শিল্প সম্মেলনের মুখেই অভিযোগ, গডকড়ীর সঙ্গে বৈঠক আজ

প্রতিশ্রুতি ভাঙার দায়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে আদালতে আম্মালাইন্স

‘বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট’-এর ঠিক মুখেই রাজ্যের বিরুদ্ধে আদালতে গেল মুম্বইয়ের বন্দর নির্মাতা সংস্থা আম্মালাইন্স। সংস্থার অভিযোগ, পূর্ব মেদিনীপুরে প্রস্তাবিত গভীর সমুদ্র বন্দর গড়ার জন্য বাম আমলে দেওয়া লেটার অব ইনটেন্ট নাকচ করে প্রতিশ্রুতি ভেঙেছে রাজ্য। আইনি পথে হাঁটার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপও দাবি করেছে তারা। বিষয়টি নিয়ে আজ শহরে পরিবহণ ও জাহাজমন্ত্রী নিতিন গডকড়ীর সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা সংস্থার প্রতিনিধিদের। শিল্প সম্মেলন উপলক্ষেই শহরে আসছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ও গডকড়ী।

Advertisement

গার্গী গুহঠাকুরতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:৫৬
Share:

‘বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট’-এর ঠিক মুখেই রাজ্যের বিরুদ্ধে আদালতে গেল মুম্বইয়ের বন্দর নির্মাতা সংস্থা আম্মালাইন্স। সংস্থার অভিযোগ, পূর্ব মেদিনীপুরে প্রস্তাবিত গভীর সমুদ্র বন্দর গড়ার জন্য বাম আমলে দেওয়া লেটার অব ইনটেন্ট নাকচ করে প্রতিশ্রুতি ভেঙেছে রাজ্য। আইনি পথে হাঁটার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপও দাবি করেছে তারা। বিষয়টি নিয়ে আজ শহরে পরিবহণ ও জাহাজমন্ত্রী নিতিন গডকড়ীর সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা সংস্থার প্রতিনিধিদের। শিল্প সম্মেলন উপলক্ষেই শহরে আসছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ও গডকড়ী।

Advertisement

গত নভেম্বরে ওই বন্দর গড়ার লেটার অফ ইনটেন্ট নাকচ করে রাজ্য। অভিযোগ, সময়ে প্রকল্প শুরু করেনি আম্মালাইন্স। সংস্থার পাল্টা অভিযোগ, রাজ্য প্রতিশ্রুতি ভেঙেছে। তাই মিথ্যে অভিযোগে বরাত নাকচ করেছে।

সম্প্রতি একটি বণিকসভার অনুষ্ঠানে কলকাতায় এসেছিলেন গডকড়ী। তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও বৈঠক করেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, সাগরে গভীর সমুদ্র বন্দর গড়তে কেন্দ্রীয় সহায়তা চেয়েছে রাজ্য। উত্তরে গডকড়ীও জানিয়েছেন, রাজনীতি ও উন্নয়নের মধ্যে বিরোধ নেই। ১২০০ কোটি টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন তিনি।

Advertisement

এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে আম্মালাইনস-ও। তাদের দাবি, সাগরের তুলনায় সংস্থার চিহ্নিত জায়গা বিচুনিয়ায় ওই বন্দর তৈরির খরচ কম। সাগরে প্রথম ধাপে লাগবে ১২,০০০ কোটি টাকা। কিন্তু বিচুনিয়ায় ৪,০০০ কোটি। নাব্যতা, রাস্তা-রেল সংযোগ, রক্ষণাবেক্ষণ সবের নিরিখেই বিচুনিয়া এগিয়ে, দাবি সংস্থার। বিষয়টি আজ আলোচনায় ওঠার কথা।

এ দিকে, কেন্দ্রের সঙ্গে জোট বেঁধে যৌথ উদ্যোগে বন্দর তৈরির আগ্রহও প্রকাশ করেছে আম্মালাইন্স। তাদের দাবি, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ মডেলে বন্দর তৈরির জন্য প্রথমে রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু পরে আর্থিক অভাবের কারণে পিছিয়ে যায় নিগম।

৬ হাজার কোটি টাকার গভীর সমুদ্র বন্দর প্রকল্প নিয়ে প্রশাসনিক উদাসীনতা ও অসহযোগিতার অভিযোগ ছিলই। সঙ্গে ছিল জেলা স্তরে তৃণমূলের অন্দর -মহলের কোন্দল। রাস্তা উন্নয়নের তথ্য দেওয়া থেকে জমি জরিপের কাজ, রাজ্য সরকারের থেকে কোনও সাহায্য তারা পায়নি বলে সংস্থার অভিযোগ। এ নিয়ে কথা বলতে শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্রের সঙ্গে দেখা করার আর্জি জানিয়ে একাধিক চিঠি দেয় আম্মালাইনস। কিন্তু উত্তর মেলেনি। ফলে সই হয়নি বিল্ড, ওন, অপারেট, শেয়ার ও ট্রান্সফার (বুস্ট) বা যৌথ উদ্যোগে প্রকল্প তৈরির চুক্তিপত্র।

গত ৩ নভেম্বর রাজ্যের শিল্পমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি দেয় আম্মালাইনস। সেখানে জানায় বন্দর গড়ার কাজে এক পা এগোলে, দু’পা পিছিয়ে পড়ার কথা॥

প্রসঙ্গত, রাজ্যের শিল্পমহলের মতে, এখানে শিল্পায়নে অন্যতম বাধা বন্দর। কলকাতা-হলদিয়া, দুই বন্দরেই নাব্যতার অভাব। যার সমাধানসূত্র গভীর সমুদ্র বন্দর। এ অবস্থায় বন্দর গড়তে লগ্নিকারী পেয়েও রাজ্য কেন তা হেলায় হারাচ্ছে , তার কোনও যুক্তি খুঁজে পায়নি শিল্পমহল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement