—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বাজারে এখন ঘোর সঙ্কট। প্যালেস্টাইন এবং লেবাননের সঙ্গে ইজ়রায়েলের সংঘর্ষ তো চলছিলই। আগুন ঘি পড়ল ইরান ইজ়রায়েলের উপর ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষণ করায়। যার কড়া জবাব দেওয়া হবে বলে এরই মধ্যে হুঙ্কার দিয়েছে ইজ়রায়েল। সামরিক ক্ষমতার নিরিখে শক্তিশালী এই দুই দেশের মধ্যে পুরোদস্তুর যুদ্ধ লেগে গেলে গোটা বিশ্বের কাছে তা বড় বিপদের কারণ হবে। এই আশঙ্কাতেই ভারতের বাজার মহাপতন দেখেছে গত সপ্তাহে। শেষ দু’দিন অর্থাৎ বৃহস্পতি এবং শুক্রবার সেনসেক্স খুইয়েছে মোট ২৫৭৭ পয়েন্ট। শেষ পাঁচটি কাজের দিন ধরলে পতনের পরিমাণ ৪১৫০ বা ৪.৮৩%, যা শুরু হয়েছিল ২৭ সেপ্টেম্বর। এর ঠিক আগের দিনই সূচকটি নজির গড়ে উঠেছিল ৮৫,৮৩৬ অঙ্কের নতুন শিখরে। শুক্রবার শেষ বেলায় নেমে এসেছে ৮১,৬৮৮-তে। যে সব আশঙ্কায় ভারতীয় বাজার ধস নেমেছে সেগুলি হল—
তবে শুধু যে পশ্চিম এশিয়ায় অশান্তির কারণেই বাজার পড়ছে, তা নয়। অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে চিন সরকার আর্থিক উৎসাহ জোগাবে, এই ঘোষণায় লগ্নির জায়গা হিসেবে ফের তাদের আকর্ষণ বেড়েছে। তড়িঘড়ি অনেক বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থা ভারত থেকে পুঁজি সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সেখানে। গত সপ্তাহের শেষ দু’দিনে তারা এখান থেকে তুলে নেয় ২৫,১৪০ কোটি টাকা। সূচক নেমেছে ফিউচার এবং অপশন লেনদেনের ব্যাপারে নিয়ন্ত্রক সেবি কিছু কড়াপদক্ষেপ করাতেও।
এখন প্রশ্ন হল উৎসবের মরসুমে বাজার কেমন থাকবে!
পশ্চিম এশিয়ায় পুরোপুরি যুদ্ধ লাগলে বাজার যে আরও তলিয়ে যাবে, তাতে সন্দেহ নেই। তবে তা এড়ানো গেলে সূচক আবার তেড়েফুঁড়ে উঠবে। রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করার পরে ২০২২-এর ২৪ ফেব্রুয়ারি সেনসেক্স এক দিনে নেমেছিল ২৭০২ পয়েন্ট। যদিও ঘুরে দাঁড়াতে বেশি সময় নেয়নি।
এ ছাড়া, বাজার আগামী দিনে অস্থির থাকবে হরিয়ানা এবং জম্মু-কাশ্মীরের নির্বাচনী ফলাফলকে কেন্দ্র করে। দেখা যাবে সংস্থাগুলির হিসাবের খাতার প্রভাবও। ১০ অক্টোবর থেকে শুরু জুলাই-অগস্ট-সেপ্টেম্বর অর্থাৎ চলতি অর্থবর্ষের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের তথা বছরের প্রথম অর্ধের আর্থিক ফল প্রকাশ। এ মাসের ৭-৯ তারিখে বৈঠকে বসছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি কমিটি। বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিচারে তাদের থেকে সুদ কমানোর সিদ্ধান্ত আশা করা হচ্ছে না। সব মিলিয়ে চলতি সপ্তাহে আশঙ্কাতেই থাকতে হবে লগ্নিকারীদের। যাঁরা ঝুঁকি নিতে ভালবাসেন, তাঁদের জন্য এই হোঁচট খাওয়া বাজার সস্তায় শেয়ার কেনার সুযোগ করে দিতে পারে।
এমনই এক অস্থির বাজারে ১৪ অক্টোবর আসতে চলেছে ভারতের বৃহত্তম পাবলিক ইসু (বাজারে প্রথম বার শেয়ার ছেড়ে টাকা তোলা বা আইপিও)। ২৫,০০০ কোটি টাকার ওই ইসু আনতে চলেছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম গাড়ি নির্মাতা হুন্ডাই মোটরস। অন্য দিকে, খাবার সরবরাহকারী সংস্থা সুইগি তাদের প্রস্তাবি আইপিও-র আকার বাড়িয়ে ৫০০০ কোটি টাকা করেছে। লগ্নিকারীদের পক্ষে যা উৎসাহব্যাঞ্জক।
(মতামত ব্যক্তিগত)