এই স্ট্রিপ বন্ডের মজা হল এটি দুই ধরনের বন্ডের সুযোগের মিশেল। ছবি: সংগৃহীত।
কেন্দ্রীয় সরকার ভারতের বাজারে একই ঋণের সুদ আর আসল আলাদা করে বিক্রি করতে বাজারে ছাড়ে ‘সেপারেট ট্রেডিং অফ রেজিস্ট্রার্ড ইন্টারেস্ট অ্যান্ড প্রিন্সিপাল সিকিওরিটিজ’ বা স্ট্রিপস। সে ২০১০ সালের কথা। কিন্তু সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন কারণে এখন এর চাহিদা তুঙ্গে।
ভাবুন এই ভাবে। আপনি যে ঋণপত্রই কিনুন না কেন, তাতে সুদের আশ্বাস থাকে যা নিয়মিত সময় অন্তর তোলা যায় এবং মেয়াদ শেষে আপনি আসলটা ফেরত পেয়ে যান। একদম বাঙ্কের ফিক্সড ডিপোজিটের মতো। আর রয়েছে সেই জ়িরো কুপন বন্ড। এই বন্ডে ফেস ভ্যালু যা হয় তা মেয়াদ শেষে আপনি হাতে পান। আর যখন কেনেন তখন তা কেনেন সেই ফেস ভ্যালুর কম দামে। এই দুইয়ের ফারাকই হল আপনার লাভ।
এই স্ট্রিপ বন্ডের মজা হল এই দুই ধরনের বন্ডের সুযোগের মিশেল। এই বন্ড বিক্রির সময় দুই ভাগ করে দেওয়া হয়। একটা হল সুদের ভাগ। আর একটা হল আসলের ভাগ। এ বার ধরা যাক বাজারে এক একটা ঋণপত্রের মেয়াদ শেষের দাম ধরা হয়েছে ৫০০০ টাকা আর সুদের হার ৪ শতাংশ বছরে। কিন্তু পাওয়া যাবে বছরে দু’বার।
এ বার এই বন্ড বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩২০০ টাকায়। যিনি শুধু বন্ডে বিনিয়োগ করবেন তিনি পাঁচ বছর বাদে পাবেন (৫০০০ – ৩২০০) = ১৮০০ টাকা।
আর যিনি সুদের অংশটা কিনবেন? বছরে যদি ৪ শতাংশ সুদের হার হয়, তা হলে বছরে ২০০ টাকা প্রাপ্তি হয় লগ্নিকারীর। প্রতি ছয় মাসে প্রাপ্তি হয় ১০০ টাকা। এ বার বাজারে এর দাম কী ভাবে হবে? প্রতি ৫০০০ টাকার বন্ড ৩২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে তার উপর পাওয়া যাচ্ছে প্রতি ছয় মাসে ১০০ টাকা। এ বার যদি সুদ আর আসল আলাদা করে বিক্রি হয় তা হলে প্রতি ১০০ টাকা সুদের জন্য দাম দিতে হবে (৩২০০/৫০০০)x১০০ = ৬৪ টাকা। আর লগ্নিকারীর প্রতি ৬৪ টাকা বিনিয়োগে লাভ ১০০-৬৪=৩৬ টাকা।
আর সব থেকে বড় সুবিধা হল এই লগ্নি সম্পূর্ণ ঝুঁকিমুক্ত। কারণ এর নেপথঅযে রয়েছে সুদ-সহ আসল ফেরত দেওয়ার সরকারি প্রতিশ্রুতি।