ঋণের কিস্তি মেটাতে না পারা, নগদের সমস্যা, কর্মীদের বকেয়া— বিভিন্ন দিক থেকে রীতিমতো কোণঠাসা বিমান পরিষেবা সংস্থা জেট এয়ারওয়েজ। এই অবস্থায় জেট কর্ণধার নরেশ গয়ালের উপরে আরও চাপ বাড়াল অন্যতম অংশীদার এতিহাদ এয়ারওয়েজ। জেটে শেয়ার বাড়ানোর আশ্বাস দিয়েও তার জন্য বেঁধে দিল এক গুচ্ছ শর্ত।
জেটের কাঁধে এখন ঋণের বোঝা বিপুল। এই ঋণের পুনর্গঠন নিয়ে স্টেট ব্যাঙ্কের নেতৃত্বাধীন ঋণদাতাদের গোষ্ঠীর সঙ্গে নিয়মিত কথা হচ্ছে সংস্থা কর্তৃপক্ষের। সূত্রের খবর, সম্প্রতি এ ব্যাপারে স্টেট ব্যাঙ্ককে একটি চিঠি দিয়েছেন এতিহাদের সিইও টনি ডগলাস। জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে পুঁজি না এলে সমস্যায় পড়ে যাবে জেট। দৈনন্দিন ব্যবসায় যাতে বিঘ্ন না ঘটে, তার জন্য এখনই সাড়ে তিন কোটি ডলার ঢালতে তাঁরা প্রস্তুত। কিন্তু সংবাদ সংস্থা সূত্রে আরও খবর, এরই পাশাপাশি কঠিন কয়েকটি শর্ত এতিহাদ রেখেছে জেটের সামনে। নরেশ গয়ালের সংস্থাকে তারা জানিয়েছে, আরও পুঁজি ঢেলে নিজেদের শেয়ার ২৪% থেকে বাড়াতে চায় তারা। শুধু তা-ই নয়, সেই শেয়ার তারা কিনবে অন্তত ৪৯% ছাড়ে। এই খবর সামনে আসতেই বুধবার শেয়ার বাজারে জেটের শেয়ারের দাম প্রায় ৮% পড়েছে।
বাজার বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, কোনও অংশীদার যদি সংস্থায় নিজেদের শেয়ার ২৫ শতাংশের চেয়ে বাড়াতে চায়, তা হলে তাকে বাজার থেকে (ওপেন অফার) শেয়ার কিনতে হবে। সে ক্ষেত্রে তার পক্ষে ছাড়ে শেয়ার পাওয়া সম্ভব নয়। যদি এই বিধি থেকে ছাড় পেতে হয়, তা হলে আবেদন জানাতে হবে বাজার নিয়ন্ত্রক সেবির কাছে। তবে উড়ান ক্ষেত্রে অতীতে এমন নজির আছে।
ওয়াকিবহাল মহল অবশ্য বলছে, এতিহাদের এই শর্তের অর্থ অনেক। তারা অনেক দিন ধরেই চাইছে জেটে নিজেদের অংশীদারি বাড়াতে। চাইছে, সংস্থার মূল প্রোমোটার নরেশ গয়াল নিজের অংশীদারি ৫১% থেকে ২২ শতাংশের কাছাকাছি নামিয়ে আনুন। সে ক্ষেত্রে তাঁর ভোটাধিকারও নেমে আসবে ১০ শতাংশের কাছাকাছি।
এ দিন অবশ্য বিষয়টি নিয়ে জেট বা এতিহাদ, কোনও পক্ষই মন্তব্য করতে চায়নি। বিমান মন্ত্রকের সচিব আর এন চৌবে বলেছেন, ‘‘আমার আশা, সমস্ত পক্ষ মিলে সমাধান সূত্র তৈরি করতে পারবে। যদি এতিহাদ কোনও ছাড় (ওপেন অফারের ক্ষেত্রে) চায়, তা হলে সেবির কাছেই বিষয়টি জানাতে হবে। তারাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। এখানে সরকারের কোনও ভূমিকা নেই।’’