দিল্লি ডায়েরি

মন্ত্রীদের লম্বা ভাষণ পছন্দ করেন না নরেন্দ্র মোদী। মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনেক মন্ত্রীই খোদ প্রধানমন্ত্রীর সামনেও লম্বা বক্তৃতা দেন। সম্প্রতি মোদী মন্ত্রীদের বলেছেন, অনুষ্ঠানে সুদীর্ঘ ভাষণ দিয়ে লোককে ক্লান্ত করবেন না।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৭ ১২:৩০
Share:

যত কাণ্ড চপ্পলে, বলছেন রাজনাথ

Advertisement

এই বয়সে পায়ের গোড়ালি ভাঙা! রাজনাথ সিংহ সকালে দিল্লির বাংলোর সবুজ লনে হাঁটছিলেন। পরনে ছিল ধুতি আর চপ্পল। খেয়ালই করেননি, সামনে গর্ত। গর্তের মধ্যে পা ঢুকে পড়ে গেলেন। এক্স-রে করে জানা গেল, গোড়ালি ভেঙেছে। তিন মাস বাড়িতে বিশ্রাম। সামনে বিস্তর কাজ, নিতান্ত অনিচ্ছাসত্ত্বেও এখন বিশ্রামে। যে দিন দেশের দলিত রাষ্ট্রপতি প্রার্থী ঠিক হল, সে দিনও দলের সংসদীয় বোর্ডের বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন। বিদেশ দূর অস্ত্, দিল্লির বাইরে অন্য কোনও রাজ্যেও এখন তাঁর যাওয়া নিষেধ। রাজনাথ বলছেন, যত কাণ্ড চপ্পলে। এমনিতে ধুতির সঙ্গে পায়ে স্নিকার পরেন, সেটা ঠিক মানানসই জুড়ি না হলেও। রোজ কেউ স্নিকার পরিয়ে দেয়, সে দিনই কেউ ছিল না, তাই বাড়ির হাওয়াই চটি পরেই হাঁটতে বেরিয়ে যান। তার পরেই ওই কাণ্ড! রাজনাথ বলছেন, দুর্ঘটনা হওয়াটাই স্বাভাবিক, এক দিদি ছাড়া আর কেউ হাওয়াই চটি পরে ওই স্পিডে হাঁটতে পারে নাকি! উনি তো টাইগার হিল, মহাকাল মন্দিরেও চটি পরেই চলে যান!

Advertisement

কথা কম, কাজ বেশি

মন্ত্রীদের লম্বা ভাষণ পছন্দ করেন না নরেন্দ্র মোদী। মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনেক মন্ত্রীই খোদ প্রধানমন্ত্রীর সামনেও লম্বা বক্তৃতা দেন। সম্প্রতি মোদী মন্ত্রীদের বলেছেন, অনুষ্ঠানে সুদীর্ঘ ভাষণ দিয়ে লোককে ক্লান্ত করবেন না। আগে বুঝুন, শ্রোতা আপনার বক্তৃতা শুনতে চাইছেন কি? বহু মন্ত্রী আবার নিজেদের নির্বাচনকেন্দ্রে ঘন ঘন বিয়ের নেমন্তন্ন রক্ষা করতে যান জনসংযোগের জন্য। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ, বিয়েবাড়ি না গিয়ে এলাকার মানুষের জন্য কাজ করুন। সেটার দরকার বেশি।

বই যখন রক্তে

‘বেস্ট সেলার’ কিছু কম লেখেননি সঞ্জীব সান্যাল। অরুণ জেটলির নতুন মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কলকাতার স্বাধীনতা সংগ্রামী পরিবারের সন্তান, অনেকের জানা। তবে অনেকেই জানেন না, সঞ্জীবের ঠাকুরদার বাবা নলিনাক্ষ সান্যাল ভারতীয় রেলের ইতিহাস নিয়ে বই লিখেছেন সেই ১৯৩০-এই। লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্স-এ সেটাই ছিল তাঁর পিএইচডি-র গবেষণাপত্র। এর কিছুটা আবার লিখেছিলেন লন্ডনের জেলে বসে। হাইড পার্কে ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে বক্তৃতা দিতে গিয়ে জেলে যেতে হয়েছিল নলিনাক্ষকে। আশ্চর্যের কথা, নয় দশক পরও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত সেই বই পাওয়া যায়। শুধু দিল্লিতে রেলের মিউজিয়ামে নয়, অনলাইনেও!

ভারসাম্যের রাজনীতি

একেই বোধ হয় বলে, রথ দেখা আর কলা বেচা। ডিএমকে প্রধান এম কে করুণানিধির জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ডেরেক ও’ব্রায়ানকে পাঠিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু চেন্নাই গিয়ে শুধু ডিএমকে নয়, ডেরেক চলে গেলেন এআইএডিএমকে শিবিরেও। ডেরেক যদিও বলছেন, এতে কোনও রাজনীতি নেই। নেহাতই সৌজন্য সাক্ষাৎ। তবু গুঞ্জন, মমতার দূত অনুমতি ছাড়াই কি এ কাজ করলেন? মমতা-ভক্ত ডেরেক বিনা অনুমতিতে কিছু করেন, এমন বদনাম নেই। তা ছাড়া, জয়ললিতার সঙ্গে মমতার সম্পর্কও অতীতে ভাল ছিল। তবে কি এখানেও ভারসাম্যের রাজনীতি?

নতুন দায়িত্বে রম্যা

দায়ভার: নতুন দায়িত্ব পেলেন রম্যা

রাহুল গাঁধীকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপি বহু দিন থেকেই আক্রমণাত্মক। কখনও ব্যঙ্গ। কখনও ভুয়ো জ্যোতিষীর ভবিষ্যদ্বাণী, রাহুল প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না কখনও। কখনও রাহুলের বিদেশ ভ্রমণ নিয়ে কটাক্ষ। কংগ্রেসের সোশ্যাল মিডিয়া এত দিন সে ভাবে সক্রিয় ছিল না। কিন্তু এ বার দলের সিদ্ধান্ত, বিজেপির ‘হেট ক্যাম্পেন’-এর মোকাবিলা করতে হবে নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়া-অস্তিত্ব দিয়ে। রাহুল এ কাজের দায়িত্ব দিয়েছেন দক্ষিণী অভিনেত্রী রম্যাকে। রম্যা সম্প্রতি কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন, হয়েছেন কংগ্রেসের মুখপাত্রও। কন্নড় ছবির অভিনেত্রী রম্যা ৩৪ বছর বয়সেই লোকসভা সদস্য। বেঙ্গালুরুর শিল্পপতির কন্যার নেশাই হল সোশ্যাল মিডিয়া। এত দিন এ দায়িত্ব ছিল হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিংহ হুদার পুত্র দীপেন্দ্রের, কিন্তু এই জাঠ নেতা সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে নিরুৎসাহ। তিনি ব্যস্ত ছিলেন হরিয়ানার রাজনীতি নিয়ে। এই কারণেই তাঁকে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হল রম্যাকেই।

কাশ্মীরে কে

কাশ্মীরের রাজ্যপাল তবে কে হবেন? এন এন ভোরা-কে সরানো প্রয়োজন, এমনটাই মত জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের। ভোরা বাজপেয়ী জমানার স্বরাষ্ট্রসচিব। কিন্তু এখন তাঁর অনেক বয়স। কাশ্মীরের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে এখন প্রয়োজন সক্রিয় রাজ্যপাল। অদূর ভবিষ্যতে কাশ্মীরে রাজ্যপালের শাসন অনিবার্য, এমনও মত অনেকের। ফারুক আবদুল্লা চান, প্রাক্তন ‘র’ প্রধান অমরজিৎ সিংহ দুলাত কাশ্মীরের রাজ্যপাল হোন। দুলাত দীর্ঘ দিন কাশ্মীরে ছিলেন, কাশ্মীর বোঝেন। সমস্যা হল, দুলাতকে পছন্দ নয় ডোভালের।

জয়ন্ত ঘোষাল, অগ্নি রায়,
অনমিত্র সেনগুপ্ত, দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রেমাংশু চৌধুরী

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement