শেয়ার বাজারে অত্যধিক ওঠা-নামায় রাশ টানতে এ বার ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক সংস্থার (এনবিএফসি) ক্ষেত্রে শেয়ার বন্ধক রেখে ঋণ দেওয়ায় নির্দিষ্ট নিয়ম চালু করল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। একই সঙ্গে, শীর্ষ ব্যাঙ্কের ডেপুটি গভর্নর আর গাঁধী জানালেন, সাধারণ লগ্নিকারীদের কাছ থেকে বেআইনি ভাবে আমানত সংগ্রহ রুখতে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধনের জন্য কেন্দ্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করছেন তাঁরা।
বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, এ বার থেকে শেয়ার বন্ধক রেখে ধার দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মানতে হবে এনবিএফসিগুলিকে। যেমন, বন্ধক হিসেবে জমা রাখা শেয়ারের মোট বাজার-মূল্যের অর্ধেকের বেশি টাকা ধার দেওয়া যাবে না। অর্থাৎ, ঋণ দেওয়া যাবে শেয়ারের মোট মূল্যের ৫০% পর্যন্ত।
শুধু তা-ই নয়। পাঁচ লক্ষ টাকার বেশি ধার দিতে গেলে জমা রাখা যাবে শুধুমাত্র ‘গ্রুপ-ওয়ান সিকিউরিটি’ এক সঙ্গে বড় সংখ্যায় লেনদেন হলেও যে-সমস্ত শেয়ারের দর চট করে খুব বেশি বাড়ে বা কমে না। তা ছাড়া, যে-সমস্ত এনবিএফসির সম্পদের পরিমাণ ১০০ কোটি টাকা বা তার বেশি, তাদের অনলাইনে স্টক এক্সচেঞ্জকে জানাতে হবে শেয়ার বন্ধক রেখে ধার দেওয়ার পুরো খতিয়ান।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শেয়ার বন্ধক রেখে ধার নেওয়ার পরে তা সময়ে মেটাতে না-পারলে অনেক সময়েই এক সঙ্গে ওই সমস্ত শেয়ার বিক্রি করে সংশ্লিষ্ট এনবিএফসি। ফলে রাতারাতি উল্লেখযোগ্য হারে বদলে যায় তার দর। যার প্রভাব পড়ে বাজারে। এই বিষয়টি আটকাতেই শীর্ষ ব্যাঙ্কের ওই পদক্ষেপ।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এই বিজ্ঞপ্তি জারির দিনেই আবার তার ডেপুটি গভর্নর জানিয়েছেন, “এমন অনেক প্রতিষ্ঠান আছে, যারা আর্থিক সংস্থা হিসেবে নথিভুক্ত। কিন্তু শীর্ষ ব্যাঙ্ক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়। অনেক সংস্থা আবার সাধারণ লগ্নিকারীদের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করে বেআইনি ভাবে।” এই বিষয়গুলি শোধরাতে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধনের জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কেন্দ্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
এ দিকে, ২০১৩-’১৪ আর্থিক বছরে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের উদ্বৃত্ত ১৪.৭৫% কমে হয়েছে ৫২,৬৭৯ কোটি টাকা। তবে এই পুরো অঙ্কই কেন্দ্রের হাতে তুলে দিয়েছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। এখনও পর্যন্ত যা সর্বোচ্চ।