উৎপাদন শুরু পুজোর মরসুমেই

এ বার সল্টলেকের কারখানায় মোবাইল তৈরি করবে ভিডিওকন

ঔরঙ্গাবাদের পরে এ বার এ রাজ্যেও মোবাইল ফোন তৈরি করবে ভিডিওকন। এ জন্য তাদের সল্টলেকের কারখানা সম্প্রসারণ করছে ভিডিওকন গোষ্ঠী। সেখানে প্রায় ৫০ কোটি টাকা লগ্নির পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। বহুজাতিক সংস্থা ফিলিপস-এর কারাখানা কিনে নেওয়ার পরে সল্টলেকে টিভি ও বৈদ্যুতিন পণ্য তৈরি করে ভিডিওকন গোষ্ঠী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৫ ০২:০৭
Share:

নবান্নে বৈঠক সেরে বেরিয়ে আসছেন অনিরুদ্ধ ধুত।—নিজস্ব চিত্র।

ঔরঙ্গাবাদের পরে এ বার এ রাজ্যেও মোবাইল ফোন তৈরি করবে ভিডিওকন। এ জন্য তাদের সল্টলেকের কারখানা সম্প্রসারণ করছে ভিডিওকন গোষ্ঠী। সেখানে প্রায় ৫০ কোটি টাকা লগ্নির পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।

Advertisement

বহুজাতিক সংস্থা ফিলিপস-এর কারাখানা কিনে নেওয়ার পরে সল্টলেকে টিভি ও বৈদ্যুতিন পণ্য তৈরি করে ভিডিওকন গোষ্ঠী। সেখানেই মোবাইল ফোন তৈরির পরিকল্পনার কথা বুধবার নবান্নে রাজ্যের শিল্প তথা অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের সঙ্গে বৈঠকে জানান ভিডিওকন ইন্ডাস্ট্রিজ-এর ডিরেক্টর অনিরুদ্ধ ধুত। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও তাঁর ফোনে কথা হয়েছে বলে জানান তিনি।

ভিডিওকন ও সানসুই, এই দুই ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোন ঔরঙ্গাবাদের কারখানায় তৈরি করে ভিডিওকন। অনিরুদ্ধবাবু জানান, সেখানকার বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ৩০ থেকে ৪০ লক্ষ, যদিও দেশের বাজারে তাঁদের অংশীদারি এখনও কার্যত নগণ্য, ১.৫ শতাংশ। কিন্তু যে-হারে ভারতে মোবাইল ফোনের চাহিদা বাড়ছে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে সেই বাজারের ৩-৪ শতাংশ দখল করাই তাঁদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যেই তৈরি থাকতে আপাতত ভিত গড়ার উপর জোর দিচ্ছেন তাঁরা।

Advertisement

সল্টলেকের কারখানাতেও বছরে ৩০ লক্ষ মোবাইল ফোন তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে সংস্থার। এ জন্য সেখানে পাইলট প্রকল্প চলছে। দুর্গাপুজোর সময় থেকেই পুরোদমে উৎপাদন শুরুর ব্যাপারে আশাবাদী সংস্থার কর্তারা। লগ্নি নিয়ে গোড়ায় সরাসরি কিছু বলতে না-চাইলেও অনিরুদ্ধবাবু জানান, ঔরঙ্গাবাদের কারখানায় এখনও পর্যন্ত প্রায় ৫০ কোটি টাকা লগ্নি করেছেন তাঁরা। সল্টলেকের কারখানাতেও লগ্নির পরিমাণ সেই রকমই হওয়ার ইঙ্গিত দেন তিনি। পাশাপাশি সব মিলিয়ে প্রায় পাঁচশো জনের কর্মসংস্থানের আশাও করছেন তাঁরা। ভবিষ্যতে সেখানে মোবাইল ফোনের যন্ত্রাংশ তৈরির সম্ভাবনার কথাও জানান তিনি।

বস্তুত, আগামী দিনে ভারতে মোবাইল ফোনের বাজারের সম্ভাবনা নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী ভিডিওকন গোষ্ঠী। ধুত জানান, ৮ থেকে ১০ হাজার টাকার মোবাইল তৈরি করাই তাঁদের মূল লক্ষ্য। ফোর-জি পরিষেবার উপযুক্ত ফোনও তাঁরা তৈরি করবেন। এবং বাজার ধরতে অ্যামাজন, ফ্লিপকার্টের মতো নেট-বাজারেও নামতে চান তাঁরা। চিনের সাংহাই ও শেনজেনে তাঁদের নকশা সংক্রান্ত দুটি গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে। এ বার গুড়গাঁওতে আরও একটি কেন্দ্র খুলবেন তাঁরা।

কলকাতায় সল্টলেকের পাশাপাশি তারাতলা ও উত্তরবঙ্গের ফুলবাড়িতে আরও দুটি বৈদ্যুতিন পণ্য তৈরির কারখানা রয়েছে ভিডিওকন গোষ্ঠীর। এর আগে বাম আমলে বর্ধমানে একটি ইস্পাত ও বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণের জন্য প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা লগ্নির পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল তারা। কিন্তু প্রস্তাবিত প্রকল্প এলাকার নীচে কয়লা স্তর থাকায় প্রকল্পটি গোড়ায় আটকে যায়। পরে অবশ্য প্রকল্প এলাকার পুনর্বিন্যাসও করে তারা। কিন্তু কয়লার জোগান নিয়ে নতুন করে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। এরপর গোটা বিশ্বেই ইস্পাতের বাজার নিম্নমুখী হওয়ায় প্রকল্প দু’টির পরিকল্পনা স্থগিত রাখে তারা। অনিরুদ্ধবাবুও এ দিন বলেন, ‘‘বাজারে মন্দার ফলে ওই দুটি প্রকল্প নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’’

ফুলবাড়িতে ভিডিওকনের কম্পিউটার ও তার যন্ত্রাংশ এবং টিভি-সহ বৈদ্যুতিন পণ্য তৈরির যে-কারখানা রয়েছে, সেটিরও কার্যত নামমাত্র উৎপাদন ক্ষমতা ব্যবহৃত হয়। অনিরুদ্ধবাবু ও সংস্থার পূর্বাঞ্চলীয় কর্তা গৌতম সেনগুপ্ত জানান,
ওই কারখানাটিরও সম্প্রসারণ করা হবে। আগামী কয়েক বছরে এ জন্য সেখানে প্রায় ৭৫ কোটি টাকা লগ্নির পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। বস্তুত, উত্তরবঙ্গের বাজার ধরতে ওই কারখানাটিকে কাজে লাগাতে চায় সংস্থা। মোবাইল ফোনের সঙ্গে যে-সব যন্ত্রাংশ (অ্যাকসেসরিজ) লাগে, সেগুলিও ভবিষ্যতে সেখানে তৈরির ইঙ্গিত দেন অনিরুদ্ধবাবু।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement