ভুলের ফাঁদে

সঞ্চয় মানে সাত-পাঁচ না ভেবে নিছক টাকা রাখা নয়। তাতে ঠকে যাওয়ার সম্ভাবনা বিস্তর। অনেকখানি কম হতে পারে প্রাপ্তিযোগও। তাই লগ্নির আগে সাত বার ভাবুন। সতর্ক করলেন শৈবাল বিশ্বাসচালু যুক্তি বা ধারণা হল, টাকাটা তো শেষমেশ ছেলেরই থাকল। তা হলে আর অসুবিধা কোথায়? কিন্তু বাস্তব হল, এই লগ্নি করতে হল আসলে ‘না’ বলা গেল না বলে। এবং প্রকল্পে টাকাও ঢালা হল কিছু না ভেবেই। টাকা আটকে গেল দু’দশকের জন্য।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৯ ০৫:৫৭
Share:

সুধৃতি-তাপসের ছেলে হয়েছে। পরিবারের নতুন সদস্যকে দেখতে আসছেন আত্মীয়স্বজন। হঠাৎ এক সকালে তাপসের মেসো অচেনা এক প্রৌঢ়কে নিয়ে হাজির। আর্জি, ‘‘এঁকে একটু সাহায্য করা দরকার। বিমার এজেন্ট। খোকার জন্য এককালীন প্রিমিয়ামের একটা পলিসি করতে হবে। ২১ বছর পরে ম্যাচিওর করবে। তখন থোক টাকা পাওয়া গেলে উচ্চ শিক্ষায় কাজে লাগবে। বছর শেষে এই ভদ্রলোকের কোটাও পূরণ হবে।’’ অতএব খরচ হয়ে গেল এক লক্ষ টাকা। নবজাতকের প্রথম উপহার।

Advertisement

এ ক্ষেত্রে চালু যুক্তি বা ধারণা হল, টাকাটা তো শেষমেশ ছেলেরই থাকল। তা হলে আর অসুবিধা কোথায়? কিন্তু বাস্তব হল, এই লগ্নি করতে হল আসলে ‘না’ বলা গেল না বলে। এবং প্রকল্পে টাকাও ঢালা হল কিছু না ভেবেই। টাকা আটকে গেল দু’দশকের জন্য।

আজ কোথায় কোথায় ভোট, দেখে নিন

Advertisement

আমার মতে, অনুরোধের চাপে টাকা ঢালার আগে ভাল করে ভেবে দেখা উচিত। কারণ, বিনা ঝক্কিতে সন্তান বড় হয়ে যাবে না। তাকে উচ্চ শিক্ষার উপযুক্ত করে তৈরি করারও কিন্তু অনেক খরচ । সেই টাকার জন্য ভাবনাচিন্তা করেছেন তো?

একই ভাবে আরও একটা ঘটনা বলি। সদ্য চাকরি পাওয়া রাজীব অফিসের আড্ডায় শুনেছেন, এখন মিউচুয়াল ফান্ডের যুগ। অমুক ফান্ডে টাকা রেখে সহকর্মীরা ভাল রিটার্ন পেয়েছেন। অতএব অনেক দিন ধরে জমানো ৫০ হাজার টাকা তিনি রেখে দিলেন বন্ধুদের সুপারিশ করা ফান্ডে। দু’মাসের মাথায় দেখলেন দাম গিয়েছে কমে। হয়েছে সাড়ে ৪৯ হাজার টাকা। বুক ধুকপুক শুরু। আরও মাস দুই পরে যখন দেখলেন লগ্নির টাকা ফের ৫০,০০০ পার করেছে তখনই তুলে রেখে দিলেন ফিক্সড ডিপোজিটে। শান্তি! টেনশন থেকেও মুক্তি!

খেয়াল করে দেখুন, প্রায় কিছুই না জেনে রাজীবের ফান্ডে টাকা রাখতে ঝাঁপিয়ে পড়ার মূল কারণ একটা আলগা ধারণা। আর সেটা হল, এখানে লগ্নি করলেই মুনাফা। কিন্তু বাস্তব বলে, ফান্ড মাত্রেই দারুণ রিটার্ন দেবে, এমনটা একেবারেই নয়। তার জন্য প্রথমত ভাল ফান্ড বাছাই করা জরুরি।

শুধু তা-ই নয়। মনে রাখতে হবে ভাল ফান্ডেও কিন্তু সবুরে মেওয়া ফলে। দরকার ধৈর্য। বয়স অনুযায়ী কোন জায়গায় টাকা ঢালবেন, সেটাও বোঝা দরকার। ফলে দুম করে টাকা উপুড় করলেই ভাল রিটার্ন হাতের মুঠোয়, এমনটা আশা করা বোকামি।

তাপস এবং রাজীবের ঘটনা বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। অন্যের অনুরোধ ফেলতে না পারা এবং খোঁজখবর না নিয়ে টাকা ঢেলে পস্তানো লগ্নির দুনিয়ায় আখছার ঘটছে। তাই আজ এমন কিছু বিষয়ে সতর্ক করে দিতে চাই, যেগুলো লগ্নি করার সময়ে এড়িয়ে চলা উচিত।

বিনে পয়সার পরামর্শ

সাধারণ লগ্নিকারীদের একটা বড় অংশের সমস্যা হল, তাঁরা পুঁজি ঢালার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায়। ঠিক রাজীবের মতো। ধরা যাক, কোনও এক বন্ধু বললেন, তিনি অমুক জায়গায় টাকা ঢেলে লাভবান হয়েছেন। আপনারও ওখানে টাকা রাখা উচিত। অতএব চোখ বন্ধ করে আপনি সেই পথে হাঁটলেন। ভাবলেন নিখরচায় কী ভাল
পরামর্শই না পেলাম!

• সমস্যা কোথায়: এ এক মস্ত মুশকিলের ব্যাপার। ভেবে দেখুন, ঠিক এই ধরনের মানসিকতার জন্যই বহু মানুষ বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার খপ্পরে পড়েছেন। এই ধরনের চিন্তাভাবনাহীন লগ্নি কিন্তু ভবিষ্যতে আর্থিক ক্ষতির কারণ হতে পারে। তা ছাড়া আপনার বন্ধুর লগ্নি করার ক্ষমতা এবং লক্ষ্য হয়তো আপনার চেয়ে আলাদা। সে ব্যাপারটাও তো মাথায় রাখতে হবে! সে কারণেই উচিত লগ্নির আগে ভাল ভাবে খোঁজখবর নেওয়া। যেখানে লগ্নি করবেন ভাবছেন, তার ইতিহাস-ভূগোল জানা। এর জন্য বেশ কিছুটা সময় ইন্টারনেট ঘাঁটাঘাঁটি করতে হবে। লগ্নির খোঁজখবর নেওয়ার ব্যাপারে যদি স্বচ্ছন্দ না হন, তা হলে অবশ্যই বিনিয়োগ পরামর্শদাতার সঙ্গে কথা বলুন। কিন্তু চায়ের টেবিল থেকে লগ্নি পরামর্শ— এক্কেবারে না।

• ফারাক কতটা: একটা উদাহরণ দিলে বিষয়টা কিছুটা পরিষ্কার হতে পারে। ধরা যাক, অভিনব কারও পরামর্শে বছরে ১২,০০০ টাকা প্রিমিয়াম দিয়ে ১.৮ লক্ষ টাকার একটি জীবন বিমা পলিসি কিনলেন। মেয়াদ ২০ বছর। কার্যকরী রিটার্ন হয়তো ৫ শতাংশের আশেপাশে। সে ক্ষেত্রে ২০ বছর পরে অভিনবের হাতে ৩.৬ লক্ষ টাকা আসতে পারে। আবার ভাস্কর একই অঙ্কের লগ্নি (মাসে ১,০০০ টাকা করে) করলেন একটি ডাইভার্সিফায়েড ইকুইটি ফান্ডে (যে ফান্ডের পুঁজি মূলত লগ্নি হয় শেয়ার বাজারে)। বছরে ১২ শতাংশের কাছাকাছি রিটার্ন মিললে তাঁর পুঁজি পৌঁছে যেতে পারে ৯.৯৯ লক্ষ টাকার কাছাকাছি! পার্থক্যের অঙ্ক যথেষ্ট বড়। এর পাশাপাশি যদি বাড়তি কিছু টাকা খরচ করে ভাস্কর একটি টার্ম পলিসিও (এর প্রিমিয়াম সস্তা। রিটার্ন থাকে না। কিন্তু বিমার অঙ্ক বিপুল) করিয়ে রাখেন, তা হলে তিনি লগ্নির রিটার্ন এবং বিমার কভারেজ মিলিয়ে আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবেন।

তবে এটাও ঠিক যে, এক এক জনের আর্থিক ক্ষমতা এবং প্রয়োজন এক এক রকম। সে কারণেই উচিত লগ্নির ব্যাপারে নিজে খোঁজ নেওয়া কিংবা পরামর্শদাতার সঙ্গে কথা বলা।

