পুলওয়ামায় সংঘর্ষ চলাকালীন ভারতীয় সেনার জওয়ানেরা।—ছবি এএফপি।
আরও এক রক্তস্নাত দিন কাটল কাশ্মীর উপত্যকায়। এক জন সেনাকর্মী এবং তিন জঙ্গির মৃত্যু ছাড়াও সাত জন নিরীহ নাগরিকের নির্বিচার মৃত্যুর সাক্ষী থাকল পুলওয়ামা। শনিবার কালো দিন হয়ে থাকল উপত্যকার জন্য। এবং আরও একবার প্রশ্ন উঠে গেল রাজ্যপালের শাসনের প্রতি আস্থাকে ঘিরে।
আলোচনার বদলে বন্দুকের নীতি নিয়ে চললে কাশ্মীরের পরিস্থিতি যে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে, বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘ দিন ধরে এই পরামর্শ দিয়ে আসছেন। তবু, অন্তত গত কয়েকটা বছরে আমরা প্রশাসনকে দেখেছি আলোচনার রাস্তাকে সঙ্কুচিত করে শক্তিপ্রদর্শনের পথে হাঁটতে। সেনার বুটের শব্দ আর পুলিশের সশব্দ উপস্থিতি উপত্যকায় আস্থার সম্পর্কটাকে যে ক্রমাগত সন্দেহের সম্পর্কে রূপান্তরিত করছে, এটা কি কোথাও খেয়াল করেছি আমরা?
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রিপোর্ট বলছে, গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হিংসার মুখোমুখি উপত্যকা এই মুহূর্তে। সন্ত্রাসবাদী হামলার ঘটনাই হোক, সেনা বা নিরাপত্তাকর্মীদের উপর আঘাত অথবা সাধারণ মানুষের উপরে গুলি, সব দিকেই সংখ্যা ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। শনিবার পুলওয়ামায় সেনাবাহিনীর গুলিতে সাত নিরীহ নাগরিকের মৃত্যু শুধু সেই তালিকাটাকেই দীর্ঘ করল, তাই নয়, উপত্যকার ভারী বাতাসকে যে আরও ভারী করে তুলল, তা নিয়ে সংশয়ের অবকাশ নেই।
সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
মেহবুবা মুফতি রাজ্যপালের শাসনকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। ওমর আবদুল্লা তীব্র নিন্দা করেছেন সাধারণ নাগরিকদের এই মৃত্যুর ঘটনায়। রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশই আশঙ্কা করছেন বৃহত্তর সঙ্কটের। কাশ্মীর সমস্যার সমাধান সম্ভব সাধারণ মানুষের আস্থার উপর দাঁড়িয়েই। আস্থা অর্জনের বদলে যদি ক্ষোভের পুঞ্জ জমতে দিই আমরা, তাতে যে শত্রুরই সুবিধা, এটা বোঝা কঠিন নয় দেশের শাসকদের।
আরও পড়ুন: জঙ্গি অভিযানে রক্তাক্ত কাশ্মীর, সেনার গুলিতে ৭ স্থানীয়ের মৃত্যুতে উত্তাল উপত্যকা
কার্গিল যুদ্ধের সময়টা মনে আছে তো আমাদের? দুর্গম সীমান্ত পেরিয়ে কিছু অজানা লোক এই দেশে ঢুকে পড়ছে, এই তথ্যটা সেনা চৌকিতে পৌঁছেছিল এক ভেড়াপালকের মাধ্যমে। ওই ভেড়াপালক, তাঁর প্রতিবেশী, তাঁর রাজ্যের সব মানুষের আস্থা আমরা ধরে রাখতে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করছি কি?
আরও পড়ুন: রাজ্যপালের শাসনে আস্থা হারাচ্ছে কাশ্মীর? বাড়তে থাকা হিংসায় ‘জটিল’ হচ্ছে পরিস্থিতি