হাল ফেরাতে হাতবদল ডিপিএলের

সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, বার্ষিক ২০০ কোটি টাকা লোকসানের পাশাপাশি ডিপিএলের ঋণের বোঝাও কম নয়। সংস্থার হাল ফেরাতে পাওয়ার ফিনান্স কর্পোরেশনের কাছে ৩৪০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৫৮
Share:

মালিকানা বদলে গেল ধুঁকতে থাকা সংস্থা দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেড বা ডিপিএলের। পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের হাতে সংস্থার ১০০ শতাংশ মালিকানা যাচ্ছে। এখন থেকে নিগমের একটি সহযোগী বিদ্যুৎ উৎপাদক সংস্থা হিসেবেই কাজ করবে প্রায় ছয় দশক আগে তৈরি হওয়া ডিপিএল।

Advertisement

লোকসানে ধুঁকতে থাকা ডিপিএল-কে বাঁচাতে সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরে শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ডিপিএল পুনরুজ্জীবনের জন্য গঠিত মন্ত্রিগোষ্ঠীর প্রস্তাবের ভিত্তিতেই মন্ত্রিসভা এই অনুমোদন দিয়েছে। ওই সংস্থার কোনও কর্মীর চাকরিও যাবে না বলে তিনি জানান।

৬৬০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন ডিপিএল রবিবার পর্যন্তও রাজ্য সরকারি সংস্থা ছিল। মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর আজ, মঙ্গলবার থেকেই সংস্থার মালিকানা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হবে। প্রশাসন সূত্রে খবর, গ্রাহক পরিষেবার জন্য ডিপিএল-এর বিদ্যুৎ বণ্টন ব্যবস্থার দায় যাবে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার হাতে। সংবহন ব্যবস্থাটি নেবে রাজ্য বিদ্যুৎ সংবহন সংস্থা। তবে ডিপিএল-এর যাবতীয় স্থায়ী সম্পদ, মানবসম্পদ-সহ ৯৫% আর্থিক দায়ই থাকবে বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের উপর।

Advertisement

নতুন পথে

• মালিকানা পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের হাতে

• যাবতীয় সম্পদ ও ৯৫% আর্থিক দায়ও বর্তাবে তাদের উপর

• সংবহন ব্যবস্থার দায়িত্ব রাজ্য বিদ্যুৎ সংবহন সংস্থাকে

• ডিপিএলের বার্ষিক লোকসান ২০০ কোটি টাকা, পিএফসি-র কাছে ঋণ ৩৪০০ কোটি

১৯৬১ সালে ডিপিএল-এর যাত্রা শুরু। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরেই এই সংস্থার আর্থিক অবস্থা বেহাল। প্রশাসনের কর্তাদের একাংশের মতে, এর মূলে ছিল ঢিলেঢালা পরিচালনা ব্যবস্থা। তার জেরেই মার খেয়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বাজার। এই মুহূর্তে সংস্থাটির ৩০০ ও ২৫০ মেগাওয়াটের দু’টি ইউনিট কোনও রকমে চলছে। ২০১৪ সাল থেকেই ডিপিএল পুর্নগঠনের ভাবনা-চিন্তা শুরু করে রাজ্য সরকার। মাঝে সংস্থার জমি নিলাম করে আর্থিক হাল ফেরানোর পরিকল্পনাও করা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানিয়ে দিয়েছিলেন, যেমন করে হোক ডিপিএল-কে ফের চাঙ্গা করে তোলা হবে। গত তিন বছর ধরে আলোচনার পরেই শেষ পর্যন্ত ডিপিএল-কে রাজ্যের বিদ্যুৎ সংস্থাগুলির সঙ্গেই মিশিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, বার্ষিক ২০০ কোটি টাকা লোকসানের পাশাপাশি ডিপিএলের ঋণের বোঝাও কম নয়। সংস্থার হাল ফেরাতে পাওয়ার ফিনান্স কর্পোরেশনের কাছে ৩৪০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়। সেই টাকা ফেরত দেওয়া যায়নি। লোকসানের সঙ্গে সুদে-আসলে সে ঋণের বোঝাও ডিপিএলের ঘাড়ে রয়েছে। এ বার তা বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের উপরে চাপতে চলেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement