নিউ কোচবিহার স্টেশন। ফাইল ছবি।
সম্প্রতি ভুটান বেড়াতে যাওয়ার জন্য নিউ কোচবিহার স্টেশনে নেমেছিলাম। গেট দিয়ে বাইরে বেরিয়ে দেখি, স্টেশন চত্বরে একটি স্টিম-এঞ্জিনের মডেল রাখা আছে এবং তার পাশে বিশাল দণ্ডের মাথায় বিশাল জাতীয় পতাকা উড়ছে। দেখে আনন্দ হল, আবার দুঃখও পেলাম। জাতীয় পতাকার ডান দিকের নীচের কোণ কিছুটা ছিঁড়ে ঝুলছে। আশপাশের দোকানদার ও গাড়িওয়ালাদের জিজ্ঞাসা করে জানলাম, অনেক দিন ধরে পতাকাটি এই অবস্থায় আছে। আশ্চর্য, সাধারণ মানুষ যেটা জানে, সেই ত্রুটি প্রশাসন বা রেল কর্তৃপক্ষের এত দিন নজরে আসেনি! জাতীয় পতাকার এমন অসম্মান মানা যায় না।
ভুটানে যেতে এই স্টেশনে আসতে হয় বলে অনেক বিদেশিও এখানে আসেন। তাঁদের সামনে আমাদের জাতীয় পতাকার এমন রূপ এক অর্থে দেশের অসম্মান। ছিন্ন পতাকাটি সরিয়ে নতুন পতাকা লাগানোর জন্য প্রশাসন ও রেল-কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
বলীন্দ্র বৈদ্য, ডায়মন্ড হারবার, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
বিকল্প রাস্তা
যশোর রোড-এর যা অবস্থা, তাতে এই রাস্তা চওড়া ও শক্তপোক্ত করার কাজ কবে শুরু হবে বা আদৌ হবে কি না, তা প্রশ্নের মুখে। শুধু তা-ই নয়, এই রাস্তার উপরে যে পাঁচটি রেলগেট আছে, তাতে রেলওয়ে ওভারব্রিজ তৈরি করতে কেন্দ্রীয় সরকার টাকা বরাদ্দ করলেও, তার কাজ এখনও শুরু হয়নি। এ ছাড়াও রয়েছে পরিবেশ দফতরের নিষেধাজ্ঞা। হাবড়া, অশোকনগর, বারাসত ও মধ্যমগ্রাম শহরে নিত্যদিন ট্র্যাফিক জ্যাম লেগে থাকে। রাস্তার উপরে আজও তৈরি হয়ে চলেছে বড় বড় বাড়ি, যা রাস্তা চওড়া করার ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। রাস্তার দু’পাশে পূর্ত দফতরের অধিকৃত জমি আর প্রায় নেই বললেই চলে। এমতাবস্থায় যশোর রোড-এর বিকল্প রাস্তার প্রয়োজন, যা খুব সহজেই উপরোক্ত সমস্যার স্থায়ী সমাধান হতে পারে।
এ সমস্যার সমাধানে যা একান্ত প্রয়োজন, তা হল— হরিণঘাটা গাইঘাটা রোড (নদিয়া দু’নম্বর সড়কভুক্তি-র অন্তর্গত)-কে চওড়া ও শক্তপোক্ত করা। এ রাস্তায় কোনও রেলগেট নেই, বড় শহর নেই এবং রাস্তার দু’পাশে পূর্ত দফতরের ৩৫ ফুট করে জায়গা অধিগ্রহণ করা হয়েছে। বড় জাগুলি থেকে কাঁপা হয়ে বিরাটির রাস্তা ছয় লেন করার কাজ চলছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, প্রায় দশ কিলোমিটার রাস্তা বেশি অতিক্রম করলেও অনেক কম সময়ে কলকাতা পৌঁছনো সম্ভব। এড়িয়ে যাওয়া যাবে চারটি রেলগেট ও চারটি শহরের ট্র্যাফিক জ্যাম। এই রাস্তার কাজ করতে এক বছরের বেশি সময় লাগবে না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
গৌতমকুমার চৌধুরী, কলকাতা-১২৯
যথেচ্ছ বাসভাড়া
আদালতের নির্দেশ ‘মেনে’ এত দিন পর বাসে ২০১৮ সালের ভাড়ার তালিকা টাঙানোর সরকারি ‘নির্দেশ’ (বাস ও ট্যাক্সির ভাড়াবৃদ্ধির আর্জি, ২৯-৪) দিলেও তালিকা অনুযায়ী ভাড়া আদায় বাস্তবায়নের কোনও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়নি। এ ব্যাপারে সরকারি সদিচ্ছার অভাব অনুভূত হয় ‘অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে অভিযোগ এলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’ বক্তব্যেই। অপ্রিয় প্রশাসনিক দায়িত্ব এড়াতে এর আগেও ভুক্তভোগী যাত্রীদের উপর সব দায় চাপিয়ে নিদান দেওয়া হয়েছিল, বাসভাড়া বেশি নিলে থানায় যেতে। সরকার ভাড়া না বাড়ালেও সরকারি নিষ্ক্রিয়তায় সেই অতিমারির কাল থেকেই যে সব বেসরকারি বাস, মিনিবাসেই ভাড়ার তালিকা লোপাট করে নির্ধারিত ভাড়ার পরিবর্তে খেয়ালখুশি মতো বর্ধিত হারে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে, তা কারও অজানা নয়। গণপরিবহণের বাসের মালিকদের এ ভাবে একতরফা ভাড়া বাড়ানোর অধিকার না থাকলেও প্রশাসনিক শৈথিল্যে