—প্রতীকী ছবি।
গত কয়েক বছর ধরেই লক্ষ করছি দমদম অঞ্চলে শীতকাল এলেই শাসক দলের প্রত্যক্ষ মদতে ও সক্রিয় সহযোগিতায় বিভিন্ন ধরনের বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানের ধুম পড়ে। নালে-ঝোলে, সঙ্গীত মেলা, পাখি মেলা, যাত্রাপালা, বাউল মেলা ইত্যাদি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অনুষ্ঠানগুলির উদ্বোধন করেন বা প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকেন স্থানীয় বিধায়ক ও সাংসদ। তাঁদের গৌরবময় উপস্থিতিতে মঞ্চ আলোকিত করেন পুরপ্রতিনিধিরাও। এই উপলক্ষে অনুষ্ঠানগুলি শুরুর কয়েক দিন আগে থেকেই মঞ্চের চার প্রান্তে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে মাইক লাগিয়ে তারস্বরে প্রচার চালানো হয়। আর অনুষ্ঠান শুরু হলে তো কথাই নেই। রাত যত বাড়ে, তত বাড়ে অনুষ্ঠানের তীব্রতা। মনে আছে, গত বছর বাউল মেলার প্রথম দিনে অনুষ্ঠান চলেছিল রাত সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত। এই আনন্দ উৎসবের ঠেলায় গুরুতর অসুস্থ রোগীরা ছাড়াও বেশি অসুবিধায় পড়েন বয়স্ক ব্যক্তি ও ছাত্রছাত্রীরা। সামনেই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। জীবনের দু’টি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার সূচনা মুহূর্তে উচ্চৈঃস্বরে মাইক বাজালে ছাত্রছাত্রীদের মনে যে কী রকম আতঙ্কের পরিবেশের সৃষ্টি হয়, তা একমাত্র ভুক্তভোগীরাই জানে। আরও একটা ব্যাপার, বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের কর্মীদের ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ বা বাড়ি বসে কাজ করার রীতি এখনও পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়নি। তাই এই অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের কাছে অনুরোধ, অনুষ্ঠান যদি চলে চলুক, কিন্তু তা যেন অধিবাসীদের কাছে আতঙ্কের কারণ না হয়ে ওঠে সে ব্যাপারেও একটু সজাগ দৃষ্টি থাকুক।
সমীর কুমার ঘোষ, কলকাতা-৬৫
আসেনি চিঠি
অবসর গ্রহণের পর তিন বছর অতিক্রান্ত। এজি বেঙ্গলের ডেসপ্যাচ থেকে একটা সংশোধিত-চিঠি গত এক বছরেও জেলা শহরে পৌঁছল না। করোনা-আবহে পেনশন পেতে সময় লেগেছিল ছ’মাস। পেনশন পেমেন্ট অর্ডার (পিপিও) হাতে পাওয়ার পর তাতে নমিনির তথ্যগত ভুল থাকায় দরখাস্তের সঙ্গে প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রমাণ-সহ সংশোধনের জন্য সেটা এজি বেঙ্গলে পাঠানো হয়। আবেদন জমা পড়ার পাঁচ মাস পর খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কাজ চলছে। আরও দু’মাস লাগবে। কাজ যদি না হয় তা হলে এনকোয়ারি হবে।
দীর্ঘ ১৬ মাসের মধ্যে এনকোয়ারি কিংবা কোনও চিঠি না আসায় বাধ্য হয়ে এজি বেঙ্গলে গিয়ে জানতে পারি, সংশোধন হয়ে গিয়েছে। ডেসপ্যাচে দেওয়া হয়েছে। সপ্তাহখানেকের মধ্যে বাড়িতে চিঠি পৌঁছে যাবে। যথারীতি চিঠি না আসায় বেশ কয়েক বার সশরীরে এজি বেঙ্গলে খোঁজ নিতে যাই অথবা ল্যান্ডলাইনে যোগাযোগ করি। আর প্রতি বারই একই উত্তর পেয়েছি, “এখানকার কাজ হয়ে গিয়েছে, ডেসপ্যাচে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফোন নম্বরটা দিয়ে যান, খোঁজ নিয়ে জানিয়ে দেব।” এ ছাড়া ল্যান্ডলাইনে কথা বলার সময়েও প্রতি বারই ফোন নম্বর জানিয়েছি।
কিন্তু এখনও পর্যন্ত জানতে পারিনি, কী কারণে ডেসপ্যাচ থেকে গত এক বছরেও একটা চিঠি জেলা শহরে পৌঁছল না। এমনকি জিজ্ঞাসা করেও এই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর পেলাম না যে, রিসিভ-কপিটা হাতে হাতে নিতে চেয়ে পেনশন-প্রাপক যদি স্বয়ং উপস্থিত হতে পারেন, তা হলে সই করিয়ে নিয়ে সেটা তাঁকে দিয়ে দিতে আপত্তিটা কোথায়? যদিও এক জন ৬৩ বছরের পেনশন-প্রাপকের পক্ষে বার বার কলকাতায় ছুটে যাওয়া সম্ভব নয়, তবুও কী কারণে যেন মনে হয়, সংশোধিত-চিঠি ডেসপ্যাচ হয়ে প্রাপকের হাতে পৌঁছতে তিন বছর সময়টা হয়তো যথেষ্ট নয়। শুধু দুশ্চিন্তা একটাই, বিলম্বিত সময়কালে হঠাৎ যদি কোনও কারণে পেনশন-প্রাপকের মৃত্যু হয়, তা হলে পারিবারিক-পেনশন পেতে পরিবারকে আর কী ঝামেলা সামলাতে হবে।
অমরেশ পাল, ব্যান্ডেল, হুগলি
দিঘা যেতে
উত্তর ২৪ পরগনা এবং নদিয়ার লোকেদের দিঘা যাওয়ার জন্য হাওড়া থেকে ট্রেন ধরতে হয়। তবে সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে ট্রেন ধরতে খুবই অসুবিধা হয়। একে মধ্যরাতে বাড়ি থেকে বেরোতে হয়। এর পর হয় বাসে করে দিঘা যেতে হয়, যা শিশুদের এবং বয়স্কদের পক্ষে খুব কষ্টকর। নয়তো শিয়ালদহে এসে গাড়ি ভাড়া করে হাওড়ায় পৌঁছতে হয়। এতে খরচ বাড়ে। শিয়ালদহ থেকে কোনও ট্রেন চালু হলে রেল কোম্পানির আয় যেমন বাড়বে, তেমনই সাধারণ মানুষেরও সুবিধা হবে। রেল কর্তৃপক্ষকে প্রস্তাবটি ভেবে দেখার জন্য অনুরোধ করছি।
তরুণ বিশ্বাস, কলকাতা-৩৫
অভাব স্পষ্ট
শেষ বার যখন আলিপুর চিড়িয়াখানায় গিয়েছিলাম তখন টিকিটের মূল্য ছিল ৩০ টাকা। কিছু দিন আগে গিয়ে দেখলাম টিকিটের মূল্য বেড়ে হয়েছে ৫০ টাকা। টিকিটের মূল্য নিয়ে বলার কিছু নেই। অর্থনীতির হিসাব অনুযায়ী টিকিটের মূল্য খুব একটা বেশি কিছু নয়। কিন্তু খারাপ লাগল চিড়িয়াখানার পশুপাখিদের দেখে। বাঘ, সিংহ, নেকড়ে, হাতির মতো পশুকে দেখে মনে হল যে, এই প্রাণীগুলি যেন কোনও রকমে টিকে রয়েছে। অর্থাৎ, চাহিদা অনুযায়ী খাবারের অভাবে এদের শরীর-স্বাস্থ্য খুবই ভেঙে পড়েছে। কোনও কোনও প্রাণীর হাড়গোড়ও দেখা যাচ্ছিল। এদের চাহিদা অনুযায়ী স্বাস্থ্যকর খাবার দেওয়া হোক।
সেক ইমরান, গোলকুঁয়াচক, পশ্চিম মেদিনীপুর
ফি-এ কারচুপি
‘শিক্ষার অধিকার আইন-২০০৯’এ প্রতিটি শিশুর বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষার কথা বলা হয়েছে। আমাদের রাজ্যে সরকারি বা সরকার-পোষিত বিদ্যালয়গুলির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের থেকে বাৎসরিক সর্বাধিক ২৪০ টাকা বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কাজে নেওয়ার বিধান রয়েছে। তৎসত্ত্বেও বর্তমানে রাজ্যের কিছু বিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের ২৪০ টাকার দ্বিগুণ, তিন গুণ বা কোথাও চার গুণ টাকা দিতে হচ্ছে। এ দিকে, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সুচতুর পরিকল্পনায় কেবল ২৪০ টাকার রসিদ বিলিয়ে যাচ্ছে। বিদ্যালয়গুলিতে সরকারি আইনের অমান্য শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদেরও অজানা নয়। আর এটাও সত্যি যে, ২০১১ সালের ২৪০ টাকার মূল্য আর ২০২৪ সালের ২৪০ টাকার মূল্য এক নয়। তাই ভর্তি সংক্রান্ত ফি নির্ধারণের সরকারি নিয়ম সময়ের সঙ্গে সংশোধন হওয়া জরুরি। আর যে সব সরকারি বা সরকার-পোষিত বিদ্যালয়ে ভর্তির ফি সংক্রান্ত নিয়ম লঙ্ঘন করা হচ্ছে বা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ সরকারকেই করতে হবে।
তীর্থ মণ্ডল, রামনগর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
বাস চাই
দৈনন্দিন যুদ্ধ নিয়ে কিছু কথা বলতে চাই। প্রায় বারো বছর ধরে যাদবপুরের সন্তোষপুরে বসবাস করছি। রোজ কর্মক্ষেত্রে যাই বাসে করেই। লকডাউনের পর ২০৬ নম্বর বাসরুটটি চিরকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেল। ৩৭এ ঢাকুরিয়া থেকে চলে। এম ডব্লিউ১ আগে চলত, সেটাও নেই। সারা দিনে মাত্র দুটো সরকারি এস৫সি বাস চলে রুটে। ফলে, সন্তোষপুর থেকে হাওড়া যেতে দু’বার বাস বা অটো পাল্টাতে হয়। সেক্টর ফাইভ যাওয়ার জন্য দীর্ঘ সময় দাঁড়াতে হয়। তাই রাজ্য সরকারকে এই রুটগুলো আবার শুরু করতে বা সরকারি বাস এস ৫সি-র সংখ্যা আরও বাড়াতে অনুরোধ করছি। ইদানীং রাজ্যের গণপরিবহণের অবস্থা ভাল নয়। সরকার সে দিকে নজর দিলে মানুষ উপকৃত হন।
পৌলমী সান্যাল, কলকাতা-৭৫