ভবিষ্যৎ এখনও অস্পষ্ট

আপাতত সঙ্কট এড়াল হলদিয়া পেট্রোকেম

অন্তত এখনকার মতো আর্থিক সঙ্কট এড়াতে পারল হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস। তবে ঠিক কী ভাবে তা সম্ভব, নির্বাচনের মুখে তা জানাতে রাজি হল না রাজ্য সরকার এবং চ্যাটার্জি গোষ্ঠী। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, পেট্রোকেমের যুযুধান এই দুই অংশীদারের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৪ ০২:৫২
Share:

সমঝোতা কোন পথে? অমিত মিত্র এবং পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় (ডান দিকে)। ফাইল চিত্র।

অন্তত এখনকার মতো আর্থিক সঙ্কট এড়াতে পারল হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস। তবে ঠিক কী ভাবে তা সম্ভব, নির্বাচনের মুখে তা জানাতে রাজি হল না রাজ্য সরকার এবং চ্যাটার্জি গোষ্ঠী।

Advertisement

সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, পেট্রোকেমের যুযুধান এই দুই অংশীদারের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে। আর সংস্থার ভেঙে পড়া আর্থিক অবস্থা সামাল দেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সেই সূত্রেই। কিন্তু যাতে নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ না-হয়, সে কারণে এ নিয়ে সোমবার মুখে কুলুপ এঁটেছে উভয় পক্ষই।

এ দিন পেট্রোকেমের পরিচালন পর্ষদের বৈঠক শেষে চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর প্রধান পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, সংস্থা নিয়ে চিন্তার আর কোনও কারণ নেই। সব সমস্যাই মিটে যাওয়ার পথে। কিন্তু কোন পথে তা মিটবে, সেই বিষয়টি খোলসা করেননি তিনি। কোন কোন সমস্যা মেটার দাবি করছেন, ভেঙে বলেননি সে কথাও। বেশ কিছু দিন ধরেই জল্পনা যে, বিআইএফআর (বোর্ড ফর ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল রিকনস্ট্রাকশন)-এ যাওয়ার খাঁড়া ঝুলছে পেট্রোকেমের মাথার উপর। সেই জল্পনা এ বার ঘুচবে কিনা, এমনকী তা-ও জানাতে চাননি পূর্ণেন্দুবাবু। এ দিনের বৈঠক পরিচালনা করেন শিল্পসচিব চঞ্চলমল বাচওয়াত। কিন্তু নির্বাচনী বিধির প্রসঙ্গ তুলে মুখ খোলেননি তিনিও।

Advertisement

শিল্প দফতর থেকে চলে যাওয়ার পর সংস্থার চেয়ারম্যান পদ থেকেও ইস্তফা দেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এর পর নতুন চেয়ারম্যান এখনও নিযুক্ত হননি। শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না। তিনি পর্ষদের সদস্যও নন। তবে তিনি রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান। যে নিগমের মাধ্যমে পেট্রোকেমের অন্যতম প্রধান অংশীদার রাজ্য। সংস্থার হাল ফেরাতে এর আগে তিনি ব্যাঙ্ক ও ঋণদাতা সংস্থাগুলির সঙ্গে আলোচনাও করেছেন। এ দিনের বৈঠকে ছিলেন ব্যাঙ্কগুলির প্রতিনিধি, নিগমের এমডি কৃষ্ণ গুপ্ত এবং পেট্রোকেমের এমডি উত্তম বসু।

গত অক্টোবরে পেট্রোকেমে রাজ্য সরকারের শেয়ার কিনতে চেয়ে দরপত্র দিয়েছিল ইন্ডিয়ান অয়েল। কিন্তু প্রায় পাঁচ মাস কেটে গেলেও শেয়ার হাতে পায়নি তারা। মালিকানা নিয়ে আইনি লড়াইয়ের কারণে অদূর ভবিষ্যতে তা পাওয়ার সম্ভাবনাও ক্ষীণ। তাই এই পরিস্থিতিতে সংস্থার সঙ্কট দূর করতে তাদের তরফ থেকে আর্থিক সহায়তা মেলার আশা নেই বললেই চলে। যদিও সংস্থা কর্তৃপক্ষের দাবি, পূঞ্জীভুত ক্ষতি যা-ই হোক না কেন, নতুন করে লোকসানের আর বোঝা বাড়ছে না। উৎপাদন হচ্ছে ৬০-৭০% হারে।

গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি রাজ্যকে চিঠি দেয় ইন্ডিয়ান অয়েল। সরকারি সূত্রে খবর, সেখানে পেট্রোকেমের আইনি লড়াই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তারা। জানায়, এর জেরে শেয়ার হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় দেরি হচ্ছে। একই সঙ্গে, শেয়ার নিলাম নিয়ে পর পর মামলা হওয়ায় প্রশ্ন তোলে পুরো প্রক্রিয়ার অস্তিত্ব নিয়েই। কারণ, রাজ্য চুক্তিপত্র ও অন্যান্য নথিতে সব সময় ৬৭.৫০ কোটি শেয়ার বিক্রির কথা বলে এসেছে। কিন্তু তার মধ্যে আছে বিতর্কিত ১৫.৫০ কোটি শেয়ারও। সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী, যার মালিকানা দাবি করে আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতে যেতে পারে চ্যাটার্জি গোষ্ঠী। ফলে রাজ্যের চুক্তিপত্রের বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে ইন্ডিয়ান অয়েল। এমনকী স্পষ্ট করে জানতে চেয়েছে চুক্তিভঙ্গ হচ্ছে কিনা। তার উত্তর অবশ্য রাজ্য দেয়নি। তবে শিল্প দফতরের দায়িত্ব নেওয়ার পরই ফোনে ইন্ডিয়ান অয়েলের চেয়ারম্যান আর এস বুটোলার সঙ্গে কথা বলেছেন অমিতবাবু।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement