শেষ পর্যন্ত ভোটের মুখে আটকে গেল প্রাকৃতিক গ্যাসের নতুন দাম ঘোষণা। সোমবার পেট্রোলিয়াম সচিবকে লেখা চিঠিতে নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিল যে, সব দিক খতিয়ে দেখার পর তাদের মনে হয়েছে বিষয়টি এখন সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। আপাতত গ্যাসের নয়া দর ঘোষণা করতে পারবে না কেন্দ্র। ফলে বেসরকারি সংস্থা রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ কিংবা রাষ্ট্রায়ত্ত ওএনজিসি-র মতো সংস্থাগুলির প্রায় দ্বিগুণ দর পাওয়ার বিষয়টি অন্তত কয়েক মাস ঝুলে রইল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
উল্লেখ্য, বর্তমানে প্রতি দশ লক্ষ ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিটের জন্য প্রাকৃতিক গ্যাসের নির্ধারিত দর ৪.২ ডলার। কিন্তু কেজি বেসিন থেকে গ্যাস তোলা রিলায়্যান্স অনেক দিনই দাবি করছিল যে, আসলে সমুদ্রগর্ভের গ্যাস তুলতে খরচ হচ্ছে তার তুলনায় অনেক বেশি। এরই মধ্যে গত জুনে গ্যাসের ওই দাম সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। গত ১০ জানুয়ারি তা জানিয়েও দেয় তারা। ঠিক ছিল, নতুন দর (৮.৩ ডলার) কার্যকর হবে আগামী ১ এপ্রিল থেকে। তবে এই সমস্ত কিছুর মাঝে লোকসভা ভোট এসে পড়ায় নয়া দাম ঘোষণার জন্য কমিশনের অনুমতি চাইতে বাধ্য হয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক। যার পরিপ্রেক্ষিতে ওই প্রস্তাব নাকচ হয়েছে এ দিন।
আসলে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে অনেক আগেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন সিপিআই সাংসদ গুরুদাস দাশগুপ্ত। এ নিয়ে একটি অসরকারি সংস্থার সঙ্গে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন তিনি। বর্তমানে যা শীর্ষ আদালতে বিচারাধীন। গ্যাসের দাম বাড়ানো নিয়ে রিলায়্যান্সের সঙ্গে ইউপিএ সরকারের যোগসাজশের অভিযোগ তুলেছেন আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরীবালও। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন এ নিয়ে রিলায়্যান্স গোষ্ঠীর কর্ণধার মুকেশ অম্বানী ও পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী বীরাপ্পা মইলির নামে এফআইআর দায়ের করেন তিনি। অন্তত ভোটের আগে যাতে কেন্দ্র গ্যাসের দাম এক লাফে দ্বিগুণ করতে না-পারে, তার জন্য কমিশনের কাছে আর্জিও জানান। আর এ সবের পরই আপাতত দর সংশোধন না করার নির্দেশ দিল কমিশন।