বন্ধন-এর পরে এ বার ব্যাঙ্ক খোলার দৌড়ে রাজ্যের আর এক ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থা ভিলেজ ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস। তবে বন্ধনের মতো পুরোদস্তুর ব্যাঙ্ক নয়, স্মল ফিনান্স ব্যাঙ্ক (ছোট ব্যাঙ্ক) খোলার জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে আবেদন জানিয়েছে তারা।
দেশের প্রত্যন্ত প্রান্তেও সাধারণ মানুষের দরজায় ব্যাঙ্কিং পরিষেবা (ফিনান্সিয়াল ইনক্লুশন) পৌঁছে দিতে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাকে সুযোগ দিচ্ছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। এই লক্ষ্যে প্রথমে পুরোদস্তুর বড় ব্যাঙ্ক খোলার জন্য বন্ধন এবং ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফিনান্স কর্পোরেশনকে লাইসেন্স দিয়েছে তারা। এ বার স্মল ফিনান্স ব্যাঙ্ক এবং পেমেন্টস ব্যাঙ্ক খোলার জন্য আবেদনপত্র নিয়েছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। ইতিমধ্যেই এই দু’ধরনের ব্যাঙ্ক খুলতে অনুমতি চেয়েছে যথাক্রমে ৭২টি ও ৪১টি সংস্থা। তার মধ্যে রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ, আদিত্য বিড়লা গোষ্ঠী, ভোডাফোন বা ফিউচার গোষ্ঠীর মতো কর্পোরেট দৈত্যরা যেমন রয়েছে, তেমনই আছে ডাকঘরও। ছোট ব্যাঙ্ক খুলতে আবেদন জানানো এই তালিকায় নাম লিখিয়েছে ভিলেজ ফিনান্সিয়াল।
এ ক্ষেত্রে স্মল ফিনান্স ব্যাঙ্কগুলি হবে অনেকটা আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাঙ্কের ধাঁচে। তারা কোনও এলাকায় আমানত সংগ্রহ করতে এবং ঋণ দিতে (নির্দিষ্ট অঙ্ক পর্যন্ত) পারবে। অন্য দিকে, পেমেন্টস ব্যাঙ্কের মূল কাজ হবে অনলাইনে কর দেওয়া থেকে শুরু করে ই-কমার্সের বিভিন্ন লেনদেনে টাকা মেটানো বা পেমেন্টের পরিষেবা দেওয়া। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিভিন্ন সরকারি ভর্তুকির টাকা এর মাধ্যমে পাওয়া যাবে। এই ব্যাঙ্ক ব্যবহার হতে পারে সরকারি স্কুল-কলেজের বেতন মেটানো, এমনকী পেনশন দেওয়ার জন্যও। শুধু তা-ই নয়, কারেন্ট বা সেভিংস অ্যাকাউন্টে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত আমানতও জমা নিতে পারবে তারা।
ভিলেজ ফিনান্সিয়াল-এর সি এম ডি কুলদীপ মাইতি জানান, “পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও অসম ও বিহারে ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবসা করছি। রাজ্যের ১৮টি জেলায় ৭৫টি, বিহারে ৩২টি এবং অসমে ৩টি শাখা আছে। গ্রাহক সংখ্যা ১ লক্ষ ৮০ হাজার। শাখার ৯২ শতাংশই এমন অঞ্চলে, যেখানে ব্যাঙ্ক হয় আদৌ নেই বা থাকলেও প্রয়োজনের তুলনায় কম।”
কুলদীপবাবুর দাবি, “ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থা হিসেবে তহবিল সংগ্রহ করতে প্রায় ১৫% সুদ গুনতে হয়। তাই ঋণে সুদের হার গিয়ে ঠেকে ২২-২৩ শতাংশে। ব্যাঙ্ক হিসেবে আমানত নিতে পারলে, তহবিল সংগ্রহের খরচ কমবে। ফলে সম্ভব হবে কম সুদে ধার দেওয়াও।”