Anjan Bandyopadhyay

দেশে জরুরি কাজ চলছে, প্রশ্ন তুলে বিরক্ত করবেন না

কোনও মিথ্যাকে বার বার সত্য বলে দাবি করা হলে, এক সময় মনে হয় ওটা বোধ হয় সত্যই। এই প্রচার নীতির জন্ম হয়েছিল নাৎসি সংস্কৃতির হাত ধরে। নাৎসিরা আজ অতীত ঠিকই।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৬ ০১:৪৬
Share:

আসমুদ্রহিমাচল নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব সুনিশ্চিত যে কাজগুলো জরুরি, তা প্রধানমন্ত্রী খুব দ্রুত সেরে ফেলছেন।

কোনও মিথ্যাকে বার বার সত্য বলে দাবি করা হলে, এক সময় মনে হয় ওটা বোধ হয় সত্যই। এই প্রচার নীতির জন্ম হয়েছিল নাৎসি সংস্কৃতির হাত ধরে। নাৎসিরা আজ অতীত ঠিকই। কিন্তু, এ বিশ্ব হিটলারের শিক্ষা সর্বৈব ভুলে যেতে পারেনি সম্ভবত। তাই কালোটাকে আজকাল পেশ করা হয় অসত্য প্রচারের আলোয় মুড়ে।

Advertisement

এক দিকে প্রধানমন্ত্রী বলছেন, ভারতের প্রত্যেকটি প্রজন্মকে জরুরি অবস্থার কালো দিনগুলির বিষয়ে অবহিত করতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে যে সুদূর ভবিষ্যতেও কোনও শাসক যেন জরুরি অবস্থা জারির কথা ভাবনাতেও না আনেন। আলোয় আলো হয়ে উপস্থাপিত হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর সেই মৌখিক বয়ান। অন্য দিকে, সেই সময়কালেই সংবাদমাধ্যমের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হচ্ছে, টেলিভিশন চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি হচ্ছে।

সংবাদমাধ্যমের উপর এমন প্রকট, প্রকাশ্য খবরদারির স্মৃতি কিন্তু সেই জরুরি অবস্থার দিনলিপিতেই শেষ বার খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। তার পর থেকে এ যাবৎ সংবাদমাধ্যমের উপর শাসকের এমন সদম্ভ প্রহারের দৃষ্টান্ত আর একটিও নেই। অথচ প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে মনে হয়, শাসকের এত উদার, সদ্ভাবনাময়, দরদী কণ্ঠস্বরের স্মৃতি অতীতের কোনও দিনপঞ্জিতেই লিপিবদ্ধ নেই।

Advertisement

আসলে আমাদের বর্তমান শাসকরা দেশসেবার সুযোগ পাওয়া, বার বার পাওয়া এবং তা ধরে রাখাকে খুব জরুরি মনে করছেন। তাই জরুরি কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। কিছু জরুরি নির্দেশ জারি করতে হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞা জারি করাও কখনও কখনও জরুরি হয়ে পড়ছে খুব। প্রধানমন্ত্রীকে যে কোনও বিষয়ে প্রশ্ন না করাটাই যে এই ভারতে জরুরি শিক্ষা, সে কথাও মন্ত্রীরা ফলাও করে মনে করিয়ে দিচ্ছেন মাঝেমধ্যে। সরকার তথা প্রধানমন্ত্রীর নিন্দুককুলের বিরুদ্ধে জরুরি ভিত্তিতে পুলিশ-প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। আসমুদ্রহিমাচল নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব সুনিশ্চিত যে কাজগুলো জরুরি, তা প্রধানমন্ত্রী খুব দ্রুত সেরে ফেলছেন।

মনে রাখতে হবে, জরুরি অবস্থা ঘোষিত হওয়া কিন্তু মোটেই কাম্য নয়। বরং বেশি ঢাক-ঢোল না পিটিয়ে জরুরি কাজগুলো সেরে ফেলাটাই লক্ষ্য হওয়া উচিত। প্রধানমন্ত্রী তেমনটাই করে দেখাচ্ছেন। আমরা সবাই বুঝতে পারছি তো?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement