ঢাকায় বাসের রেষারেষির জেরে দুই ছাত্রছাত্রীর মৃত্যুতে ক্ষুব্ধ হয়ে অবাধ্য ট্র্যাফিক ব্যবস্থাকে বশে আনতে পথে নেমে খুদে স্কুলছাত্ররা অভিনব প্রতিবাদের দৃষ্টান্ত স্থাপন করল। তবে বাস পোড়ানো কোনও ভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। ভাল হত, যদি তারা শুধুমাত্র ওই অভিনব প্রতিবাদের মধ্যে নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখত। এই যে মহামান্য মন্ত্রিমহোদয়ের গাড়িকেও ছাড় না দেওয়া, বা লাইসেন্সবিহীন পুলিশের গাড়িও থামিয়ে দেওয়া, বা উপযুক্ত কাগজপত্র না পেয়ে অনেক চালকের গাড়ির চাবি কেড়ে নেওয়া— এগুলি ছোটদের কাছে বড়দের যদি এতটুকু লজ্জা, মানহানির কারণ হয়ে থাকে, তবে বলতে হবে বেশ বড় রকমের শিক্ষা হল এই বেআইনি, বেপরোয়া গাড়ি চালানোর মালিক বড়দের। কলকাতার অবস্থা আরও খারাপ, বাসের রেষারেষিতে প্রায়ই এখানে অসংখ্য মানুষ বলি হন। আমাদের দুষ্টু বড়রাও এর থেকে শিক্ষা নেবেন কি?
মৃণাল মুখোপাধ্যায়
হেস্টিংস, কলকাতা
এটিএম
আমি অবসরপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী। দক্ষিণ কলকাতার পাটুলির বাসিন্দা। কয়েক দিন আগে স্থানীয় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে পেনশনের টাকা চেক দিয়ে তুলতে গিয়ে শুনতে হয়, ‘‘আপনি চেক দিচ্ছেন কেন? এটিএম কার্ড নেই? এটিএমে তুলবেন।’’ আমার বয়স ৭৮। বয়সজনিত অক্ষমতার কারণে এটিএম ব্যবহারে বেশ অসুবিধা। দুর্বল দৃষ্টিশক্তির কারণে এটিএম-এর নির্দেশ যথার্থ অনুধাবনও করতে পারি না। আর সম্প্রতি এটিএম সংক্রান্ত যে ধরনের গোলমাল হচ্ছে, তাতে আরও ভয় পাচ্ছি। এ ব্যাপারে ব্যাঙ্কগুলির দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। বয়স্ক অ্যাকাউন্ট হোল্ডারদের প্রতি ব্যাঙ্ককর্মীদের আর একটু সহমর্মী হতে অনুরোধ করছি। আরও প্রশ্ন, তা হলে কোর ব্যাঙ্কিং এবং নাম ছাপা চেক-এর অর্থ কী?
শিশির ঘোষ
কলকাতা-৯৪
অমানবিক
বহরমপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের জেনারেল ওয়ার্ডে গিয়ে দেখলাম, অন্য রোগীদের মাঝে মৃতদেহ রাখা আছে। চিকিৎসা চলাকালীন তাঁর মৃত্যু হয়েছে। মৃতদেহটি চার ঘণ্টা সেখানে রাখা হবে। প্রায় এক ফুট দূরে অন্য বেডে এক জন রোগীর চিকিৎসা চলছে। পুরো ওয়ার্ডে রোগী এবং বাড়ির লোকেরা ভিড় করে রয়েছেন। তার মধ্যে ছোট বাচ্চারা মুখঢাকা মৃতদেহ দেখে ভয় পাচ্ছে। চিকিৎসাধীন রোগীরা বার বার মৃতদেহের দিকে তাকাচ্ছেন। মৃতের বাড়ির লোকেরা ভিড় আর কোলাহলের মাঝে জায়গা না পেয়ে মৃতদেহের বেডের উপরে দেহের পাশে বসে আছেন আর অপেক্ষা করছেন, কখন চার ঘণ্টা হবে। অন্য রোগীর আত্মীয়রা জিজ্ঞেস করছেন, কী ভাবে মারা গেলেন। কর্তৃপক্ষ কি একটু মানবিক হতে পারেন না?
মিজানুর রহমান
পঞ্চাননতলা, মুর্শিদাবাদ
৭০ অবধি
‘ইউজিসি পুনর্নিয়োগ চায়, ক্ষোভ রাজ্যে’ (২৫-৭) শীর্ষক সংবাদে জেনে বিচলিত হলাম যে অধ্যাপকরা পুনর্নিয়োগের জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। তাঁরা ৭০ বছর পর্যন্ত অধ্যাপনা করতে চান। ৬৮-৬৯ বছর বয়সে তাঁরা শারীরিক ভাবে কতটা সক্ষম হবেন সেটা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন থেকেই যায়। একেই দীর্ঘ দিন ধরে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক নিয়োগ মন্থর গতিতে চলছে, তার ওপরে আবার পুনর্নিয়োগের রমরমা। নেট স্লেট পাশ করে বসে থাকা বেকার যুবক-যুবতীদের কথা কেউ ভাবছেন?
সোনাই সাতভায়া
ইন্দপুর, বাঁকুড়া
নিজেদের খাবার
সম্প্রতি আনন্দবাজারে মিড ডে মিলে আপেল দেওয়ার কথা জানলাম। আপেল এখানে হয় না, চালানি আপেল অনেক দামি। বাসি বা একটু পচা আপেলের ছত্রাকের patulin, বীজের সায়ানাইড জাতীয় amygdalin, অত্যন্ত অপকারী। তুলনায় স্থানীয় ফল আম কাঁঠাল পেয়ারা কলা আনারস আতা সস্তা, এদের খাদ্য ও পুষ্টিগুণ আপেলের চেয়ে ঢের বেশি। বরং যে সব জেলায় শীত বেশি পড়ে ও স্ট্রবেরি চাষ হয়, তা দেওয়া যেতে পারে, যা সুস্বাদু ও বেশি পুষ্টিকর।
এই কাগজেই ইংল্যান্ডে ঝালমুড়ি বিক্রির কথা জানলাম (‘ইংল্যান্ডের রাস্তায় ছুটছে ঝালমুড়ি এক্সপ্রেস’, ৩০-৭)। ছোলা বাদাম শসা আদা পেঁয়াজ লেবু সরষের তেল সহযোগে এ খাবার বিদেশে জনপ্রিয় হচ্ছে। আমরা অবহেলায় হারাচ্ছি চিঁড়ে মুড়ি খই ছাতু ভিজে ছোলা ছাতু হালুয়া ঘুগনি(ভেজাল রং ছাড়া) ইত্যাদি সস্তা পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস, লঙ্কা হলুদ টমেটো বিট কালো গাজর, কুদ্রুমের স্বাভাবিক রং, দিশি নানান শাক ও ফলের উপযোগিতা। ক’জনই বা জানি পিয়াল কেঁদ তেন্দু আউশ ফলের কথা, কাঁঠাল বিচি, কাঁচা মহুয়া ফল, ডুমুর, মেটে আলুর তরকারির স্বাদ ও পুষ্টির কথা? প্রকৃতির নিয়মে স্থানীয় তাজা ফলই স্থানীয় মানুষের উপযোগী। এ সব যেন চালানি ফল, প্যাকেট, বোতলবন্দি কৃত্রিম ভেজাল রং ও রাসায়নিক সংরক্ষণযুক্ত খাবারের মিথ্যে চাকচিক্যে হারিয়ে না যায়।
অর্চনা বন্দ্যোপাধ্যায়
ডিয়ার পার্ক, শান্তিনিকেতন
‘স্ত্রী’ নয়
‘উত্তমের বিস্মৃত নায়িকা আরতি ভট্টাচার্য’ (‘উত্তম পুরুষ’ ক্রোড়পত্র, ২৪-৭) শীর্ষক লেখাতে ‘স্ত্রী’ ছবি বলে নৌকাবিলাসে উত্তম-আরতির যে ছবি ছাপা হয়েছে, তা ভুল। এটি ‘আনন্দমেলা’র ছবি। পরিচালক ছিলেন মঙ্গল চক্রবর্তী। ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ২৩-০৪-১৯৭৬।
গৌতম মুখোপাধ্যায়
কলকাতা-৩
মা ছিলেন
‘উত্তম পুরুষ’-এ মিস শেফালির প্রতিবেদনে একটি ভুল তথ্য পরিবেশিত হয়েছে। উনি বলেছেন, ‘‘মায়ের চলে যাওয়াটা ছিল মহানায়কের কাছে বড় ধাক্কা।’’ কিন্তু মায়ের জীবদ্দশাতেই উত্তমকুমার প্রয়াত হয়েছিলেন।
অরূপ সাহা
কলকাতা-৩৫
মুঘলসরাই
ছিল মুঘলসরাই, হয়ে গেল দীনদয়াল উপাধ্যায়! মুছে গেল দেড়শো বছরের ইতিহাস! সৌজন্যে উত্তরপ্রদেশের যোগী পরিচালিত বিজেপি সরকার। মুঘলসরাই নামটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে ব্রিটিশ ও মুঘল আমলের স্মৃতি। জি টি রোডের সঙ্গে জড়িয়ে আছে প্রখ্যাত রাজা শের শাহ সুরির নাম। এই রাস্তার পাশেই ব্রিটিশরা নির্মাণ করেছিল মুঘলসরাই স্টেশন। শের শাহ সুরির নাম যাতে ইতিহাস থেকে মুছে না যায়, সেই কৃতজ্ঞতাবোধ থেকেই স্টেশনের এই নামকরণ। কিন্তু ব্রিটিশ শাসকের যে বোধ ছিল, সেই বোধ তো বিজেপির নেই। তাদের একমাত্র লক্ষ্য ভারতের ইতিহাস থেকে মুসলিমদের নাম বিসর্জন দেওয়া। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে একটি স্থানের যে ঐতিহাসিক অপমৃত্যু ঘটল, সেটা বোঝার চেতনা গো-প্রেমী বিজেপির নেই!
বিজন মজুমদার
ইছাপুর, উত্তর ২৪ পরগনা
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।
ভ্রম সংশোধন
‘আজ টিভিতে’ বিভাগে (পৃ ২, ৮-৮) সঙ্গীতশিল্পীর নাম ছাপা হয়েছে শ্রাবণী বসু। হওয়া উচিত ছিল শ্রাবণী সেন। অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।