ভারতে সব রাজনৈতিক দলেই সব সম্প্রদায়ের লোক আছেন। তাঁদের প্রত্যেকের গণতান্ত্রিক অধিকার সমান। সব সম্প্রদায়ের লোক যখন ভারতীয় জনতা পার্টিতে আছেন, তখন সেই দলের স্লোগান ‘জয় শ্রীরাম’ হয় কী করে? এ তো শুধু হিন্দুধর্মাবলম্বীদের স্লোগান। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিজেপি নেতানেত্রী ও কর্মীদের মনে হতে পারে, আমরা তো প্রাণ দিয়ে পার্টিকে ভালবাসি, নিষ্ঠা ভরে পার্টির সমস্ত কাজ করি, তা হলে স্লোগান হিসেবে আমাদের ধর্মীয় গুরুর নামগান হবে না কেন? বিজেপি-তে লোকাল স্তর থেকে কেন্দ্রীয় স্তর অবধি বহু মুসলিম সম্প্রদায়ের লোক অাছেন, তাঁরা কেন ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেবেন? তা হলে পার্টির মধ্যে গণতন্ত্র কোথায়? তা হলে ‘সকলের সঙ্গে, সবার বিকাশ, সবার বিশ্বাস’ ধ্বনি তুলে, সবার বিশ্বাসকে তো মর্যাদা দেওয়া হল না!
আশীষ কাঞ্জিলাল
বেলঘরিয়া
পৈশাচিক
আমি নাগেরবাজার থেকে দমদম স্টেশন নিত্য বাসযাত্রী। প্রত্যহ দেখি, হনুমান মন্দিরের পর থেকে স্টেশন পর্যন্ত, রাস্তার দু’দিকের ফুটপাতে উঁচু চৌকির উপর বসে অত্যন্ত নৃশংস ভাবে খোলা জায়গায় মুরগি কাটা হচ্ছে। তার পর ছটফট করতে থাকা মুরগিকে পা দিয়ে চেপে রাখা হয়। তার পর হাত দিয়ে উঁচু করে ধরে, জনসমক্ষে অত্যন্ত নৃশংস ভাবে হাত দিয়ে টেনে টেনে ডানা, পালক ছেঁড়া হয়। শিউরে উঠি। সভ্য সমাজে এ সব চলবে?
গোপাল ঘোষ
কলকাতা-৮০
একটা ভাল্ভ
জলের অপচয় বন্ধ করার কত আবেদন জানানো হচ্ছে, কাজ হচ্ছে কি? অন্তত সল্ট লেকের অধিবাসী হিসেবে বলতে পারি, এখানে এই প্রচারের ছাপ পড়েনি। যে কোনও সকাল দুপুর সন্ধেয় মিউনিসিপ্যালিটির জল সরবরাহের সময় সল্ট লেকের যে কোনও ব্লকের ভেতরের রাস্তায় দেখা যায়, কিছু কিছু বাড়ির লাগোয়া প্যাসেজ জলে ভেসে যাচ্ছে। ট্যাঙ্ক ভর্তি হয়ে জল উপচে উঠোন ভাসিয়ে রাস্তায় গিয়ে পড়ছে।
অথচ সহজেই এই সমস্যার সমাধান হতে পারে। খরচ সাকুল্যে শত-খানেক টাকা। রিজ়ার্ভারের ভেতরে পাইপের মুখে একটা ফ্লোট-ভাল্ভ লাগিয়ে নিলেই হল। জলাধার ভরে গেলে জল উপচে পড়া বন্ধ হয়ে যাবে। হতে পারে সাধারণ মানুষ এই সহজ সমাধানের কথা জানেন না। অথবা ভাবেন, জল তো আর পয়সা দিয়ে কিনতে হচ্ছে না, এর জন্য আর অর্থের অপচয় করি কেন?
দায় মিউনিসিপ্যালিটিরও। তাঁরা নির্দেশ জারি করতেই পারেন, প্রত্যেক বাড়ির রিজার্ভারের ভেতরে এই ভাল্ভ লাগানো বাধ্যতামূলক। তাঁরাও হয়তো ভাবেন, কী লাভ এসব করে? অযথাই ভোটারদের চটানো।
রবিন চক্রবর্তী
কলকাতা-৯১
আতঙ্কের শ্রাবণ
যারা জিটি রোডের ধারে বাস করি, তাদের কাছে আবার আসছে আতঙ্কের মাস। শ্রাবণ মাস। শ্রাবণের শনিবারের রাতগুলো চলে যায় বাবা তারকনাথের ভক্তদের (?) কব্জায়। সারা রাত ধরে রাস্তায় তাণ্ডব চলে। কিছু দূর অন্তর এক একটি ‘চটি’ তৈরি হয়ে যায়, যেখান থেকে প্রচণ্ড জোরে মাইক বাজে। শিশু, বৃদ্ধ, রোগী তো বটেই, সাধারণ মানুষেরও প্রবল কষ্ট হয়। প্রশাসন ও পরিবেশবিদরা আশ্চর্য ভাবে নীরব থাকেন। ধর্ম করলে কি মাইক বাজাবার সময়সীমা (রাত দশটা) মানতে হয় না?
তপন কুমার মল্লিক
রিষড়া, হুগলি
সিজিএইচএস
ভারতীয় রেল ব্যতীত কেন্দ্রীয় সরকারের লক্ষ লক্ষ কর্মচারী-পেনশনার এবং ফ্যামিলি পেনশনাররা সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট হেলথ স্কিম (সিজিএইচএস)-এর অধীনে সব রকম চিকিৎসার সুযোগ পেয়ে থাকেন। পেনশনারদের এই স্কিমে নাম অন্তর্ভুক্ত করতে গেলে তাঁদের গ্রেড পে অনুযায়ী বছর বছর একটা অঙ্কের টাকা জমা দিতে হয়। অথবা এককালীন দশ বছরের টাকা দিলে পেনশনার এবং ফ্যামিলি পেনশনারদের সারা জীবনের মতো সব রকমের চিকিৎসার সুযোগ পাওয়া যায়। দেশের সব শহরেই সিজিএইচএস-এর অফিস আছে এবং অনেক বড় বড় বেসরকারি হাসপাতালকে সব রকম চিকিৎসা করার জন্য এই স্কিমে অন্তর্ভুক্ত করা আছে। বৈধ কার্ড দেখিয়ে ভর্তি হলে কোনও চিকিৎসার জন্য কোনও খরচ লাগে না। কিন্তু খুবই দুঃখজনক ব্যাপার, এই সব হাসপাতালে সিজিএইচএস-এর কোনও মুমূর্ষু রোগী গেলেও, অধিকাংশ সময় অত্যন্ত রুক্ষ ব্যবহার করা হয়, বলা হয়, ‘বেড নেই’! আমার বয়স ৭৪ , আমি এক জন পেনশনার। সম্প্রতি স্কিমের অন্তর্ভুক্ত একটি বেসরকারি হাসাপাতালে গিয়েছিলাম। ওই হাসপাতালের অস্থিবিশেষজ্ঞ আমাকে ভর্তি করার এবং পরের দিন সকালে বাঁ কাঁধের হাড় অপারেশনের ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও, বলা হল, বেড নেই। প্রায় ছ’ঘণ্টা হয়রানির পর যখন বললাম ‘‘তা হলে বাড়ি চলে যাচ্ছি’’, তখন ইমার্জেন্সি ট্রলিতে রেখে, ঘণ্টাখানেক পর বেড দেওয়া হল। সিজিএইচএস-এর লিখিত নির্দেশ আছে, পেনশনারদের প্রবল সঙ্কট হলে ভর্তি করতেই হবে। কিন্তু সে সব নির্দেশ গ্রাহ্য করা হয় না। সব হাসপাতালকে সিজিএইচএস নির্দেশ দিক, কত বেড ও কত ইমার্জেন্সি ট্রলি ফাঁকা আছে, তার স্টেটাস ভারতীয় রেলের মতো প্রতি মুহূর্তে ওয়েবসাইটে প্রদর্শন করতে হবে।
প্রশান্ত বসু রায়
বড়বাজার, হুগলি
গ্যালপিং
সুভাষগ্রাম স্টেশনের উপর দিয়ে মাত্র তিনটি রুটের (ডায়মন্ড হারবার, লক্ষ্মীকান্তপুর/নামখানা, বারুইপুর) ট্রেন চলে। প্রায় বছর দুই/তিন হল, ডায়মন্ড হারবার এবং লক্ষ্মীকান্তপুর লাইনের বেশ কিছু ট্রেনকে শিয়ালদহ থেকে বারুইপুর অবধি গ্যালপিং করা হয়েছে। এর ফলে সকাল থেকে রাত অবধি অনেক আপ ও ডাউন ট্রেন সুভাষগ্রামে দাঁড়ায় না। এ দিকে গত ১০/১২ বছরে এই অঞ্চলে প্রবল জনস্ফীতি ঘটেছে এবং যাত্রিসংখ্যা বহু গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কোথায় ট্রেন বাড়ানো হবে, তার বদলে ট্রেন কমানো হল! যে ক’টা ট্রেন দাঁড়ায়, ভিড়ের চোটে ওঠা প্রায় অসম্ভব।
এস কে গিরি
সুভাষগ্রাম
গুঁড়ো রাস্তা
নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরের কাছে মুড়াগাছা একটি বর্ধিষ্ণু গ্রাম। অনেক দিন আগে গ্রাম থেকে প্রায় এক মাইল দূরে মুড়াগাছা রেলস্টেশন তৈরি হয়। স্টেশন থেকে প্রায় আধ কিলোমিটার রাস্তা কংক্রিটে বাঁধানো ছিল। তবে শুধুমাত্র রাস্তার দু’পাশ, মধ্যিখানে মাটির রাস্তা, কারণ তখন যানবাহন বলতে ছিল গরুর গাড়ি, ঘোড়ার গাড়ি। বেশ কয়েক দশক পরে এক বার মাত্র রাস্তাটি পিচের করা হয়েছিল। কিন্তু তাও ছিল আমাদের সংস্কৃতির মতোই ‘স্কিন-ডিপ’, সেই পিচ কয়েক মাসের মধ্যেই গাড়ির চাকার অাঁচড়ে উঠে যায়। এখন রাস্তাটা পুরো গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে গিয়েছে, ফলে আমাদের মতো সিনিয়র সিটিজেনদের টোটোর জার্নির পরে ২০৬ খানা হাড় নয়-ছয় হয়ে যায়।
রণজিৎ মুখোপাধ্যায়
মুড়াগাছা, নদিয়া
জল কিনে খাই
অন্ডালের শ্রীপল্লীতে বিশাল জনবসতি গড়ে উঠেছে, প্রায় ৩০-৩২ বছর হল। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনও পানীয় জলের ব্যবস্থা হয়নি। এখনও আমাদের জল কিনে খেতে হয় (৮-১০ টাকা প্রতি ২০ লিটার ক্যান)। এর মধ্যে বিভিন্ন দলের পঞ্চায়েত এল, চলেও গেল। প্রত্যেকের কাছ থেকে শুধু আশ্বাসটুকুই পেয়েছি।
গণেশ চন্দ্র দাস
শ্রীপল্লী, পশ্চিম বর্ধমান
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।