আর্থিক বৃদ্ধি আশানুরূপ না-হওয়া, শিল্পোৎপাদন তলানিতে নেমে আসা, আসন্ন লোকসভা ভোটের পর স্থিতিশীল সরকার ক্ষমতায় আসা নিয়ে অনিশ্চয়তা এই পরিস্থিতির মধ্যেও অর্থনীতিতে কিছুটা রুপোলি রেখা। চলতি খাতে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন ঘাটতি নেমে এসেছে জাতীয় আয়ের মাত্র ০.৯ শতাংশে।
বুধবার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুসারে, চলতি ২০১৩-’১৪ অর্থবর্ষের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর ত্রৈমাসিকে এই ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪২০ কোটি ডলার (২৬,০৪০ কোটি টাকা), যা গত আট বছরে সবচেয়ে কম। কেন্দ্র মূলত সোনা আমদানিতে রাশ টানার ফলেই এটা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। আলোচ্য ত্রৈমাসিকে সোনা আমদানি নেমে এসেছে ৩১০ কোটি ডলারে, আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ১৭৮০ কোটি ডলারে। এ ছাড়া সাধারণ ভাবেও পণ্য রফতানি ৭.৫% বেড়ে হয়েছে ৭৯৮০ কোটি ডলার। আমদানি ১৪.৮% কমে হয়েছে ১১,২৯০ কোটি ডলার। ফলে বৈদেশিক বাণিজ্যে ঘাটতিও কমেছে, যা লেনদেন ঘাটতিকে টেনে নামিয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
চলতি খাতে লেনদেন ঘাটতি বা কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ডেফিসিট হল বৈদেশিক মুদ্রার আয়-ব্যয়ের ফারাক। গত ২০১২-’১৩ অর্থবর্ষের একই সময়ে, অর্থাৎ অক্টোবর-ডিসেম্বরে এই ঘাটতি ছিল জাতীয় আয়ের ৬.৫ শতাংশ বা ৩১৯০ কোটি ডলার (১,৯৭,৭৮০ কোটি টাকা)। চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ৯ মাসে (এপ্রিল-ডিসেম্বরে) লেনদেন ঘাটতি নেমেছে জাতীয় আয়ের (জিডিপি) ২.৩ শতাংশে। ঘাটতির অঙ্ক ৩১১০ কোটি ডলার। ২০১২-র এপ্রিল-ডিসেম্বরে তা ছিল জাতীয় আয়ের ৫.২ শতাংশে বা ৬৯৮০ কোটি ডলারে।
সম্প্রতি অন্তর্বর্তী বাজেটে অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম দাবি করেন, ২০১৩-’১৪ অর্থবর্ষ শেষে লেনদেন ঘাটতি নামবে ৪৫০০ কোটি ডলারে, যেখানে ২০১২-’১৩ অর্থবর্ষ শেষে তা ৮৮০০ কোটি ডলার ছুঁয়ে নজির গড়েছিল। বিপুল সোনা আমদানিই ছিল তার সবচেয়ে বড় কারণ। প্রসঙ্গত, চিদম্বরম এ দিনই জানান, ভবিষ্যতে সোনা আমদানিতে নিয়ন্ত্রণ থাকবে কি না, লেনদেন ঘাটতির পরিসংখ্যান দেখে তবেই তা স্থির করা হবে।