যাত্রীদের অসহায়তার সুযোগেই যে বর্ধিত ‘ভাড়া’ আদায় করা হচ্ছে, তা বলা বাহুল্য। রাজ্যে একটি সরকার থাকতে অতিমারির সময়েও ‘বেসরকারি বাসের ভাড়া সরকারের পরিবর্তে বাসমালিক ও যাত্রীদের পারস্পরিক বোঝাপড়ায় ঠিক হওয়াই বাঞ্ছনীয় এবং সরকারি বাসের ভাড়া কম থাকলেও বেসরকারি বাসভাড়া বৃদ্ধি সেই ভাবে হতে পারে’— এমন অভিমত কার স্বার্থে ও কেন? দেশের অন্য কোনও রাজ্যে এমনটি হয় বলে জানা নেই। বাস্তবে বেসরকারি বাস ও অটোভাড়ার ব্যাপারে যেন রাজ্যে এক সমান্তরাল প্রশাসন চলছে দীর্ঘ দিন যাবৎ। নিজেদের খেয়ালখুশি মতো বেশি ভাড়া নেওয়া নিয়ে প্রথম প্রথম কোনও যাত্রী প্রশ্ন করলেও সাধারণ সরকারি বাসের অপ্রতুলতার কারণে অসহায় হয়ে এক সময় জনসাধারণ তা মেনে নিতে বাধ্য হয়েছেন। কোনও বেসরকারি বাস বেশি ভাড়া নিচ্ছে কি না, তার উপর নজরদারির ব্যবস্থাও করা যায়। প্রাইভেট বাসে আচমকা পরিদর্শন করলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে কন্ডাক্টরদের কাছে কত কত দামের টিকিট থাকছে এবং ন্যূনতম কত দামের টিকিট কাটা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বহু দিন ধরেই বাসমালিকরা তাঁদের ‘ক্ষতি’র কথা বলে বাড়তি ভাড়া আদায় করছেন। অনেকেরই হয়তো স্মরণে আছে, প্রথম বার লকডাউনের সময় সরকারি নির্দেশে বাস চলাচল কিছু দিন বন্ধ থাকার কারণে বাস মালিকরাই সরকারের কাছে আবার বাস চালানোর দাবি জানিয়েছিলেন। সরকার তার পর নির্দিষ্ট সংখ্যক যাত্রী নিয়ে বাস চালানোর অনুমতি দিলে তাঁরা যাত্রী কম হওয়ার অজুহাতে ভাড়া বাড়ানোর দাবি করেন। সরকার সে দাবি না মানলে তাঁরা নিজেরাই একতরফা ভাবে বাড়তি ভাড়া আদায় করতে থাকেন। এর পর ক্রমে সব স্বাভাবিক হয়ে গেলে বাদুড়ঝোলা হয়ে যাত্রীরা যাতায়াত করলেও মালিকরা কিন্তু নিজেরাই আবার ভাড়া বাড়িয়ে নিচ্ছেন বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে। অটোর ভাড়াও কিছু দিন পর পর বাড়ে ইউনিয়নের ইচ্ছামতো। প্রসঙ্গত, কোনও বেসরকারি বাসের কন্ডাক্টরের কাছে এখন সাত বা ন’টাকার টিকিটই থাকে না, থাকে ন্যূনতম দশ, বারো, পনেরো টাকার টিকিট।
অতিমারিজনিত কারণে অনেক মানুষের আর্থিক সামর্থ্য হ্রাস পেলেও বাসমালিক ও কর্মচারীরা এবং অটোচালকরাও ভাড়া বাড়িয়ে নিচ্ছেন গণপরিবহণের ন্যূনতম দায়িত্ববোধ অস্বীকার করে।
রত্না রায়, কলকাতা-৪৭
চাঁদার জুলুম
কিছু দিন আগে দিঘাতে গিয়ে দেখলাম পর্যটকদের গাড়ি থামিয়ে বিভিন্ন জায়গায় চাঁদা তোলা হচ্ছে। কাঁথি থেকে দিঘা, দিঘা থেকে শঙ্করপুর, তাজপুর ইত্যাদি জায়গায় যাওয়ার রাস্তায় আচমকাই বাঁশ, পতাকা দিয়ে গাড়ি আটকে টাকা চাওয়া হচ্ছে গাজন, চড়ক বা রক্তদান শিবিরের নামে। মাস পাল্টালে এদের উৎসব এবং উপলক্ষও পাল্টে যায়। এদের বেশির ভাগই কিশোর ও বেকার গরিব যুবক। এদের মধ্যে কয়েকটি দল আবার ছাপানো বিল ও অর্থমূল্য নির্দিষ্ট করে রেখেছিল। টাকা না দিলে জোরাজুরি থেকে পুরনো চাঁদার কুপন চাওয়া সবই আছে। প্রশাসন ও দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের কাছে এর প্রতিকার চাইছি।
অরিত্র মুখোপাধ্যায়, শ্রীরামপুর, হুগলি
যানজট
ডায়মন্ড হারবার সড়কে, সরিষা এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে প্রবল যানজট হয়ে চলেছে। টোটো, অটোর জন্য যানজট সৃষ্টি হয়েছে বেশি করে। সরিষা সংলগ্ন এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পঞ্চায়েত সমিতি-সহ অনেক সরকারি অফিস আছে। যানজটের কারণে অধিকাংশ মানুষ নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে পারেন না। ফুটপাত ব্যবহার উপযোগী করতে পারলে সমস্যার কিছুটা সমাধান সম্ভব। কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
সৈয়দ সাদিক ইকবাল, সিমলা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা