তাঁর বিকল্প এখনও নেই
• মহেন্দ্র সিংহ ধোনি-কে ভারতীয় দল থেকে বাদ দেওয়া নিয়ে যতই আলোচনা হোক না কেন, তাঁর বিকল্প ভারতীয় দলে তৈরি হতে এখনও সময় লাগবে। ধোনি শ্রীলঙ্কা সফরে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে তিনি এখনও শেষ হয়ে যাননি।
আমরা শুধু ব্যাট ও বল দুটোই করতে পারলে অল-রাউন্ডার ভাবি। এই সংজ্ঞা পরিবর্তন হওয়া দরকার। দেখতে গেলে পুরো ম্যাচে অন্যান্য ফিল্ডার-এর থেকে উইকেটকিপারকে বেশি পরিশ্রম করতে হয়। তাঁকে এক রকম অল-রাউন্ডারই বলা চলে। কারণ, তিনি এক দিকে উইকেট কিপার এবং অন্য দিকে ব্যাটসম্যান হিসেবে খুবই ভাল। উপরন্তু তাঁকে ডিআরএস পরামর্শদাতাও বলা চলে। ২০১৬ সালে টি ২০ ওয়ার্ল্ড কাপ-এ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তাঁর উইকেটকিপিং সমস্ত সমালোচকের মুখ বন্ধ করে দিয়েছে। কথায় আছে, পুরনো চাল ভাত বাড়ে। ধোনিও অনেকটা সেই রকম। তাঁর মতো এক জন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ভারতীয় দলে থাকলে ২০১৯ ওয়ার্ল্ড কাপ মিশনে বিরাট কোহালির ওপর থেকে চাপ অনেকটাই কমবে।
শিবপ্রসাদ জানা
নামখানা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
হারাতে চাই না
• ‘ভুল ঠিক করুন’(২৮-৮) এবং ‘আকাশবাণী ’(৭-৯) চিঠি দুটি প্রসঙ্গে কিছু বলতে চাই। আকাশবাণীর প্রাইমারি চ্যানেলগুলো সম্বন্ধে প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পর্যায়ে আর তেমন ভাবে ভাবা হয় না। অতীতে যে হারে মানুষ রেডিয়ো শুনত, সে ভাবে এখন শোনে না— এ কথা সত্যি, কিন্তু কিছু মানুষ আছেন, যাঁরা রেডিয়ো আঁকড়ে এখনও পড়ে আছেন।
অন্যান্য প্রচারমাধ্যমের তুলনায় আকাশবাণী এখনও তার ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রেখেছে। ফলে এক শ্রেণির মানুষের কাছে আকাশবাণী বেঁচে থাকার আশ্রয় হিসাবে কাজ করছে। এ কথা অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই যে, আকাশবাণী থেকে অনবধানতার কারণে কখনও কখনও ভুল তথ্য পরিবেশিত হয়। এ ধরনের কয়েকটি ভুল আকাশবাণীর নজরে এনেছিলাম। যেমন কিছু লোকগানের গীতিকার সম্পর্কে প্রামাণ্য তথ্য থাকা সত্ত্বেও অনুষ্ঠানে সেগুলিকে প্রচলিত লোকগান বলে অভিহিত করা হত। আমার সংশোধনীর ফলে এটা অবশ্য ঠিক করা হয়েছে। আকাশবাণীর একাধিক অনুষ্ঠানের সেরা লেখক হিসাবে সম্মানিতও হয়েছি।
আমার মনে হয়েছে আকাশবাণীর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এ বার বদল ঘটানো প্রয়োজন। প্রার্থীর শুধু কণ্ঠস্বর এবং যান্ত্রিকতাকে গুরুত্ব না দিয়ে, তাঁর রসবোধ, বাংলা সংস্কৃতি সম্পর্কে জ্ঞান— এই বিষয়গুলির উপর জোর দেওয়া দরকার। পূর্বে কত বিদগ্ধ সাহিত্যিক আকাশবাণীর গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্ব সামলেছেন। আজ সে ধরনের মানুষ আকাশবাণীতে কই? স্বপ্নময় চক্রবর্তীর পর আর কোনও ব্যক্তিকে পাওয়া যায়নি, যিনি একই সঙ্গে সাহিত্যিক এবং আকাশবাণীর কর্মী।
দ্বিতীয় কথা, প্রচারমাধ্যমের দিক থেকে আকাশবাণী একটা যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে, যেটা হল ডি আর এম ট্রান্সমিটারের স্থাপনা। এর ফলে প্রচারমাধ্যমের গুণগত উৎকর্ষ উন্নত হওয়া উচিত। কিন্তু স্থানীয় ইলেকট্রিফিকেশন সিস্টেম, ইন্টারনেট ক্ষেত্র কাছাকাছি থাকলে বেতার তরঙ্গ প্রবাহের মান দারুণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে রেডিয়ো ভাল শোনা যায় না। কিন্তু গত বছর ‘আকাশবাণী মৈত্রী’ নামের একটি বাংলা ভাষার আন্তর্জাতিক চ্যানেল উদ্বোধন হওয়ার পর বহু মানুষ ‘মৈত্রী’ শুনছেন। কেন না ৫০৫ মিটারে বাজানোর ফলে এবং উন্নত ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে প্রচার হওয়ার ফলে এই চ্যানেলের অনুষ্ঠান খুব পরিষ্কার শোনা যায়। কিন্তু যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ঐতিহ্যকে বজায় রেখে চলতে না পারলে আকাশবাণী তার প্রাসঙ্গিকতা হারাবে।
শঙ্খ অধিকারী
সাবড়াকোন, বাঁকুড়া
৩২ সপ্তাহ
• ৩২ সপ্তাহে টার্মিনেশন অব প্রেগন্যান্সির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। (‘মৃত, ধর্ষিতার সদ্যোজাত’, ১২-৯) এখানে শুধু রোগীর মানসিক চাপ নিরসনের জন্য এত বড় একটা অপারেশন করা হল, যেখানে এই ধরনের অপারেশনে রোগীরও জীবনের ঝুঁকি আছে। প্রসব করানোর জন্য এই পন্থা সচরাচর অবলম্বন করা হয় না, শুধুমাত্র যেখানে এর ঠিক প্রয়োগবিধি আছে, সেখানেই সি সেকশন করা হয়। কিছু দিন আগে এক দম্পতির গর্ভস্থ সন্তানের অস্বাভাবিক (২৬ সপ্তাহের) গর্ভপাতের জন্য কোর্টকাছারি করতে হয়, অবশেষে কোর্টের সবুজ সংকেত পাওয়া যায়। চিকিৎসার ব্যাপারে মেডিক্যাল বোর্ড ঠিক করবে কী করা উচিত। এখানে রোগীর থেকে তার অভিভাবকের মানসিক চাপ, উদ্বেগ বেশি। আর একটা প্রশ্ন— বাচ্চাটির যে কোনও অস্বাভাবিকতা আছে, অপারেশনের আগে ইউএসজি-তে সেটা ধরা পড়েনি?
