প্রচারের পরেও বিমুখ সহযোগিতা। গণপিটুনির স্বভাব বদলাচ্ছে না। প্রতীকী চিত্র।
এ বার কিন্তু প্রশাসনিক কর্তাদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ তৈরি হচ্ছে। এক দিকে শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব বিশ্বাসযোগ্য ভঙ্গিতে দাবি করেন, গুজবের গর্ভগৃহে আঘাত হয়েছে। আবার কিয়ৎ পরেই শোনা যায়, সন্ত্রাসের কারবারিরা অক্ষত। এই বিভ্রান্তির মাঝে কলকাতাও যেন আর সজাগ থাকতে পারছে না। এত প্রচার, এত সতর্কবার্তা, এত হুঁশিয়ারির মাঝেও আবার কলকাতার বুকে দাপট দেখাচ্ছে গুজব।
‘ছেলেধরা’ গুজবে আবার গণপ্রহারের ঘটনা ঘটল। উত্তর কলকাতার যে অংশে এই ঘটনা ঘটল, তা থানার প্রায় দোরগোড়ায়। বড়তলা থানা থেকে মাত্র শ’দেড়েক মিটার দূরত্বে রবিবার রাতে ঘটেছে অনাকাঙ্খিত ঘটনাটা। এলাকায় অপরিচিত এক যুবক, কথাবার্তায় অসঙ্গতি রয়েছে বলে মনে হতেই শুরু হল গণপ্রহার। অঘটন ঘটে যাওয়ার আগেই পুলিশ পৌঁছেছিল বলে মুখরক্ষা হয়েছে, গুজবের জেরে প্রাণহানির সংখ্যা আর বাড়েনি। কিন্তু গুজবের দাপট কেন এখনও নিয়ন্ত্রণে আসছে না, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কর্তৃপক্ষকে কিন্তু জাবাবদিহি করতেই হবে।
গুজবের বিরুদ্ধে এ রাজ্যের প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তর থেকে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে সতর্ক করেছেন নাগরিকদের, সজাগ থাকতে বলেছেন পুলিশ-প্রশাসনকে। পুলিশের তরফ থেকে পাড়ায় পাড়ায় মাইকিং করে গুজবে কান না দেওয়ার বার্তা দেওয়া হয়েছে। সংবাদমাধ্যম এবং প্রচারমাধ্যমে বার বার বিজ্ঞাপন দিয়ে রাজ্যবাসীকে সতর্ক করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও থানা থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে গণপ্রহারের ঘটনা ঘটে কী ভাবে?
সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
‘ছেলেধরা’ গুজব যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ছড়ানো হচ্ছে, এ যে আসলে সামাজিক অস্থিরতা তৈরির বৃহত্তর ষড়যন্ত্র, সে বিষয়ে রাজ্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তর থেকে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। গুজব অবিলম্বে রুখতে সব রকমের পদক্ষেপ করার নির্দেশও জারি হয়েছে। তা সত্ত্বেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসছে না কেন? প্রশাসনের কোন স্তরে গাফিলতিটা হচ্ছে? মনে রাখা দরকার, অস্থির সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি আমরা। সংবেদনশীল বিষয়গুলোর মোকাবিলা অত্যন্ত সতর্ক ভাবে করতে না পারলে বিপর্যয় ঘনানোর আশঙ্কা থাকে। তাই পুলিশ-প্রশাসনকে অবিলম্বে চিহ্নিত করতে হবে গাফিলতিটা ঠিক কোথায় ঘটছে। গুজবের আগুনটাকে আর একটুও ছড়াতে দেওয়া চলবে না।
আরও পড়ুন: কলকাতায় থানার নাকের ডগায় ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি!