Editorial News

কুমারস্বামীদের হুঁশ ফেরানোর দায়িত্বটা নাগরিকদেরই নিতে হবে

ক্রমাবক্ষয় এবং দ্রুত অবক্ষয়— এটাই বোধহয় অমোঘ হয়ে দাঁড়িয়েছে এ দেশের রাজনীতিতে। অবনমনের এবং অবক্ষয়ের একের পর এক নজির তৈরি করছেন এ দেশের রাজনীতিকরা।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:২৩
Share:

—ফাইল চিত্র।

রাজনীতির সংবিধান থেকে কি ‘দায়বদ্ধতা’ শব্দটার অবলুপ্তি ঘটবে? যদি না ঘটে, তা হলে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী এক ভয়ঙ্কর, বিপজ্জনক এবং চূড়ান্ত অসাংবিধানিক মন্তব্য করেও ক্ষমাপ্রার্থনা না করার অবস্থানে অনড় থাকতে পারেন কী করে!

Advertisement

দলীয় কর্মী খুন হওয়ার ঘটনায় অত্যন্ত ‘বিচলিত’ হয়ে পড়েছিলেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী। তাই তদন্ত, গ্রেফতারি, আইন-কানুন বা বিচার ব্যবস্থার পরোয়া করতে চাইলেন না তিনি। হাঁকডাক করে পুলিশকে বলে দিলেন— অভিযুক্তের প্রতি কোনও মায়াদয়া দেখানোর প্রয়োজন নেই, গুলি করে মারা হোক।

কতটা বিপজ্জনক এই মন্তব্য, কুমারস্বামী বুঝতে পারছেন কি? এই মন্তব্য যে যাবতীয় বিধি-বিধান, যাবতীয় এক্তিয়ার, যাবতীয় সাংবিধানিক গণ্ডি ভেঙে দিয়েছে মুহূর্তে, সে উপলব্ধি কি কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীর হয়েছে? পুলিশকে একজন মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি নির্দেশ দিচ্ছেন কোনও এক অভিযুক্তকে মারতে! স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে এমন ঘটনা আগে কখনও ঘটেছে কি?

Advertisement

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

ক্রমাবক্ষয় এবং দ্রুত অবক্ষয়— এটাই বোধহয় অমোঘ হয়ে দাঁড়িয়েছে এ দেশের রাজনীতিতে। অবনমনের এবং অবক্ষয়ের একের পর এক নজির তৈরি করছেন এ দেশের রাজনীতিকরা।

এমন সাংঘাতিক কাণ্ডের পরেও এইচ ডি কুমারস্বামীর পশ্চাত্তাপ নেই। দলীয় কর্মীর খুন হওয়ার খবরে রাগ হওয়াই স্বাভাবিক এবং রাগ হলে ওই রকম মন্তব্য বেরিয়ে আসাও স্বাভাবিক— কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীর সাফাইটা এ রকমই। তিনি সাফ জানাচ্ছেন, ওই মন্তব্যের জন্য ক্ষমতা চাইতে তিনি প্রস্তুত নন একেবারেই। সাফাইয়ের এই বয়ানটাও যে কতখানি দায়িত্বজ্ঞানহীন হল, তাও সম্ভবত বুঝতে পারছেন না কুমারস্বামী।

আরও পড়ুন: ‘ছোট্ট ঘটনা’! পুলিশকে গুলির নির্দেশ দিয়েও ক্ষমা চাইলেন না কুমারস্বামী

কুমারস্বামী না হয় বিচলিত নন। সাধারণ নাগরিক বিচলিত হচ্ছেন কি? ভারতের রাজদণ্ড কি ধীরে ধীরে এই রকম চূড়ান্ত অসংবেদনশীল একটা শ্রেণির হাতে চলে যাবে? বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের নাগরিকরা সেটা হতে দেবেন?

রাজনীতিকদের এই অসংবেদনশীলতার যোগ্য জবাব যদি নাগরিকরা দিতে না পারেন, তা হলে কিন্তু পরম্পরা চলতে থাকবে। দল বা রং নির্বিশেষে যে কোনও রাজনৈতিক অসংবেদশীলতাকে আস্তাকুঁড়ে ছুড়ে ফেলার মতো দৃঢ়তা দেখানোর সময় হয়েছে। দায়িত্বটা কিন্তু নাগরিকদেরই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement