Indian Railways

Indian Railways: ট্রেনের আসন কেন পছন্দ করা যায় না! পিছনে রয়েছে এক চমকপ্রদ বিজ্ঞান

আসলে সংরক্ষণের সময়ে খেয়াল রাখতে হয় গোটা ট্রেনে যেন যাত্রীর ভারসাম্য ঠিকঠাক থাকে। সেটা নিশ্চিত করতেই বিজ্ঞান মেনে আসন দেয় রেল।

Advertisement

পিনাকপাণি ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২২ ১৫:৩৭
Share:

প্রতীকী চিত্র।

অনলাইনে টিকিট কাটার জন্য লগ ইন করেই দেখলেন ৫০০ আসন খালি রয়েছে। আপনি ভেবে খুবই আনন্দ পেলেন যে, আপনার পছন্দের জানলার পাশের আসন বা লোয়ার বার্থ পেয়ে যাবেন। কিন্তু টিকিট কাটার পর দেখলেন ‘অপশন’ দেওয়া সত্বেও আসন পছন্দ মতো হল না।

Advertisement

আপনি টিকিট কাটার পর ৪৯৯ আসন খালি থাকলেও আপনার পছন্দের আসন মিলল না কেন! এমন অভিজ্ঞতা কমবেশি সকলেরই রয়েছে। কিন্তু কেন এমন হয়? কারণ, রেলের ওয়েবসাইটে সংরক্ষণের জন্য যে সফটঅয়্যার ব্যবহার করা হয়, সেটি একটি বিশেষ হিসাব কষেই আসন সংরক্ষণ করে।

‘ইন্ডিয়ান রেলওয়েজ ফ্যান ক্লাব (আইআরএফসিএ)’ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়ছে, কী ভাবে আইআরসিটিসি তথা রেলের ব্যবহার-করা সফটঅয়্যার কাজ করে। ধরা যাক, কোনও একটি দূরপাল্লার ট্রেনের এস-১, এস-২ এই ভাবে এস-১০ পর্যন্ত কামরা রয়েছে। প্রতিটি কামরায় ৭২টি করে আসন রয়েছে। ওই ট্রেনের টিকিট বুকিং শুরু হলে প্রথম আসন সংরক্ষণ হবে এস— কামরার। তা-ও আবার কামরার মাঝামাঝি জায়গা, অর্থাৎ ৩০ থেকে ৪০ নম্বর আসনের মধ্যে এবং সেটি হবে লোয়ার বার্থ। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতীয় রেল সর্বপ্রথমে লোয়ার বার্থের আসন সংরক্ষণ করে। তার পরে উপরের দিকে ওঠে। এটা ট্রেনের ভারসাম্যের জন্য মাধ্যাকার্ষণ শক্তির কথা ভেবে।

Advertisement

আসন সংরক্ষণের সময়ে খেয়াল রাখতে হয় গোটা ট্রেনে যেন যাত্রীর ভারসাম্য থাকে। ধরা যাক, এস-১ থেকে এস-৩ কামরা সম্পূর্ণ ভরে গেল এবং এস-৫, এস-৬ কামরা খালি এবং বাকি কামরাগুলি আংশিক ভর্তি। তা হলে ট্রেন চলার সময়ে সমস্যা হবে। একটি দূরপাল্লার ট্রেন গড়ে ৭০ কিলোমিটার বেগে চলে। ফলে ট্রেনের সর্বত্র সমান হারে যাত্রী না থাকলে গতি বাড়ার সময়ে সমস্যা তৈরি হতে পারে।

তবে টিকিট সংরক্ষণের সময়ে একসঙ্গে অনেক টিকিট যাঁরা কেনেন, সব সময়ে সেগুলি কেন একসঙ্গে পাওয়া যায়? এর পিছনেও যুক্তি রয়েছে। কোনও একটি ট্রেনে কত যাত্রী হতে পারে, তার একটা হিসেব রেলের কাছে থাকে। সেটা মাথায় রেখেই প্রথম থেকে আসন বন্টন করে সফটঅয়্যার। চেষ্টা করা হয় একই সঙ্গে কাটা টিকিট যাতে যতটা সম্ভব কাছাকাছি রাখা যায়। আবার দম্পতিদের টিকিট সব সময়ে একই কামরার রাখার চেষ্টা হয়। সেগুলি নীচের দিকে দেওয়া হয়। একান্তই তা সম্ভব না হলে কাছাকাছি দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। যাত্রীদের পদবী ও বয়স দেখে ওই সফটঅয়্যার বোঝার চেষ্টা করে, একসঙ্গে টিকিট কাটা যাত্রীরা দম্পতি কি না।

আবার ১৮ বছরের নীচে যাদের বয়স, তাঁদের সাধারণ ভাবে আরএসি টিকিট দেওয়া হয় না। কারণ, অন্য যাত্রীদের সঙ্গে একই আসনে সফর করতে হয়। প্রবীণদের ক্ষেত্রে (পুরুষদের ক্ষেত্রে ৬০ বছর, মহিলাদের ৪৫ বছর) সফটঅয়্যার বয়স দেখেই লোয়ার বার্থ দেয়। তবে সব সময়ে যে তা সম্ভব হয় তা-ও নয়। কেমন আসন রয়েছে তার উপরেই সবটা নির্ভর করছে।

রেলের সফটঅয়্যার যেহেতু কামরার মাঝামাঝি থেকে আসন সংরক্ষণ শুরু করে, তাই আগে আগে টিকিট কাটলে কিছুটা সুবিধা পাওয়া যায়। সংরক্ষণ শুরু হওয়ার পরে প্রথম দিকে কাটা টিকিট কখনওই শৌচাগারের কাছাকাছি হয় না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement