিন্তু আমাদের রাজ্যে কোনও কালে কোনও কাজে বিরোধী দলকে গুরুত্ব দেওয়া হয় না।
কৃষ্ণা পালুই
বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়া
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।