বিমান তৈরির সংস্থা হিসেবে বোয়িং-কে এক ডাকে চেনে বিশ্ব। চেনে আকাশযান তৈরিতে তার নিত্যনতুন উদ্ভাবনের জন্য। প্রতিরক্ষা ও মহাকাশ গবেষণার সরঞ্জাম নির্মাণেও তার পরিচিতি দুনিয়া জোড়া। এ বার এই বোয়িংয়ের হাত ধরেই আসতে চলেছে দুনিয়ার সব থেকে ‘সুরক্ষিত’ মোবাইল। তবে সম্ভবত সাধারণ মানুষের ব্যবহারের জন্য নয়। মূলত বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, প্রতিরক্ষা দফতর এবং নানা গোপন তথ্য নিয়ে নাড়াচাড়া করা সরকারি সংস্থা বা বিভাগগুলির জন্যই এই ফোন তৈরি করছে বোয়িং।
সম্প্রতি ‘বোয়িং ব্ল্যাক’ নামে অ্যান্ড্রয়েড প্রযুক্তিচালিত নতুন স্মার্ট ফোন আনার কথা জানিয়েছে এই মার্কিন সংস্থাটি। বোয়িংয়ের দাবি, এই ফোনটিতে আদানপ্রদান করা সমস্ত তথ্য এবং এর মাধ্যমে চালানো যাবতীয় কথাবার্তা বিশেষ ব্যবস্থা দ্বারা সুরক্ষিত থাকবে। শুধু তাই নয়, জোর করে সেটি খোলার চেষ্টা করা হলে নিজে থেকেই তার সব তথ্য ধ্বংস হয়ে যাওয়ারও ব্যবস্থা রয়েছে এতে। ফলে ফোনটি ব্যবহারকারী ছাড়া অন্য কারও হাতে পড়লে তথ্য চুরির ভয় কোনও ভাবেই থাকবে না বলে সংস্থার দাবি।
এত দিন বিমান তৈরি এবং প্রতিরক্ষা ও মহাকাশ গবেষণার বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরির ব্যবসায় নিজেদের প্রতিপত্তি প্রতিষ্ঠা করেছে প্রায় শতাব্দী প্রাচীন সংস্থা বোয়িং। কিন্তু এ বার প্রতিরক্ষায় গোপন তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে আরও উন্নত প্রযুক্তি তৈরির লক্ষ্যে গত ৩৬ মাস ধরেই ফোনটি তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় গবেষণা করছিল সংস্থা।
অবশ্য গোপনীয়তার কারণেই বোয়িং ব্ল্যাক সম্পর্কে সব তথ্য সামনে আনেনি তারা। জানায়নি ঠিক কী কী ধরনের বৈশিষ্ট্য থাকবে এতে। তবে সংস্থার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ছবি ও তথ্য অনুযায়ী, ৪.৩ ইঞ্চি স্ক্রিনের ফোন এটি। ব্যবহার করা যাবে দু’টি সিম কার্ড। চলবে জিএসএম, সিডিএমএ এবং এলটিই প্রযুক্তিতে। থাকবে বোয়েমেট্রিক স্ক্যানার, স্যাটেলাইট রেডিও-সহ আরও নানা বৈশিষ্ট্য। সাধারণ ব্যাটারির পাশাপাশি থাকবে প্রয়োজনে সৌরশক্তি অথবা অন্য ভাবে ব্যাটারির ক্ষমতা বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগও।
সম্প্রতি আমেরিকায় ফেডারেল কমিউনিকেশন্স কমিশনের কাছে ফোনটি বিক্রি করার জন্য আবেদন জানিয়েছে বোয়িং। সেখানে সংস্থা জানিয়েছে সম্ভাব্য ক্রেতাদের নামও।
সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, যে সমস্ত সংস্থা বা দফতর বোয়িং ব্ল্যাক ফোনটি ব্যবহার করবে, তাদের সংস্থার সঙ্গে বিশেষ চুক্তি সই করতে হবে, যাতে ফোনটির কোনও তথ্যই তৃতীয় পক্ষের হাতে না পড়ে। আর এই কারণে আপাতত সাধারণ মানুষের জন্য ফোনটি বাজারে আনার কোনও পরিকল্পনাও সংস্থার নেই। ফলে আগামী দিনে পর্দায় না হোক বাস্তবের জেমস বন্ডদের হাতে দেখা মিলতেই পারে পৃথিবীর ‘সবচেয়ে সুরক্ষিত’ বলে দাবি করা ফোনটির।