প্রতীকী চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গ-সহ পাঁচ রাজ্যে চলছে ভোটের মরসুম। এরই মধ্যে দেশ জুড়ে মার্চে তিন দিন এবং এপ্রিলে এক দিন কমেছে তেলের দাম। মার্চের ওই তিন দিনে কলকাতায় পেট্রলের দাম কমে লিটারে ৫৮ পয়সা। ডিজেল ৬০ পয়সা। দাম ছাঁটার পরেই গত মাসের শেষে ফলাও করে বিবৃতি দিয়ে ইন্ডিয়ান অয়েল দাবি করে, তাতে গাড়ির মালিক ও পরিবহণ সংস্থাগুলি নাকি স্বস্তি পেয়েছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার ফের দাম কমার পরে অল ইন্ডিয়া মোটর ট্রান্সপোর্ট কংগ্রেসের (এআইএমটিসি) কটাক্ষ, ‘‘ভোটের দিকে তাকিয়ে নেওয়া ওই ‘নগণ্য’ দাম কমানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত।’’
পেট্রল-ডিজেল দামি হওয়ার জন্য
বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের চড়া দামকেই দায়ী করে কেন্দ্র। শুক্রবার সেই বক্তব্য নিয়েও ঠারেঠোরে প্রশ্ন তুলেছে পরিবহণ ক্ষেত্র। এআইটিএমসি-র দাবি, এখন অশোধিত তেল যেখানে (৬৪.৮২ ডলার) দাঁড়িয়ে, তা দেখা গিয়েছিল ২০০৯ সালে। তখন পেট্রল ও ডিজেল ছিল যথাক্রমে ৪০.৬২ এবং ৩০.৮৬ টাকা। অথচ এখন দ্বিগুণ।
এ দিকে, শুক্রবার ফের কমেছে বিমান জ্বালানি এটিএফের দাম। চলতি মাসে দ্বিতীয়বার। ১ এপ্রিল দাম কমেছিল ৩%। এ দিন কমল ১%।
গত বছরে করোনা পরিস্থিতিতেও নাগাড়ে বেড়ে দেশে রেকর্ড গড়েছে পেট্রল-ডিজেলের দর। ফলে জ্বালানি খাতে বিপুল খরচ বেড়েছে পরিবহণ ক্ষেত্রের। যার জের বইতে হচ্ছে মানুষকে। কারণ পরিবহণ খরচ বাড়ায় পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে। ক্রেতা থেকে পরিবহণ সংস্থা, সব পক্ষেরই অভিযোগ, ভোটের মধ্যে তেলের দাম যেটুকু কমেছে তা লোক দেখানো। স্বস্তি আনার মতো নয়।
এআইএমটিসি-র চেয়ারম্যান বালমিলকিত সিংহ শুক্রবার বলেন, ‘‘এই নগণ্য দর হ্রাসের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি। কিন্তু এটুকু কমিয়ে বর্তমান অবস্থায় কাজের কাজ হবে না। করোনা সঙ্কটের মধ্যে তা লিটারে ৪০ টাকা কমানো দরকার।’’ সহমত ফেডারেশন অব ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রাক অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সজল ঘোষও। তিনি বলেন, ‘‘ডিজেলের দাম যতটুকু কমানো হয়েছে তাতে কিছুই উপকার হবে না। বিশ্ব বাজারের কথা মাথায় রেখে দাম আরও না-কমালে সুরাহা হবে না।’’
মোদী সরকার অশোধিত তেলের চড়া দরকে দুষলেও, বিরোধী দলগুলির সুরেই এআইটিএমসি-র কর্তা বলেন, ‘‘২০১৪ সালে অশোধিত তেলের দর ব্যারেলে ১০৫ ডলার ছিল। অথচ দেশে পেট্রল ও ডিজেল ছিল যথাক্রমে ৭১.৪১ ও ৫৬.৭১ টাকা (দিল্লিতে)। গত ডিসেম্বরে অশোধিত তেল ৪৭.৫৮ ডলার থাকলেও দেশে দর ছিল যথাক্রমে ৯০.৩৪ ও ৮০.৫১ টাকা।’’