কথা ছিল, প্রথমে দেখা করবেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান। তার পরে প্রদীপ ভট্টাচার্য। দশ নম্বর জনপথে কংগ্রেস সভাপতি সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে দুই নেতার সাক্ষাৎকারের সময় চেয়ে রাখা হয়েছিল ঢের আগেই। কিন্তু মান্নান সনিয়ার কাছে পৌঁছানোর পরই বাইরে থেকে জরুরি বার্তা পাঠালেন প্রদীপ। তাঁর তাড়া আছে, আগেই দেখা করতে চান নেত্রীর সঙ্গে। সনিয়া প্রথমে বলেছিলেন, প্রদীপবাবু যে হেতু দিল্লিতে অনেকটা সময় থাকেন, তাই সে দিন সম্ভব না হলে পরেই না-হয় কথা বলে নেবেন তাঁর সঙ্গে। কিন্তু মান্নান সনিয়াকে অনুরোধ করেন, ‘‘ম্যাডাম, দয়া করে এমনটা করবেন না। আপনি আগে ওঁর সঙ্গে কথা সেরে নিন। আমিই বরং অপেক্ষা করছি। তা না হলে পরে আমার সমস্যা হবে!’’ সনিয়া মান্নানের কথা শুনে হেসে আগেই ডেকে নেন প্রদীপকে। রাজধানীর পর্যবেক্ষকরা শুনে সহাস্যে বলছেন, এই না হলে বাংলা কংগ্রেসের ঐক্য!
সাক্ষাতে প্রদীপ ভট্টাচার্য ও আবদুল মা্ন্নান
ভবন-ভাবনা
সরকারের বিভিন্ন বিল পাশ করা নিয়ে সাংসদদের ভোটাভুটির ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক। কিন্তু ভোটের বিষয় যদি হয় খোদ সংসদই? এমনই ঘটনার সাক্ষী হতে চলেছে রাজধানী। বিরানব্বই বছরের পুরনো সংসদ ভবনটি সংস্কারের চিন্তাভাবনা করছে কেন্দ্র। সাংসদদের কাছে চিঠি লিখে জানতে চাওয়া হয়েছে, তাঁরা কী চান? নতুন ভবন, না কি বর্তমান ভবনটিরই সংস্কার? অধিকাংশ সাংসদের রায় যে দিকে যাবে, সেই সিদ্ধান্তকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। সাংসদদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, বর্তমান ভবনে কোথায় খামতি রয়েছে তা বলুন তাঁরা। এক সপ্তাহের মধ্যে ইমেল করে প্রস্তাব জানাতে বলা হয়েছে। এডুইন লুটিয়েন্স ও হার্বার্ট বেকার-এর তৈরি এই ভবনের পরতে পরতে জড়িয়ে রয়েছে ইতিহাস। একুশ শতকে এসে যার গায়ে বয়সের ছাপ সুস্পষ্ট। কিন্তু বড় সমস্যা হল, লোকসভা বা রাজ্যসভার আকার বৃদ্ধি সম্ভব নয়। ভবিষ্যতে, ২০২৬ সালের ডিলিমিটেশনের পরে লোকসভা সদস্যদের সংখ্যা বাড়তে পারে। আবার মন্ত্রী ও রাজনৈতিক দলগুলির জন্যও ঘর কম পড়ে যাচ্ছে। সমাধানের রাস্তা তাই এই ভবনের বাসিন্দা, অর্থাৎ সাংসদদের হাতেই তুলে দেওয়া হয়েছে।
তামিলে মন
নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের মন এখন পড়ে আছে দক্ষিণে। চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং-এর সঙ্গে ঘরোয়া সংলাপের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী করা গিয়েছে মমল্লপুরমের প্রাচীন কীর্তিগুলির। সবাইকে চমকে দিয়ে মোদী শি-কে স্বাগত জানিয়েছেন ভেস্তি পরে। দাক্ষিণাত্য জয়ের এই রাজনৈতিক অভিযানের অংশ হিসেবে এ বার তামিল ভাষাটাও রপ্ত করতে চাইছেন বিজেপির শীর্ষ নেতারা। সম্প্রতি অমিত শাহ তামিলনাড়ুর নেতাদের বলেছেন, তিনি এক বার তামিল শেখা শুরু করেছিলেন। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে বেশি দূর এগোতে পারেননি। সেই আক্ষেপ আর রাখতে চান না। আবার নতুন করে তামিল শেখার প্রস্তুতি নিচ্ছেন অমিত। অদূর ভবিষ্যতে তামিলনাড়ুতে গিয়ে তামিল ভাষাতেই কথা বলার ইচ্ছা তাঁর। প্রধানমন্ত্রীও যখনই কোনও রাজ্যে যান, চেষ্টা করেন অন্তত কিছু শব্দ সেই রাজ্যের ভাষায় বলতে। গুঞ্জন, এ বার নাকি ভেস্তির পর তামিল ভাষার দিকেও নজর থাকবে তাঁর।
শৌখিন
কংগ্রেসের লোকসভার নেতা হওয়ার পর সাউথ অ্যাভিনিউয়ে অধীর চৌধুরীর জন্য যে সুদৃশ্য বাংলোটি ধার্য হয়েছে, তার উল্টো দিকেই তৃণমূলের দিল্লির সদর দফতর। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজধানীতে এলে থাকেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওই ঠিকানাতেই। কিন্তু এহ বাহ্য। নিজের বাংলো ঢেলে সাজাচ্ছেন অধীর। মহারাষ্ট্রের এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ঘটা করেই সেন্ট্রাল এসি ব্যবস্থার বন্দোবস্ত করেছিলেন এই বিরাট বাড়িতে। সে সব ভেঙে ফেলা হয়েছে। এ দিকে হুমায়ুন রোডে অধীরের বর্তমান বাসভবনটি খালি হবে খবর ছড়িয়ে যাওয়ার পর, সাংসদদের লাইন পড়ছে সরেজমিনে তা দেখে নেওয়ার। কারণ সেটিকেও বিলক্ষণ সুন্দর সাজিয়েছিলেন শৌখিন অধীর।
‘সংস্কারক’: অধীর চৌধুরী