এক সংবাদপত্রে এক ডাক্তার বলেছেন, বাচ্চা সুস্থ আছে, তবে তার সব অঙ্গ পুষ্ট হয়নি। হ্যাঁ, এই কারণেই ৩২ সপ্তাহে প্রসব করানো হয় না।
ডা. অর্চনা ভট্টাচার্য
চুঁচুড়া, হুগলি
ফাঁকা কলসি
• পশ্চিমবঙ্গের স্কুলগুলোকে শহর, আধা শহর এবং গ্রাম এই তিন শ্রেণিতে ভাগ করলে দেখা যাবে গ্রামের প্রায় সব স্কুলই বাংলা মাধ্যম, আধা শহরে ইংরেজির আনাগোনা শুরু হয়েছে আর শহরে অনেক দিন থেকেই অভিভাবকেরা বাংলা মাধ্যমে পড়ানোর চিন্তা ছেড়ে দিয়েছেন। তাই কর্পোরেশনের স্কুলে পড়ুয়া নেই, শিক্ষক-শিক্ষিকা শূন্য চেয়ার-বেঞ্চকেই পড়ান। পবিত্র সরকার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন (‘রাজ্য সরকারই বাংলাকে...’, ৫-৯) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বাংলা হটিয়ে ইংরেজিতে পড়ানো শুরু হয়েছে, রাজ্য সরকারের প্রয়াসে বাংলা ভাষাটাই না রাজ্যে দ্বিতীয় ভাষা হয়ে যায়।
আমার মনে হয়, এই আশঙ্কা কিছুটা সত্য, কিছু অমূলক। কারণ, গ্রামেই বেশির ভাগ মানুষের বসবাস, তাদের লেখাপড়া, আদানপ্রদান সব কিছুই বাংলাতে। তাই বাংলাকে হটিয়ে ইংরেজি গ্রামবাংলার প্রাথমিক ভাষা হয়ে উঠবে না। আবার যে সব আধা-শহরে সরকারি আনুকূল্যে ইংরেজিতে পড়ানো শুরু হয়েছে, সব বিষয়ের সেই সংখ্যক প্রশিক্ষিত শিক্ষক কোথায়? বরং একটা ভয় হয়, এই সব স্কুলে পড়ানোটা ‘অল্প বিদ্যা ভয়ংকরী’ না হয়ে ওঠে! ছেলেমেয়েরা ভুলভাল ইংরেজি শিখবে আর বাংলাও ঠিকঠাক পড়বে না। বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে রাজ্য সরকার বাংলা ভাষার প্রতি যে অবহেলা করে ফেলছেন, সে ভাবনাটা মাথায় আসছে না।
আশঙ্কার কিছুটা সত্য এই যে, ইংরেজির প্রতি আমাদের শহুরে মানুষের ক্রমবর্ধমান আকর্ষণ। উচ্চশিক্ষার প্রয়োজনে এবং বিশ্বায়নের ফলে অভিভাবকগণ প্রথম থেকেই ইংরেজিকে ছেলেমেয়েদের হাড়ে মজ্জায় মিশিয়ে দিতে চাইছেন। সে দিন এক নব্য মা তো বলেই ফেললেন, ‘ছেলে বলছে, কে যে এই সব খণ্ড-ত, অনুস্বার, বিসর্গগুলো ইনভেন্ট করেছিল!’ মাতৃভাষার প্রতি এই অবহেলার ফল ভাল হবে না।
তবে এ নিয়ে খুব বেশি দুশ্চিন্তার কারণ নেই। কিছু দিন পর অভিভাবকরাই এই সব ইংরেজি স্কুলে পড়াশোনার মান বুঝতে পারবেন, ফলে ছাত্র কমবে। এক সময় স্কুলগুলো বন্ধও হয়ে যাবে।
ত্রিদিব মিশ্র
শান্তিনিকেতন, বীরভূম
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ই-মেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়
ভ্রম সংশোধন
• ‘আইএফএ তৎপর’ প্রতিবেদনে (৯-৯, পৃ ২৪) ভুলবশত লেখা হয়েছিল, কলকাতা প্রিমিয়ার লিগে টালিগঞ্জ অগ্রগামী বনাম পিয়ারলেস ম্যাচে গড়াপেটার অভিযোগ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে ফিফা নিযুক্ত সংস্থা। আদতে ম্যাচটি ছিল টালিগঞ্জ অগ্রগামীর সঙ্গে রেনবো এস সি-র। অনিচ্ছাকৃত ত্রুটির জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।