‘১০০ ফুটের দণ্ডে জাতীয় পতাকা রেল স্টেশনে’ (১৩-১২) পড়লাম। উঁচু দণ্ডে অনেক বেশি সংখ্যায় মানুষকে জাতীয়তাবোধে জারিত করে তুলতে এমন সিদ্ধান্ত। কিছু অসুবিধা আছে। দণ্ডের কাছ থেকে ঊর্ধ্বপানে তাকালে শিরদাঁড়ায় হ্যাঁচকা টান ধরতে পারে। এ ছাড়াও ঊর্ধ্বমুন্ড হয়ে ট্রেন ধরতে ছুটলে নানা বিপত্তির সম্ভাবনা। অন্য যাত্রীর সঙ্গে ধাক্কা লাগতে পারে। সেই নিয়ে বিতণ্ডা বাধলে গোড়াতেই জাতীয়তাবোধে হোঁচট খাওয়ার আশঙ্কা। বোধ হয় জাতীয় উদ্যোগের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই রেল কর্তৃপক্ষের উচ্চ বাসনা। স্থাপিত হয়েছে ছ’শো ফুট উঁচু পটেলজির মূর্তি। আসতে চলেছে ঢের উঁচু শিবাজি ও রামের মূর্তি। রেল কর্তৃপক্ষ ভেবে দেখুন, ভবিষ্যতে দণ্ডের উচ্চতা আরও বাড়ানো যায় কি না। খরচ না-হয় বাড়বে। দণ্ড তো ভোগ করবেন জনসাধারণ। টাকাটা আসলে তাঁদের পকেট থেকেই যায় কিনা! নিরাপদে সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছে দেবে, কর্তৃপক্ষের এই অঙ্গীকারে ভরসা করে টিকিট কিনে ট্রেনে চাপেন যাত্রীরা। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শোচনীয় ভাবে ব্যর্থ রেল কর্তৃপক্ষ। বিলম্বে চলা ট্রেনের তালিকা এত দীর্ঘ যে সময়মতো চলা ট্রেনের নাম ঘোষণা করলেই সহজ হয়। যাত্রাপথে লেগেই আছে দুষ্কৃতীদের উৎপাত। বেশির ভাগ স্টেশনে বে-আইনি স্টলের বাধা পেরিয়ে ট্রেন ধরতে হলে জিমন্যাস্টিকস জানা বাঞ্ছনীয়। দূরপাল্লার ট্রেনে টয়লেটে জল যদি পাওয়া যায় তো খাবারে আরশোলা। সস্তা চমকের পরিকল্পনা বাদ দিয়ে রেল কর্তৃপক্ষ সময়মতো ট্রেন চালানোটা সুনিশ্চিত করুন। যাত্রী পরিষেবার দিকে যথাযথ গুরুত্ব দিন। মনে রাখবেন, দামি ব্যান্ডেজ বাঁধলে ঘা সারে না।
বিশ্বনাথ পাকড়াশি
শ্রীরামপুর-৩, হুগলি
হঠাৎ স্থগিত
আমাদের রাজ্যে গত মে-জুন মাস থেকেই রুটিন ইমুনাইজ়েশনে মিসলস্ টিকার পরিবর্তে মিসলস্ রুবেলার টিকা দেওয়া হচ্ছে। এই টিকা রুটিন শিডিউলে চলে আসার সঙ্গে সঙ্গেই এই টিকার ক্যাম্পেন নিয়েও কথাবার্তা শুরু হয়ে যায়। স্বাস্থ্য দফতরের একেবারে তৃণমূল স্তরের কর্মীরা, অর্থাৎ এএনএমরা, যাঁরা টিকাকরণের কাজে সরাসরি যুক্ত থাকেন, তাঁদের দিয়ে মাইক্রোপ্ল্যানিংয়ের কাজও এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকে স্বাস্থ্য দফতর, বলা হয় নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকেই ন’মাস থেকে পনেরো বছরের সমস্ত বাচ্চাদের এই টিকাকরণের কাজ শুরু হবে। নভেম্বরের শেষ দিক থেকে শুরু করে পুরো ডিসেম্বর মাসেই এই রাজ্যের সমস্ত প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলিতে বার্ষিক ক্রীড়া ও পরীক্ষা মিলিয়ে ঠাসা কর্মসূচি থাকে— এটা জানা সত্ত্বেও, শুরু থেকেই এই ক্যাম্পেনের পুরোভাগে রাখা হয়েছিল স্কুলগুলিকে; নিজের নিজের এলাকার সংশ্লিষ্ট স্কুল থেকে নির্দিষ্ট ফর্ম ফিল-আপ করিয়ে আনতে হয়েছিল এএনএমদের। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এই টিকাকরণের বিষয়ে ট্রেনিংও দেন। প্রথমে গত ১৯ নভেম্বর শুরু করার কথা থাকলেও, পরে তা পরিবর্তন করে ২৯ নভেম্বর করা হয়। গত কয়েক মাসে বারংবার মাইক্রোপ্ল্যানিং সংশোধন করবার জন্য তৃণমূল স্তরের স্বাস্থ্যকর্মীদের ছুটে যেতে হয় ব্লক হাসপাতালে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম নিয়মের বদল ঘটিয়ে এই ক্যাম্পেন ও তার মাইক্রোপ্ল্যানিংয়ের পুরো পর্যায়টিকে অযথা জটিল করে তোলা হয়েছে। অদ্ভুত ভাবে, ক্যাম্পেন শুরুর মাত্র পাঁচ ছ’দিন আগে, স্বাস্থ্য দফতর বুঝতে পারে বার্ষিক পরীক্ষার কারণে বিদ্যালয়গুলিকে বাদ দিয়েই মাইক্রোপ্ল্যানিংয়ের কাজ করতে হবে! ফিল্ড লেভেলে প্রোগ্রামের সমস্ত রকম আয়োজন, বিদ্যালয়গুলিতে পেরেন্টস টিচার মিটিং, আশা কর্তৃক বাড়ি বাড়ি প্রচার, কোন এলাকায় কোন দিন ঠিক করা হয়েছে এ সমস্ত জানানোর পরে আবারও নতুন করে, একেবারে অল্প সময়ের মধ্যে, নতুন ভাবে জায়গা, দিন ক্ষণ ঠিক করতে হয়! সার্বিক টিকাকরণের প্রধান কান্ডারি অর্থাৎ এএনএমরা কার্যক্ষেত্রে যতটাই অবহেলিত থাকুন না কেন, দফতরের যে কোনও নতুন প্রোগ্রাম বাস্তবায়িত করতে এঁরা অসীম পরিশ্রম করতে সদাই প্রস্তুত থাকেন; তাই এই সময়ের মধ্যেই আবারও তাঁরা নতুন ভাবে প্ল্যানিংয়ের কাজ সেরে তা সফল করতে লেগে পড়েন। ক্যাম্পেন সংক্রান্ত সমস্ত রকম লজিস্টিকও সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল থেকে এএনএমরা কালেক্ট করে নেন। যে কোনও নতুন প্রোগ্রাম শুরুর আগেই পরীক্ষার আগের রাতের প্রস্তুতি ও দুশ্চিন্তার মতো অনুভূতি সকল স্বাস্থ্যকর্মীর মনে... আর সেই সময়েই, অর্থাৎ ২৮ তারিখ প্রায় রাত আটটারও পরে, পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের মাননীয় মিশন ডিরেক্টর প্রোগ্রামটিকে স্থগিত ঘোষণা করেন! তৃণমূল স্তরের স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছে হোয়াটসঅ্যাপে সঙ্গে সঙ্গে সেই বার্তা পৌঁছে দেন জেলা ও ব্লক হাসপাতালের কর্তারা। অথচ এর পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে সেই বিষয়ে কোনও যৌক্তিক ব্যাখ্যা কেউ দেননি। ফিল্ড লেভেলে সমস্ত রকম প্রচারের পর কী করে প্রোগ্রাম শুরুর দিন সকালে সবাইকে এই স্থগিতাদেশের ব্যাপারে বলা হবে সেই বিষয়েও কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি! স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা এক প্রকার ধরেই নিয়েছেন, প্রান্তিক স্তরের স্বাস্থ্যকর্মীরা বার বার মানুষকে বোঝানোর কাজটি করবেন; স্থগিতাদেশ উঠে গিয়ে যখন আবারও নতুন করে প্রোগ্রামটিকে কার্যকর করা হবে তখন তাঁদেরকেই আবারও জনসংযোগের প্রধান হাতিয়ার করা হবে! কিন্তু একেবারে আগের মুহূর্তে এত বড় একটি ক্যাম্পেন স্থগিত হওয়ায় জনমানসে এর কী রূপ প্রভাব পড়বে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা তা ভেবে দেখেছেন কি? এএনএমরা তাঁদের নিজের নিজের এলাকার সমস্ত বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে বার বার ক্যাম্পেন সম্পর্কিত বিভিন্ন রকম রদবদলের কথা বলতে গিয়ে নিজেদের গুরুত্ব হারিয়ে ফেললেন না কি? আর এতে করে সর্বোপরি স্বাস্থ্য দফতরের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হল না কি? যে কারণেই এই ঘটনা ঘটে থাক, উপর্যুপরি নাস্তানাবুদ হতে হল তৃণমূল স্তরের স্বাস্থ্যকর্মীদেরই!
শাশ্বতী পাল
ফালাকাটা, আলিপুরদুয়ার
আর এক প্রতিভা
‘সোনার খনি হাওড়াতেই হারিয়ে গিয়েছে প্রতিভা’ (১৩-১১) শীর্ষক প্রতিবেদনে হাওড়া জেলার অতীত দিনের প্রখ্যাত ফুটবলারদের মধ্যে অশোক চট্টোপাধ্যায়ের নাম উল্লেখ নেই দেখে অবাক হলাম। পি কে বন্দ্যোপাধ্যায়, চুনী গোস্বামী, নইমুদ্দিনের সমসাময়িক ফুটবলার অশোকবাবু দীর্ঘ দিন ভারতের জাতীয় দলের নিয়মিত ফুটবলার ছিলেন। গোল করায় অত্যন্ত পারদর্শী, সুযোগসন্ধানী স্ট্রাইকার। ১৯৫৩ সালে জুনিয়র ইন্ডিয়া দলে স্থান পান। ১৯৬৫ থেকে ১৯৬৮ টানা চার বছর ভারতীয় সিনিয়র দলের সদস্য ছিলেন, এশিয়ান গেমস খেলেন ১৯৬৬-৬৭ সালে। ১৯৬৮ সালে এশিয়ান কাপে অংশ নেন। ১৯৭০-এ খেলেন এশিয়ান ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ। ১৯৬৪ ও ১৯৬৭ সালে সন্তোষ ট্রফিতে বাংলা দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। ১৯৬০ থেকে ১৯৬৮ খেলেন মোহনবাগানে। তার পর ১৯৬৯ থেকে ১৯৭১ ইস্টবেঙ্গলে। ১৯৭০ সালে ইরানের পাস ক্লাবের বিরুদ্ধে ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলার হিসাবে মাঠে নামেন।
রবীন রায়
শ্যামনগর, উত্তর ২৪ পরগনা
কেন বাদ
‘এসপার ওসপার’ (১৪-১২) ক্রোড়পত্রে বাংলা তথা ভারতের সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মিডফিল্ডার সুদীপ চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে উদাসীনতা, ব্যথিত করল। এক সময় সুদীপ-কৃশানু-বিকাশ ত্রয়ীর নাম ময়দানে এক সঙ্গে উচ্চারিত হত। অমল দত্ত সুদীপ সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘‘ও তো ইউরোপিয়ান ফুটবলারদের স্টাইলে খেলে। এক জন বিশ্বমানের ফুটবলার।’’
শোভনলাল বকসী
কলকাতা-৪৫
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।