রবীন্দ্রনাথ ও ফ্রান্স: প্রাচ্য ও
প্রতীচ্যের এক বিস্মৃত সংলাপ
সৈয়দ কওসর জামাল
৪৫০.০০
আজকাল
ঠাকুরবাড়িতে দীর্ঘ দিন ধরেই ফরাসি ভাষা-সাহিত্য নিয়ে আগ্রহের পরিবেশ ছিল। সেই পরিবেশেই বেড়ে ওঠা রবীন্দ্রনাথও এ নিয়ে আগ্রহী হয়ে ওঠেন সময়ের সঙ্গে। কিন্তু এই আগ্রহ ও যোগাযোগ ঠিক কোন খাতে বয়েছিল, ষোলোটি অধ্যায়ে তারই সন্ধান এই বইয়ে। স্বভাবতই এসেছে ভারত ও ফ্রান্সের সংযোগের সূত্রপাতের উৎস-প্রসঙ্গও। রবীন্দ্রনাথের ভিক্তর উগোর কবিতার অনুবাদ, ফ্রান্স যাত্রা, প্যারিসে ছবির প্রদর্শনী, ১৯২০-তে শান্তিনিকেতনে ফরাসি ভাষাশিক্ষার ক্লাস শুরু, এমনই অনেক বিষয়ের তথ্যনিষ্ঠ সন্নিবেশ করেছেন লেখক। শুধু তথ্য-ভারাক্রান্ত নয়, ‘প্রাচ্য’-প্রতিনিধি রবীন্দ্রনাথ এবং ‘প্রতীচ্য’-প্রতিনিধি ফরাসি দেশের ভাবুক ও সাধারণ-সম্প্রদায়ের মধ্যে যে বৌদ্ধিক সংযোগ তৈরি হয়েছিল, সেই সূত্রে পারস্পরিক চিন্তাজগতে কী ধরনের প্রভাব পড়েছিল, সেই এষণার সফল প্রয়াস করেছেন লেখক। সেই ধারাতেই আসে আলব্যের কান, সিলভ্যাঁ লেভি, আঁদ্রে জিদ, রম্যাঁ রলাঁ, অঁরি বের্গসন-সহ বিশিষ্টজনের প্রসঙ্গ। গীতাঞ্জলি-র ফরাসি অনুবাদ প্রকাশে স্যাঁ-জন পের্স’এর সক্রিয় ভূমিকা, বের্গসন-রবীন্দ্রনাথ সাক্ষাতের প্রসঙ্গগুলি বিশেষ প্রাপ্তি; আগ্রহ বাড়ায় ‘ফরাসি অনুবাদে রবীন্দ্রনাথ’ অধ্যায়টিও। ১৯১৩-র এপ্রিলে লা রভ্যু পত্রিকায় গীতাঞ্জলি-র পনেরোটি কবিতার অনুবাদ প্রকাশ করেছিলেন জঁ এশ দ্য রজেঁ নামে এক সাংবাদিক। রয়েছে সে প্রসঙ্গও। রবীন্দ্রনাথ ও বিভিন্ন ফরাসি কৃতী মানুষের পত্রালাপও আলোচিত।
উদয়ন পণ্ডিতের দেশ ও অন্যান্য সত্যজিৎ
অংশুমান ভৌমিক
২৭৫.০০
মৌহারি
হীরক রাজার দেশে-র হীরকরাজের রাজসভার দৃশ্য: চাষি, মজুর আর গায়ক এসেছেন রাজার সঙ্গে দেখা করতে, শুনে মোসাহেব বলে: “রুহিতন, হরতন, ইস্কাপন!” এ নিয়ে অংশুমান তাঁর বইয়ের নাম-প্রবন্ধটিতে লিখছেন: “‘রুহিতন হরতন ইস্কাপন’-এর নাম কানে আসতেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের তাসের দেশ-এর স্মৃতি উথলে উঠছে, এক স্বৈরাচারী রাজা আর সেই রাজ্যের দমবন্ধ-করা ভোল পাল্টে দিতে আসা রাজপুত্র-সওদাগরপুত্রকে মনে পড়ছে। চাইলে তাসের দেশ-এর সম্প্রসারণ হিসেবেও আমরা হীরক রাজার দেশকে দেখতে পারি, এই সূত্র বাতলে দিচ্ছেন সত্যজিৎ। এই ছবিতে রুহিতন হরতন ইস্কাপন কারা? একজন চাষা, একজন খনির মজুর, একজন গান গায়। এঁদের সঙ্গে হীরক রাজার একটা অস্বস্তিকর সম্পর্ক আছে।” সত্যজিৎকে নিয়ে বহুমাত্রিক চর্চার বিভিন্ন সূত্র খতিয়ে দেখেছেন লেখক, বিবিধ প্রবন্ধে। সত্যজিৎ-সৃষ্টির সমকালীন সাংস্কৃতিক বাতাবরণ ও ঐতিহাসিকতার পরিপ্রেক্ষিতকে মিলিয়ে না দেখলে তাঁকে চেনায় কোথাও একটা ফাঁক থেকে যায়। সেই ফাঁক পূরণের তাগিদেই যেন কলম ধরেছেন লেখক, সত্যজিতের তৈরি চলচ্চিত্র ও তাঁর লেখাজোখার উপর ভর করেই অন্যতর, নিবিড় আবিষ্কারে ব্রতী হয়েছেন।
কয়েক ঘণ্টার আপনজন
স্বস্তিনাথ শাস্ত্রী
২৫০.০০
বালার্ক
রুপোলি পর্দায় বা নাটমঞ্চে যাঁদের আমরা দেখি অভিনয় করতে, বাস্তবে তাঁরা কেমন, বিখ্যাত হওয়ার আগে বা পরেও তাঁদেরও তো একটা সাধারণ জীবন আছে, কেমন সেটা... এ সব জানার কৌতূহল সকলেরই। সাক্ষাৎকারে সে কৌতূহলই নিরসন করার চেষ্টা এই বইয়ে। এরই পাশে কোনও অভিনেতা কোন শিল্পবোধের উপর দাঁড়িয়ে তাঁর অভিনয়ে নান্দনিকতার নিখুঁত স্পর্শ নিয়ে আসতে চান, তার হদিসও আছে। আবার থিয়েটারের অর্থনীতি কী রকম হওয়া উচিত, সে প্রশ্নও করেছেন লেখক, সাক্ষাৎকারে। রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, বিভাস চক্রবর্তী, নাসিরুদ্দিন শাহ, রজিত কপূর, সৌরভ শুক্ল, রাজপাল যাদব, পরেশ রাওয়াল, আদিল হুসেন, শরমন জোশি... কে নেই সাক্ষাৎকারদাতার মধ্যে! আছেন কৌশিক সেন, ব্রাত্য বসু, উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়ও। ব্রাত্যর মতে, বাংলা থিয়েটারে “নানা ধরনের কাজ হচ্ছে। পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে। নতুন নতুন স্পেসে থিয়েটার হচ্ছে। অনেক নতুন প্রতিভা উঠে এসেছে।” পাশাপাশি পরেশ রাওয়াল জানিয়েছেন, “যখনই কলকাতায় আসি আমার মনে হয় তীর্থক্ষেত্রে এলাম। কলকাতা হল ‘থিয়েটার ক্যাপিটাল অব ইন্ডিয়া’। আধুনিক থিয়েটারের জন্ম হয়েছে এখানে। এখনও দেশের সেরা বুদ্ধিদীপ্ত থিয়েটার, সিনেমা তৈরি হয় এই শহরে।... আমি উৎপলদার নাটক দেখেছি। শম্ভু মিত্রকে আমি ‘ভারতীয় থিয়েটারের শঙ্করাচার্য’ বলে মনে করি।”