অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম তৈরির সময়ে জাভা প্রযুক্তি বিনামূল্যে ব্যবহার করা নিয়ে মামলা চলছে দুই মার্কিন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা গুগ্ল এবং ওর্যাকলের মধ্যে। আর এই মামলায় গুগ্লের পাশে দাঁড়াল না বারাক ওবামার প্রশাসন। জানিয়ে দিল, লাইসেন্স ফি ছাড়াই ওর্যাকলের নিজস্ব জাভা প্রযুক্তি ব্যবহার করার পক্ষ নিয়ে যে মামলা গুগ্ল করেছে, তার কোনও ভিত্তি নেই। তাই আমেরিকার সর্বোচ্চ আদালতকে সেই মামলা গ্রহণ না-করারও পরামর্শ দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন।
পাঁচ বছর ধরে স্মার্ট ফোনের অ্যান্ড্রয়েড প্রযুক্তি নিয়ে এই কপিরাইট মামলা চলছে দুই মার্কিন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা গুগ্ল এবং ওর্যাক্লের মধ্যে। ওর্যাক্লের দাবি ছিল, স্মার্ট ফোনের অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করার সময়ে লাইসেন্স ফি না-দিয়েই তাদের নিজস্ব জাভা প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে গুগ্ল। এতে কপিরাইট আইন লঙ্ঘন হয়েছে। ২০১০ সালে করা সেই মামলায় ১০০ কোটি ডলারের ক্ষতিপূরণও দাবি করেছিল তারা।
অন্য দিকে গুগ্লের যুক্তি ছিল, সফটওয়্যারের জগতে নতুন আবিষ্কারের ক্ষেত্রে একে অপরের প্রযুক্তি ব্যবহার করার অনুমতি থাকা প্রয়োজন। কোনও নির্দিষ্ট সফটওয়্যারকে সংস্থার সম্পত্তি করে রাখলে, আগামী দিনে নতুন আবিষ্কারের পথ অনেক সঙ্কীর্ণ হয়ে যাবে। সে জন্য জাভার মতো প্রযুক্তিকে কপিরাইট আইনের আওতার বাইরে রাখার প্রস্তাব দেয় তারা। সে ক্ষেত্রে লাইসেন্স ফি না-দিয়েই সেগুলি ব্যবহার করা সম্ভব হবে।
এই মামলায় প্রথমে সান ফ্রান্সিসকোর আদালতে হেরে গেলেও, শেষ পর্যন্ত গত বছর গুগ্লের বিরুদ্ধে মামলা জেতে ওর্যাক্ল। তার পরই ফের উচ্চতর আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছিল গুগ্ল। যেহেতু মামলাটির ফলাফলের উপর আগামী দিনে সফটওয়্যার শিল্পের অগ্রগতি অনেকটাই নির্ভর করছে, সে জন্য গত জানুয়ারি মাসে বিষয়টি নিয়ে ওবামা সরকারের মতামত এবং পরামর্শ জানতে চায় সুপ্রিম কোর্ট।
গুগ্লের সঙ্গে ওবামা প্রশাসনের ভাল সম্পর্ক থাকার কারণে কোন পথে যাওয়া হবে, তা নিয়ে দ্বিধা ছিল সরকারের মধ্যেই। শেষ পর্যন্ত অবশ্য সেই সম্পর্কের কোনও প্রভাব সরকারের সিদ্ধান্তের উপর পড়েনি। বরং এই প্রসঙ্গে সরকারের তরফে মার্কিন সলিসিটর জেনারেল ডোনাল্ড ভেরিলি জানিয়েছেন, গুগ্লের মামলার কোনও সারবত্তা নেই।
এই প্রস্তাবে হতাশা গোপন রাখেনি মার্কিন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা গুগ্ল। তবে উদ্ভাবনের পথে সংস্থাগুলির মেধাস্বত্ব ও কপিরাইট রক্ষার প্রয়োজনীয়তা এই মামলায় আরও স্পষ্ট হল বলে মন্তব্য করেছে ওর্যাক্ল। এখন সরকারের প্রস্তাব বিবেচনা করে তবেই জুনের শেষে মামলাটি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট।