—প্রতীকী ছবি।
ভারতীয় ডাক বিভাগের পরিষেবার মান নিয়ে এমনিতেই অভিযোগের অন্ত নেই। সেই সূত্রেই বলছি, এই পরিষেবার এক জন নিয়মিত গ্রাহক হিসাবে আমার অভিজ্ঞতাও খুবই খারাপ। ভাইপো চণ্ডীগড় ইউনিভার্সিটিতে পড়তে যাওয়ার সুবাদে তাকে ডাক বিভাগের স্পিড পোস্ট পার্সেলের মাধ্যমে প্রায়ই নানা প্রয়োজনীয় জিনিস ও মূল্যবান নথিপত্র পাঠাতে হয়। নামে ‘স্পিড পোস্ট’ হলেও, আসলে সেটি ‘শম্বুক পোস্ট’! যা-ই পাঠানো হোক, কমপক্ষে সাত থেকে চোদ্দো দিন সময় লাগে প্রাপকের হাতে পৌঁছতে। কখনও সময় লাগে তারও বেশি। এবং প্রায় প্রতিটি পার্সেলই পৌঁছয় কাটা-ছেঁড়া বা দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া অবস্থায়। ইদানীং মাঝে মধ্যেই ভিতর থেকে কিছু জিনিসপত্র বারও করে নেওয়া হচ্ছে। তবে, এটি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। অর্থের বিনিময়ে সঠিক পরিষেবা প্রদানের কথা থাকলেও, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা মানা হয় না। অভিযোগ জানিয়েও কোনও ফল হয়নি। ডাক কর্তৃপক্ষ এখনই সতর্ক না হলে, এই ব্যাধি ক্যানসারের মতো দেশের সমস্ত ডাক পরিষেবার শিরা-উপশিরায় ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা প্রবল!
অরুণকুমার ঘোষ, কলকাতা-১২০
বিশৃঙ্খল
উত্তর শহরতলির এক ব্যস্ততম মোড় ডানলপ ব্রিজ, কলকাতা শহরের অন্যতম প্রবেশপথ। বরাহনগর রোড স্টেশন, বরাহনগর মেট্রো স্টেশন, বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে ও বিটি রোডের সহাবস্থান এই ডানলপ মোড়ে। সারা দিন ট্র্যাফিকের প্রচণ্ড ব্যস্ততা। এই ব্যস্ততম মোড় ও তার আশেপাশে পথচারীদের সুরক্ষা ও স্বাচ্ছন্দ্য ভীষণ ভাবে অবহেলিত। রাস্তা পারাপার দিন দিন প্রায় দুঃসাধ্য হয়ে পড়ছে, বিশেষত বয়স্কদের জন্য। ফুটপাতের দখলদারি, যত্রতত্র অটোর স্ট্যান্ড পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে। ট্র্যাফিক শৃঙ্খলার বড্ড অভাব। ট্র্যাফিক পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতির জন্য ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের তেমন তৎপরতা পরিলক্ষিত হয় না। রাস্তার যানজটের পিছনে সরকারি পরিকল্পনারও গলদ আছে। বামফ্রন্ট আমলে ডানলপ মোড়ে একমুখী এক ফ্লাইওভারের পরিকল্পনা করা হয় এবং কাজ শুরু হয়। বর্তমান তৃণমূল সরকার বামফ্রন্টের সেই অসমাপ্ত কাজ কিছুটা তাড়াহুড়ো করে শেষ করে। মাঝেরহাট ব্রিজের দুর্ঘটনার পর প্রশাসন ফ্লাইওভারে ভারী যানবাহনের যাতায়াত নিষিদ্ধ করে। এমনকি যাত্রিবাহী বাসও এর উপর দিয়ে যাতায়াত করে না। ফলে বহু টাকায় নির্মিত ফ্লাইওভারে এখন শুধু দক্ষিণেশ্বর থেকে শ্যামবাজার অভিমুখী হাতেগোনা প্রাইভেট গাড়ি চলাচল করে। বাস্তবে এই ফ্লাইওভার ট্র্যাফিক ব্যবস্থার কোনও কাজে আসেনি।
অন্য দিকে, অপরিকল্পিত কাজের এক জ্বলন্ত উদাহরণ ডানলপ রেলব্রিজের নীচে নির্মিত আন্ডারপাসের ফুটপাতটি। সেটা এতটাই অপরিসর যে, পাশাপাশি দু’জন পথচারী যাতায়াত করতে পারেন না। মেট্রোরেলের যাত্রী, অটোর দাপটে প্রতি দিন সকাল ও সন্ধ্যায় বিটি রোড ও আরএন টেগর রোডের সংযোগস্থল যেন এক নরক গুলজার। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, জনবহুল ডানলপ মোড়ের ট্র্যাফিক শৃঙ্খলা ও সার্বিক পরিবেশের প্রতি একটু নজর দিন।
রবিশংকর রায়, কলকাতা-৫৬
বিকল্প ব্যবস্থা
সম্প্রতি বাঙালির প্রিয় উৎসব দুর্গাপুজো শেষ হল। এ বারের পুজোয় মহানগরীর সঙ্গে জেলাগুলোর টক্কর ছিল দেখার মতো। দশমীতে উমার প্রস্থানের পর রাজ্য সরকারের উদ্যোগে কলকাতার রেড রোডে যে বিশেষ কার্নিভাল-এর আয়োজন করা হয়, তা ক্রমশ সন্নিহিত জেলাগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ছে। পুজোর পাঁচ দিন মণ্ডপে গিয়ে যাঁদের মাতৃপ্রতিমা দর্শনের সুযোগ হয় না, কার্নিভাল তাঁদের কাছে বিশেষ পাওনা। দ্বাদশীর দিন উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সদর বারাসতেও অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় দুর্গাপুজো কার্নিভাল। কিন্তু যাঁদের জন্য এত আনন্দ আয়োজন, কোথাও কি তাঁদের বঞ্চিত করা হল না? নিরাপত্তার কারণে মূল মঞ্চের আশেপাশে জেলার পদস্থ পুলিশকর্তাদের সমাবেশ ঘটেছিল। গুটিকয়েক সাধারণ মানুষ বিক্ষিপ্ত ভাবে দাঁড়িয়ে অনুষ্ঠান পর্বের কিছু অংশ দেখার সুযোগ পান। কিছু উৎসাহী জনতা চাঁপাডালি মোড় সংলগ্ন দোকানের ছাদের উপর দাঁড়িয়ে অনুষ্ঠান দেখার চেষ্টা করেন। উপরের হাই ভোল্টেজ তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যে কোনও মুহূর্তে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা জেলা প্রশাসনের মুখ পোড়ানোর জন্য যথেষ্ট ছিল। যশোর রোড এবং টাকি রোডের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার সংযোগস্থলকে অবরুদ্ধ করে এ রকম অনুষ্ঠান না করে বিকল্প কিছু ভাবা উচিত। জেলা পুলিশ প্রশাসনের কাছে এক জন সচেতন নাগরিক হিসাবে আমার অনুরোধ, কার্নিভাল-এর উপযুক্ত স্থান এবং সবাইকে দেখার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য বারাসত স্টেশন সংলগ্ন কাছারি ময়দান অথবা থানা সংলগ্ন বিদ্যাসাগর স্টেডিয়ামের কথা ভাবা যেতেই পারে।
সৌরভ চক্রবর্তী, কলকাতা-১২৪
অযথা অর্থদণ্ড?
তাপস কুমার রায়-এর ‘প্রিমিয়াম বেশি কেন’ (৯-১০) চিঠিটি পড়লাম। সঙ্গত প্রশ্ন। বিমা কোম্পানিগুলো গ্রাহকদের থেকে এ ভাবে প্রিমিয়াম তুলতে যাওয়ার ফলে গ্রাহকেরা ইঁদুর-কলে পড়ে যাচ্ছেন। বিমা করার সময় এদের এক রূপ, আর বিমা হয়ে যাওয়ার পর অন্য রূপটি প্রকাশ পায়। নিত্যনতুন অছিলায় প্রিমিয়ামের টাকা বাড়াতে থাকে আর নানা ছুতোয় সেই ক্লেম সেটেল না করে সাধারণ মানুষকে ভোগায়। মানুষ প্রথম প্রথম এই স্বাস্থ্য বিমার সুবিধা উপলব্ধি করেছিলেন বটে, কিন্তু এখন অনেকেই এই বিমা করে পস্তাচ্ছেন।
সম্প্রতি আমি কিডনি স্টোন অপারেশন-এর জন্য যখন আমার বিমা সংস্থার কাছে ইনশিয়োরেন্স ক্লেম করি সমস্ত কাগজপত্র জমা দিয়ে, তখন তাদের তরফে জানানো হয় এই অস্ত্রোপচার তাদের চুক্তিপত্রে নেই। ফলে খরচ করা টাকা আমি কোনও ভাবেই আর ফেরত পাব না। প্রসঙ্গত, তাদের নির্ধারিত পুস্তিকায় কেবলমাত্র হিন্দি এবং ইংরেজি ভাষায় ক্ষুদ্র আকারে শর্তাবলিগুলি লেখা ছিল, যা পুরোটা পড়ে তার চিকিৎসাশাস্ত্র সংক্রান্ত পরিভাষা এক জন সাধারণ মানুষের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। পলিসি করার সময় ওই বিমা কোম্পানির এজেন্ট স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্ত অসুখেই ইনশিয়োরেন্স ক্লেম করা যাবে বলে দাবি করে। সাধারণ ভাবে স্বাস্থ্য বিমা মানে এক জন মানুষের শরীরের সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এই স্বাস্থ্যের মধ্যেই পড়ে বলে মনে করেছিলাম। সেই বিশ্বাসেই এই বিমা কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হই এবং প্রিমিয়ামের নির্ধারিত টাকা দিয়ে যাই সময়ে সময়ে।
দুঃখের বিষয়, এত বছর প্রিমিয়ামের টাকা গুনেও প্রয়োজনে তার সুবিধা আমি পেলাম না। বিমা কোম্পানির এই রকম সিদ্ধান্তের পর সাধারণ মানুষ কি আর ‘স্বাস্থ্য বিমা’-র পলিসি কিনতে আগ্রহী হবেন?
দেবাশীষ দত্ত, কলকাতা-৬৩
ব্যাহত পরিষেবা
ইস্ট বেলঘরিয়া পোস্ট অফিসের বহু পুরনো গ্রাহক আমি। প্রায় তিন মাস যাবৎ পোস্ট অফিসে কোনও পাসবই নেই, যার ফলে স্বাভাবিক পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে। পাসবই ফুরিয়ে গেলে আপডেট করা যাচ্ছে না। যাঁরা স্বল্প সঞ্চয়ে বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছেন, তাঁদের বইগুলো আমাদের হাতে পোস্টমাস্টার তুলে দিতে পারছেন না। এই বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এবং এর দ্রুত সমাধানের আশা রাখছি।
অমরেশ কুমার পাল, কলকাতা-৫৬