Dr. Goutam Sarkar

৬৫-র উপরে বেরনো বারণ, বেলা শেষে কী বলছেন ওঁরা

মানুষের যদি এতে ভাল হয় তা হলে এই নির্দেশিকা আমাদের মানতেই হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২০ ২২:০৮
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়: হাজার হাজার লোক আছেন ৬৫ বছরের উপর। এখন এই অবস্থায় যে ভাবে যতটুকু করতে পারব ততটুকুই করব। তার বেশি হলে পারব না। এ ভাবেসম্ভবপর নয় আমাদের দেশে, আমাদের সিস্টেমে। কী ভাবে হবে? তবে জিনিসটা তো ভয়ঙ্কর। মহামারীর রূপ নিয়েছে করোনা। সেখানে কিছু তো করার চেষ্টা করতে হবে। আমাদের মতো দেশে এর থেকে বেশি কিছু করা সম্ভব নয়। আমাদের মতো দেশেলোকে বাসে উঠবে বা যে কোনও গণ পরিবহণে, সেখানে কি যথাযথ ভাবে ডিজইনফেক্ট করা যাবে? যাবে না। বরং, যা নিয়মকানুন করার চেষ্টাহচ্ছে, তা করাই ভাল। তা না করে হাত গুটিয়ে বসে থাকলে কি হবে? ওই ধরনের নির্দেশিকা এলে তা মানতে হবে।

Advertisement

মাধবী মুখোপাধ্যায়: সবই তো বন্ধ হয়ে আছে। নানা প্রোগ্রাম বন্ধ। আমিও তো এই ৬৫-র উপরের দলে। এই যে সব বন্ধ থাকার ফলে আমরা যারা দিন আনি দিন খাই আমাদের চলবে কী করে? আমরা বয়স্ক হলেও আমাদের তো কোনও পেনশন নেই। আচ্ছা, ঘর থেকে না হয় না বেরোলাম, কাজ না হয় না করলাম, তা হলে বিকল্প কী? ৬৫-র উপরের মানুষ তো প্রচুর। তবে একটা কথা মানতেই হবে, সবার উপরে মানুষ সত্য। মানুষের যদি এতে ভাল হয় তা হলে এই নির্দেশিকা আমাদের মানতেই হবে। আমি মানতে বাধ্য। মানবিকতা মেরে ফেলে তো আমি বেরতে পারব না!

শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়: মুশকিল হল, আমি তো হাঁটাহাঁটি করি। না বেরলে তো হাঁটাহাঁটি হবে না। তবে এটা একটা ভাল নির্দেশিকা। আমার শুনতে খারাপ লাগছে না। বয়স্কদের প্রতি রাষ্ট্র যথেষ্ট সচেতনতা দেখাচ্ছে, এটা তো ভাল। এবং এটা সত্যিই যে, অনেকে অসাবধানী আছেন। তাঁরা বাইরে যান এবং অনেক লোকের সঙ্গে মিশে ফেলেন। অজান্তেই তো সংক্রমণ হয়ে যায়। ফলে একটা দিক থেকে এটা ভাল নির্দেশিকা। তবে ৬৫ বছরের উপরে এমন অনেক মানুষ আছেন যাঁরা তৃণমূল স্তরের মানুষ, প্রান্তিক মানুষ, যাঁদের খেটে খেতে হয়, তাঁরা কী করবেন? তাঁদের বাধ্য হয়েই বেরতে হবে। রুজি-রোজগারের ব্যাপার আছে। আবার অনেকে স্বামী-স্ত্রী একা থাকেন, তাঁরা না বেরলে খাবেন কী? তা হলে রাষ্ট্র তাঁদের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দিক। তা হলে এই নির্দেশিকার একটা মানে হয়। তা না হলে তো মুশকিল। বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে। বিদেশে যেমন প্রতিবেশীরা খাবার দিচ্ছে করোনা-আক্রান্তদের, রাষ্ট্রের পক্ষে তো সত্যিই সম্ভব নয়। কিন্তু আমি এই নির্দেশিকাকে স্বাগত জানাচ্ছি। কিন্তু আমাদের মতো দেশে এটা প্রয়োগ করা হবে কী করে?

Advertisement

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়:আমি এই নির্দেশিকা মানব না। কারণ বয়স নয়, ফিটনেস দেখতে হবে। ২২ বছর বয়সী ছেলেকেও দেখাতে পারি যে কিনা ধুঁকছে। আবার ৭৫ বছরের লোকও আছেন যিনি পাহাড়ে যাচ্ছেন। আসল হল ফিটনেস। বয়স নয়। তাই আমাকে ঘরে বসে থাকতে বললে আমি তা মানতে পারব না।

গৌতম সরকার:সতর্কতা অবশ্যই আমি অবলম্বন করব। তবে আমি ঘরবন্দি থাকব না। আমার এমার্জেন্সি কাজ আমি করবই। কারওর শরীর খারাপ শুনলে কি আমি ঘরে বসে থাকব? প্রতি সকালে আমি মর্নিংওয়াক, যোগব্যায়াম, ওয়ার্ম আপ করি। এটা আমার অভ্যাস। এই অভ্যাস করেই তো আমি সুস্থ রয়েছি। সেই অভ্যাস বদলাবো কেন?

জয়দীপ মুখোপাধ্যায়:সরকারের তরফ থেকে যখন নোটিফিকেশন দেওয়া হয়েছে, তখন তা মেনে চলব। আমার টেনিস অ্যাকাডেমি ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধই রয়েছে। দিন দু’য়েকের মতো বাজারও করা হয়ে গিয়েছে। আমরা সতর্কতা অবলম্বন করছি। হাত ধুচ্ছি। যা বলা হচ্ছে, সবই মেনে চলছি। আমি মর্নিংওয়াক করি না। বাড়িতে আমার জিম রয়েছে। সেখানেই বিকেলে এক্সারসাইজ করব।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement