প্রখ্যাত অভিনেতা কমল মিত্রের কথা এলেই সামনে এসে যায় রাশভারী, অহঙ্কারী, গম্ভীর কণ্ঠস্বর নিয়ে থাকা দীর্ঘদেহী একটি মানুষের ছবি (‘বাঙালি পরিবারের এক আইকনিক কর্তা’, পত্রিকা, ১৭-২)। নায়ক নায়িকার ‘রাগী পিতা’ হিসাবে দর্শকদের কাছে সাধারণ ভাবে পরিচিত হলেও, তিনি শুধু এই একই ‘টাইপ চরিত্রাভিনেতা’ নন। অনেকেরই চোখের সামনে ভেসে ওঠেন অন্য এক কমল মিত্র।
কখনও সে মানুষটি ‘বধূ’ ছবির ধনী গৃহকর্তার একান্ত অনুগত ভৃত্য ‘কালী’। সাধারণ ভাবে ‘স্যুটেড বুটেড’ কেতাদুরস্ত এই মানুষটি এখানে হাঁটুর ওপর কাপড় পরে, ছোট একটা ফতুয়া গায়ে সারাটা সময় অনুগত ভৃত্যের অভিনয় করে গিয়েছেন। দর্শক কখনওই ভুলতে পারবেন না ‘লৌহ কপাট’-এর ডাকাত সর্দার বদর মুন্সীকে, ভুলতে পারবেন না ‘বিভাস’ ছবির ডা. তারকেশ্বর রায়কে, ‘জীবন মৃত্যু’র সহৃদয় মানুষ রণদেব সিংহকে। দর্শকমনে এখনও জাগরূক ‘রাজদ্রোহী’ ছবির সেই কর্তব্যপরায়ণ, ন্যায়নিষ্ঠ রাজসেনাপতি তেজ সিংহ।
যে মানুষটি ‘শিল্পী’ ছবির নায়িকার কঠিন, কঠোর দৃঢ়চেতা পিতা, সেই মানুষটি আবার ‘যমালয়ে জীবন্ত মানুষ’ ছবিতে যমরাজের চরিত্র অভিনয় করে দর্শকদের কৌতুক উপহার দিয়ে গিয়েছেন। এ ছবিগুলি পাশাপাশি রাখলে অবাক হতেই হয়।
ভুলি কী ভাবে ‘শাপমোচন’ চলচ্চিত্রের সন্তানবৎসল সেই পিতাকে, যিনি পরবর্তীকালে বিত্তবান হয়েও অস্বীকার করতে পারেননি ছেলেবেলায় উপকার পাওয়া তাঁর ‘ক্ষেত্রদা’কে। আবার ‘একটি রাত’ ছবিতে সাবলীল ভাবে অভিনয় করে গিয়েছেন কমল মিত্র, বহু সিনেমায় তাঁর কন্যা হিসাবে অভিনয় করা অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনের স্বামীর চরিত্রে।
অমলকুমার মজুমদার চ্যাটার্জিহাট, হাওড়া
ছবিবাবু
‘পিছনের সিট বেল্টে অনীহা’ (২১-২) শীর্ষক খবরে লেখা হয়েছে, ‘ছোট জাগুলিয়ার বাগান বাড়ি থেকে শহরে ফিরছিলেন এক বৃদ্ধ। তিনিই গাড়ি চালাচ্ছিলেন... গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়লেও গাড়ি বা আরোহীর কোনও ক্ষতি হয়নি। কিন্তু চালকের আসনে থাকা বৃদ্ধের বুকে স্টিয়ারিংয়ের ধাক্কা লাগে। মারা যান তিনি। সেই বৃদ্ধের নাম, অভিনেতা ছবি বিশ্বাস।’
প্রকৃত ঘটনা হল ছবিবাবু, তাঁর বয়স তখন ৬২, রিজেন্ট পার্কের বাড়ি থেকে স্বগ্রাম ছোট জাগুলিয়াতে যাচ্ছিলেন। মধ্যমগ্রামের গঙ্গানগরে যশোর রোডের উপর বিপরীত দিক থেকে আসা মাল বোঝাই ভ্যানের সঙ্গে গাড়িটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ছবি বিশ্বাস মারা যান, তাঁর স্ত্রী এবং পৌত্র আহত হন। ১৯৬২-র ১২ জুনের আনন্দবাজারে এই বিবরণ প্রকাশিত হয়।
সুবীর সেনগুপ্ত হিন্দুস্থান পার্ক, কলকাতা
খেয়াল রাখার
চাল, ডাল, গম ইত্যাদি শস্যজাতীয় খাদ্যে বেশির ভাগ সময়ই নানা রকম কীটনাশক দেওয়া থাকে। কিন্তু বাজারে বা রেশন দোকানে দেখা যায় একই পাত্রের সাহায্যে সব কিছুই তোলা হচ্ছে। সেই পাত্রে তোলা চিনি আমরা সরাসরি দুধে মিশিয়ে বাচ্চাদের খাওয়াই, যার ফলে প্রতিনিয়ত অল্প-অল্প করে ছোটরা এই কীটনাশক খেয়ে যাচ্ছে। খুব সহজ সমাধান হল আলাদা আলাদা পাত্র ব্যবহার করা।
এ-দিকে আবার ডালপুরি, কচুরি ইত্যাদি খবরের কাগজের ঠোঙায় দেওয়া হয়। একটু খেয়াল করলে দেখা যায়, ওই কাগজের লেখার ছাপগুলো ডালপুরির গায়ে লেগে গিয়েছে, আর সেটা খাওয়ার অর্থ হল বেশ খানিকটা সিসা খাওয়া।
তা ছাড়া কাগজগুলো কোথায় ফেলা হয়েছিল, কী ভাবে ঠোঙা বানানো হয়েছে, সেটা আমরা ভাবি না। কমদামি কেক-এ লাল/হলুদ/সবুজ রঙের যে সমস্ত টুকরো ব্যবহার করা হয়, সেগুলোও এফডিএ অনুমোদিত বলে মনে হয় না। স্কুলের সামনে বিভিন্ন রঙের বোতলের পানীয় ঠান্ডা জলে মিশিয়ে বিক্রি করা হয়, সেগুলো সম্পর্কেও একই কথা খাটে।
এগুলো বন্ধ করার জন্যে যদি ১০৭৩-র মতো কোনও ফোন নম্বর চালু করা যায়, যেখানে এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো যাবে, ভাল হয়।
সমীর দত্ত কলকাতা-৩২
নষ্ট হচ্ছে
লেক টাউনের ১নং লেকটিতে কয়েক বছর আগেও জল ছিল না, এখন বিধায়ক সুজিত বসুর পরিচালনায় এই লেক জলে ভরা, পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ে দুটি সুদৃশ্য ঘাট তৈরি হয়েছে, উত্তর ও দক্ষিণ দিকে দুটি পার্ক তৈরি হয়েছে।
কিন্তু আমরা কোনও ভাল, সুন্দর সৃষ্টি নিজেরাই নষ্ট করে ফেলি। লেকের দুই পারের দুটি ঘাটে সারা দিন অসংখ্য লোক স্নান করে, কাপড় কাচে, অসংখ্য সাইকেল, রিকশা, মোটর সাইকেল ধোওয়া-মোছা হয় এবং সব নোংরা কাদা-মাটি আবার লেকের জলে ফিরে যায়।
এই অবধি তবুও সহ্যের মধ্যে। কিন্তু পূর্ব দিকের ঘাটসংলগ্ন উত্তর দিকের খোলা জায়গাটি প্রকাশ্য দিবালোকে জনগণের প্রস্রাবখানা হয়ে উঠেছে এবং বহু লোকের যাবতীয় নোংরা ফেলার জায়গা হয়ে উঠেছে। তা যেমন দৃষ্টিকটু, তেমন অস্বাস্থ্যকর।
বিদেশ ঘোষাল অশ্বিনীনগর, বাগুইআটি
ঝরা পাতা
‘ছাঁট পুড়িয়ে বাতাসে দূষণ’ শীর্ষক প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে জানাই, শীত শেষে পাতা ঝরে পড়ার পর প্রায়ই দেখা যায়, ঝরা পাতা জড়ো করে তাতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। অনেক সময় পুরকর্মীরা এই কাজ করে থাকেন সময় ও পরিশ্রম বাঁচানোর জন্য। আবার যে বাড়ির গাছ, সেই বাড়ির লোকজনও এই কাজ করে থাকেন। এঁরা ভুলে যান বা বুঝতে পারেন না, এতে তাঁরা পরিবেশের কত ক্ষতি করছেন।
অরূপ দে বরানগর
ডাকঘর
সম্প্রতি ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল স্মল সেভিংস এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন’-এর রাজ্য নেতৃত্ব দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার গোসাবা এলাকার ডাকঘর গ্রাহক ও স্বল্প সঞ্চয় এজেন্টদের ডাকে, গোসাবা ডাকঘরে পৌঁছেছিলাম বাস্তব অবস্থাটা দেখার জন্য। ডাকঘরটি বহু কাল আগে ইটের তৈরি। সামনের দিকে ইটে নোনা ধরে দেওয়াল ক্ষয়ে গেছে। শেষের দিকে, টিনের চাল মরচে ধরে ফুটো হয়ে রয়েছে, বৃষ্টি হলেই ঘরে জল পড়ে। সিলিংয়ের দরমা ঝুলছে। দেওয়ালের গাঁথুনিতে ফাটল লম্বা হয়ে রয়েছে বিপজ্জনক অবস্থায়, যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটা অস্বাভাবিক নয়। সকলে এরই মধ্যে বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। এলাকার মানুষ বহু বার ডাক-কর্তৃপক্ষ ও ইউনিয়নের নেতাদের বলা সত্ত্বেও কোনও উপকার না হওয়ায় হতাশ।
নির্মল দাস কলকাতা-১৪৯
ইচ্ছা করলেই?
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জঙ্গলমহলের ৩৫৫ জন সাবেক মাওবাদীকে নিয়ে বৈঠক করেছেন। (‘প্রাক্তনকে নিয়ে...’, ১৪-২) এঁদের মধ্যে জাগরী বাস্কে-ও ছিলেন, যিনি পুলিশ অফিসার পার্থ বিশ্বাস এবং তাঁর বন্ধু সৌম্যজিৎ বসুর হত্যায় অভিযুক্ত। (এখানে উল্লেখ্য, ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে অযোধ্যা পাহাড়ে বেড়াতে গিয়ে মাওবাদীদের হাতে এঁরা দু’জন খুন হন।) এমন এক জনের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক কেমন একটা বেমানান ঘটনা মনে হচ্ছে।
রবীন্দ্রনাথ দত্ত কলকাতা-৬৪
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ই-মেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়