লোকসভা নির্বাচনের মুখে ফের মতভেদ অর্থ মন্ত্রক ও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের।
আর্থিক নীতি নিয়ে নয়। এই বিরোধ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ডেপুটি গভর্নর পদে নিয়োগ নিয়ে। ফলে ডেপুটি গভর্নরের চারটি পদের একটি জানুয়ারি থেকে খালি। অভিযোগ উঠেছে, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর রঘুরাম রাজন সবথেকে প্রবীণ ও অভিজ্ঞ এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর জি গোপালকৃষ্ণকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে ওই পদে বসাতে চাইছিলেন। দলিত শ্রেণিভুক্ত এই গোপালকৃষ্ণ। কিন্তু রাজন তাঁকে বাছাই তালিকাতেই না-রাখায় অর্থ মন্ত্রক ক্ষুব্ধ। প্রধানমন্ত্রীর দফতর এবং ক্যাবিনেট সচিবালয়ও হস্তক্ষেপ করেছে।
এরই মধ্যে আর এক ডেপুটি গভর্নর কমলেশ চন্দ্র চক্রবর্তী অবসরের আগেই পদত্যাগ করায় ফাঁপরে পড়েছেন রাজন। আগের শূন্য পদ পূরণের আগেই কমলেশবাবুর জায়গায় কাকে আনা হবে, তা নিয়ে মাঠে নামতে হয়েছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক কর্তাকে। তাৎপর্যপূর্ণ হল, এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর হিসেবে গোপালকৃষ্ণ কাজ করতেন কমলেশবাবুর অধীনেই। ব্যাঙ্কের কাজে নজরদারি, বিদেশি মুদ্রা, আর্থিক স্থায়িত্বের মতো দফতরের দায়িত্বে তিনি।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাঠামো অনুযায়ী, গভর্নরের অধীনে চারজন ডেপুটি গভর্নর থাকেন। এঁদের মধ্যে আনন্দ সিংহ অবসর নেন জানুয়ারিতে। তার আগে থেকেই ওই পদে নিয়োগের জন্য বাছাই পর্ব শুরু হয়। রাজনের নেতৃত্বেই একটি বাছাই কমিটি তিনজন এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর -এর নাম সুপারিশ করে অর্থ মন্ত্রকের কাছে। কিন্তু সেই তালিকা থেকে বাদ পড়ে গোপালকৃষ্ণর নাম। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সূত্রে খবর, ৩৩ বছর সেখানে কাজ করছেন গোপালকৃষ্ণ। এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর পদেই ৬ বছর। তার থেকেও স্পর্শকাতর বিষয়, তফসিলি উপজাতিভুক্ত কর্নাটকের কাড়ুকারুমা সম্প্রদায়ের দলিত সমাজের প্রতিনিধি তিনি।
প্রবীণতম অফিসারকে বাদ দিয়ে অন্যদের নাম কেন সুপারিশ করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে অর্থ মন্ত্রক। যদিও এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা মন্ত্রিসভার নিয়োগ সংক্রান্ত কমিটির হাতে। অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর, প্রথমে কমিটি এক জনের নাম সুপারিশ করে। নিয়ম মাফিক, তিনজনের করার কথা। যার মধ্যে থেকে একজনকে বাছে অর্থ মন্ত্রক। প্রধানমন্ত্রীর দফতর ও ক্যাবিনেট সচিবালয় তাই আপত্তি তোলায় আবার অন্য দু’জনের নাম জুড়ে পাঠানো হয়। সেখানেও গোপালকৃষ্ণর নাম ছিল না।