—প্রতীকী ছবি।
হাওড়া-নিউ জলপাইগুড়ি রুটে বন্দে ভারত ট্রেনে প্রথম বাণিজ্যিক যাত্রায় বেশ কিছু বিরক্তিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয় আমায়। সমস্যার কারণ ট্রেনে ভ্লগারদের দৌরাত্ম্য। সে দিনের পর বেশ কয়েক মাস অতিক্রান্ত। সমাজমাধ্যমে জানতে পারি কয়েক সপ্তাহ আগেই হাওড়া-পুরী বন্দে ভারত ট্রেনের প্রথম বাণিজ্যিক যাত্রা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়লেও একই সমস্যায় পড়েন কিছু যাত্রী। ট্রেন-যাত্রীরা অনেকেই লক্ষ করেছেন যে, উদ্বোধনের ঠিক পরেই ট্রেন চলাকালীন কামরার মধ্যে এমনকি শৌচাগারের সামনে ক্যামেরা নিয়ে ট্রেনের তৎকালীন পরিস্থিতির ক্রমাগত ধারাভাষ্য দিয়ে গিয়েছেন তাঁরা— ট্রেনটি কী রকম গতিতে চলছে, ট্রেনের জানলা, বসার জায়গার অবস্থান কোথায় কী, কখন খাবার আসছে, মান কেমন, রেলের যাত্রী-সুরক্ষার খুঁত কী রয়েছে ইত্যাদি।
অথচ ভারতীয় রেলের ওয়েবসাইটে স্পষ্ট করে বলা রয়েছে যে, কোনও যাত্রীর যাতে অসুবিধা হয়, তেমন কাজ করা যাবে না। আরও বলা আছে যে, কেউ বাণিজ্যিক কারণে ভিডিয়ো ফোটোগ্রাফি করতে পারবেন না, করলে রেলের অগ্রিম অনুমতির প্রয়োজন। আজকাল ইউটিউবে যে ভিডিয়োগুলি ভ্রমণকারীরা আপলোড করে থাকেন, তাদের অধিকাংশ তোলা হয় মূলত বাণিজ্যিক কারণে। কেননা ভিডিয়ো চলাকালীন যে বিজ্ঞাপন চলে, সেখান থেকে কিছুটা অর্থ আয় করে থাকেন এই ভিডিয়ো আপলোড-কারীরা। তাই ভারতীয় রেলের কাছে আবেদন, রেল কর্তৃপক্ষের এই বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত, যাতে ভিডিয়ো তোলায় তাঁদের উৎসাহ যাত্রীদের সমস্যার কারণা না হয়।
শৌনক দাস, শ্রীরামপুর, হুগলি
শিকড় গভীরে
‘উন্নয়নে লগ্নি কম রাজ্যে’ (৭-৭) শীর্ষক খবরের পরিপ্রেক্ষিতে এই চিঠি। প্রতিবেদনে দেশে লগ্নির ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া রাজ্য হিসাবে যে ভাবে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার এবং পঞ্জাবকে চিহ্নিত করা হয়েছে, তা ঠিক নয়। ২০১৪ সালের পর থেকে ভারতে কী হয়েছে, সেই সত্যটি সামনে আসা প্রয়োজন। শুধু এই তিনটি রাজ্যকে দোষ দিয়ে লাভ নেই।
১৯৯০ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত গোটা দেশে বিনিয়োগ বেড়েছিল জাতীয় আয়ের অনুপাত হিসাবে। ২০১৪ থেকে তা ক্রমাগতই কমে এসেছে। ২০১৩-য় এই হার যেখানে ছিল ৩১ শতাংশ, সেখানে ২০২২-এ নেমে এসেছে ২৯ শতাংশে। বর্তমান সরকারের আমলে বিনিয়োগের হার কমেছে সামগ্রিক ভাবে। নিশ্চয়ই তিনটি রাজ্যের জন্য এটা হয়নি। গত ত্রিশ বছর ধরে সরকারি বিনিয়োগের হার তেমন বাড়েনি। গড়ে জাতীয় আয়ের সাত শতাংশ মতো থেকেছে। এ সমস্ত কিছুই আজকে আর তিনটি রাজ্যের জন্য হচ্ছে না, যদি আদৌ এমন প্রচারিত তথ্য ঠিক হয়। শুধু প্রচারে বিনিয়োগ বাড়ে না।
সামগ্রিক ভাবে বেসরকারি বিনিয়োগের হার গোটা দেশের হিসাবে, অর্থাৎ জাতীয় আয়ের অনুপাত হিসাবে ২০১২ সাল থেকে ক্রমাগত কমে এসেছে। ২০১৪ থেকে সেই ধারায় তেমন কোনও পরিবর্তন হয়নি। এই সব তথ্য বলে যে, বিষয়টির শিকড় অনেক গভীরে। ‘অশ্বত্থামা হত ইতি গজ’ প্রবাদটি আমরা যেন ভুলে না যাই।
সুগত মারজিৎ, কাউলুন, হংকং
হয়রানি
পুলিশ ভেরিফিকেশন-এর নামে পাসপোর্ট দরখাস্তকারী অথবা চাকরিপ্রার্থীদের যে ভাবে হয়রান করা হয়, তা বিরক্তিকর। প্রার্থীদের এক বিরাট তালিকা অনুযায়ী নথিপত্রের আসল ও প্রত্যয়িত নকল নিয়ে থানায় হাজির হতে বলা হয়। বাড়ির দলিল, বাবা-মায়ের আধার-ভোটার কার্ড, প্রাইমারি স্কুলের সার্টিফিকেট, জন্মের শংসাপত্র, রেশন কার্ড ইত্যাদি তার মধ্যে অন্যতম। এ ছাড়াও কোর্টের কোনও মামলায় বিচারাধীন নন— এমন প্রমাণও দাখিল করা প্রয়োজন। সামান্য অসঙ্গতি থাকলেই মোটা টাকা ঘুষের অভিযোগ হামেশাই পাওয়া যায়। পাসপোর্ট দফতর ডিআইবি পুলিশের হাঁড়িকাঠে মাথা দিতে বাধ্য না করে অনলাইনে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে অথবা নিরপেক্ষ তৃতীয় পক্ষের মারফত ভেরিফিকেশন ব্যবস্থা চালু করার কথা বিবেচনা করতে পারে। ব্যতিক্রমী সৎ কর্তব্যপরায়ণ পুলিশ অফিসার অবশ্যই আছেন। তাঁরা গুরুত্ব পান না।
বাসুদেব দত্ত, দুর্গাপুর, পশ্চিম বর্ধমান
অগ্রিম আয়কর
আমি এক জন রাজ্য সরকারের পেনশন প্রাপক। আমার ২০২২-২৩ অ্যাসেসমেন্ট ইয়ার-এর রিফান্ড থেকে হঠাৎ সাঁইত্রিশ হাজার টাকা কেটে নেওয়া হয়। বলা হয়, এটা আমার ২০০৯-১০ অ্যাসেসমেন্ট ইয়ারে পনেরো হাজার টাকা আয়কর কম জমা দেওয়ার জন্য আরও ২২,০০০ টাকা জরিমানা হল। ২০০৯-১০’এ অফলাইনে জমা দেওয়ার রীতি ছিল। সরকারি কর্মচারী হিসাবে সব আয়কর ডিডিও কেটে নেয় এবং আয়কর দফতরকে জানায়। সেখানে কোথায় কী হয়েছে, জানি না। কিন্তু এত বছর পর এতগুলো টাকা কোনও পেনশন প্রাপকের কাছ থেকে কাটা কি যুক্তিযুক্ত? বহু চিঠি, গ্রিভান্স সেল-এ বহু বার লেখা, অ্যাসেসমেন্ট অফিসারের সঙ্গে কথা বলেও কোনও লাভ হয়নি। আয়কর কমিশনার (পশ্চিমবঙ্গ আর সিকিম)-কেও লিখেছি। আমার বিভাগ সব রেকর্ড হারিয়ে ফেলেছে বলে লিখিত জানিয়েছে। আয়কর দফতর মৌখিক ভাবে জানিয়েছে, এত পুরনো রেকর্ড বার করা সম্ভব না। গত ন’মাস ধরে চেষ্টা করার পর হাল ছেড়ে দিয়েছি।
সৌমিত্র সেনগুপ্ত, ভদ্রেশ্বর, হুগলি
নির্দেশিকা সত্ত্বেও
‘ব্যাঙ্কের দ্বিচারিতা’ (১৯-৬) শিরোনামে অমরেশ পালের চিঠির প্রেক্ষিতে এই পত্র। বুদ্ধপূর্ণিমার ছুটি থাকায় এবং স্থায়ী আমানতের মেয়াদ পূর্তির তারিখ ওই দিন হওয়ায় তিনি আগের দিন আমানতটি ভাঙিয়ে নিতে গিয়েছিলেন। এ ব্যাপারে তাঁর যে হয়রানি হয়েছিল সে সম্পর্কে তিনি তাঁর চিঠিতে উল্লেখ করেছেন। প্রায়শই দেখা যায় স্থায়ী আমানতের মেয়াদ পূর্তির তারিখটি কোনও ছুটির দিন এবং পেমেন্ট দেওয়া হয় ছুটির পরের দিন, আগের দিন নয়। উৎসবের সময় ছুটি প্রলম্বিত হলে পেমেন্ট পেতে চার-পাঁচ দিন লেগে যায়। আর এর ফলে আমানতকারীকে এই ক’দিনের সুদ থেকে বঞ্চিত হতে হয়।
অথচ, রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দেশিকা রয়েছে, মেয়াদ পূর্তির তারিখ ছুটির দিন হলে অথবা ছুটি প্রলম্বিত হলে ওই ছুটির দিন বা দিনগুলির জন্য ব্যাঙ্ককে সুদ দিতে হবে। এই সুদ কিন্তু সেভিংস ব্যাঙ্কের সুদ হবে না। আমানতটিতে সুদের যে হার উল্লেখ রয়েছে, সেই একই হারে সুদ দিতে হবে ওই দিনগুলির জন্য। যে সব আমানতে সুদ মেয়াদ শেষের পূর্বেই নির্দিষ্ট সময় অন্তর তুলে নেওয়া হয়, সেই সব আমানতে এই সুদ দেওয়া হবে আসল টাকার উপর। আর যে সব আমানতে মেয়াদ শেষে সুদে-আসলে এক সঙ্গে টাকা দেওয়া হয়, সেই সব আমানতের ক্ষেত্রে সুদ দিতে হবে মেয়াদ পূর্তির মোট টাকার উপর, আসল টাকার উপর নয়। রেকারিং ডিপোজ়িটের ক্ষেত্রেও ওই একই নিয়ম প্রযোজ্য।
ব্যাঙ্কের আমানতের সুদ ক্রমশ কমছে, তার উপর পরিষেবার মান নেমে এলে আমানত বৃদ্ধির উপর তার বিরূপ প্রভাব পড়বে।
তপন কুমার ভট্টাচার্য, ওলাইচণ্ডীতলা, হুগলি