অনুরোধের ঢেঁকি গেলা

পড়শি লগ্নির এজেন্ট। বাড়িতে এসে রাখলেন লগ্নির প্রস্তাব। বললেন, এই জীবন বিমা অথবা মিউচুয়াল ফান্ডের নকশা করা হয়েছে আপনার কথা ভেবেই। অনুরোধ ফেলতে না পেরে টাকা ঢেলেই ফেললেন। মনকে আশ্বস্ত করলেন এই বলে যে, লগ্নি তো দরকার ছিলই। না হয় এখানেই করে ফেললাম। খারাপটা কী! কিন্তু সার সত্যিটা হল হল, মন শক্ত করে ‘না’ বলতে পারলেন না। এ ধরনের লগ্নি করার অর্থ, অন্য একটি ভাল লগ্নি ক্ষেত্রে টাকা ঢালতে না পারা।

কথায় কথায় লগ্নি

ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করার জন্য লগ্নি যে করা দরকার তা কে না জানে? কিন্তু যেটা অনেকেই বুঝতে চান না তা হল, কথায় কথায় টাকা ঢালাও বিচক্ষণতার পরিচয় নয়। কোথাও টাকা ঢালার আগে বরং একটু সময় নিন। বুঝতে চেষ্টা করুন আপনার লক্ষ্য ও সময়সীমা। কারণ, একটা ভুল লগ্নি ভবিষ্যতে মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। যেমন ধরা যাক, ছ’মাস পরে আপনার হাতে কিছু টাকা দরকার। এই লক্ষ্য পূরণ করতে গিয়ে যদি উঁচু ঝুঁকির স্মল বা মিডক্যাপ ফান্ডে টাকা রাখেন, তা হলে সমস্যা হতেও পারে।

ঠিকানাহীন পথ হাঁটা

সাধারণত আমরা রিটার্ন দেখে লগ্নি করি। যে ফান্ড অতীতে ১০, ১২ কিংবা ১৫% রিটার্ন দিয়েছে, সেখানে টাকা রাখার জন্য আমাদের চোখ চকচক করে ওঠে। কিন্তু শুধু রিটার্ন সংক্রান্ত তথ্যই কি ফান্ড বাছাইয়ের এক মাত্র মাপকাঠি? না। রিটার্ন গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু তার পাশাপাশি তথ্য সংগ্রহ করা উচিত বাজারের পরিস্থিতি, ফান্ড ম্যানেজার, কর, ঝুঁকির মতো বিষয়গুলি নিয়েও। তাতে লগ্নি প্রকল্পটির ভাল-মন্দ সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানা যায়।

সব ডিম এক ঝুড়িতে

এমন ভুল করলে যে হাত থেকে ঝুড়ি ফস্‌কে সমস্ত ডিম নষ্ট হতে পারে, সে তো আমরা ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি। কিন্তু ভাল পরামর্শ পেলেই বা শোনে ক’জন! লগ্নির ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা প্রায় সে রকম। এক লগ্নি ক্ষেত্রে ভাল রিটার্ন পেয়ে সব টাকা সেখানেই ঢালার পরে দীর্ঘমেয়াদে হাত কামড়ানো মানুষের সংখ্যা কম নয়। কিন্তু মূলধনকে নিরাপদে রাখার জন্য লগ্নি ছড়ানোর প্রয়োজন। যাতে একটি প্রকল্প খারাপ ফল করলেও গোটা লগ্নির অঙ্ক মোটামুটি নিরাপদ থাকে।

তা ছাড়া বিভিন্ন মেয়াদের উদ্দেশ্য সফল করার জন্যই একাধিক প্রকল্পে লগ্নি ছড়িয়ে রাখা জরুরি। যেমন, স্বল্পমেয়াদের প্রয়োজনে ইকুইটি ফান্ডে টাকা ঢালা বোকামো। এ ক্ষেত্রে আপনি কোনও লিকুইড ফান্ডে টাকা রাখতে পারেন। আবার আপনি যদি অবসর জীবনের জন্য সঞ্চয় করতে চান, তা হলে ফিক্সড ডিপোজিট বা রেকারিং ডিপোজিটে লগ্নি করা ভুল।

নীচের সারণি (কোথায় কত) দেখলে বিষয়টি একটু খোলসা হবে। ধরুন, কেউ অবসর জীবনের জন্য ২৫ বছর ধরে টাকা জমানোর পরিকল্পনা করলেন। কোন প্রকল্প তাঁকে কত টাকা দিতে পারে তার একটা আনুমানিক হিসেব সেখানে রয়েছে। পাশাপাশি মনে রাখতে হবে, দীর্ঘমেয়াদে লগ্নি করার সময়ে রিটার্নের ক্ষেত্রে মূল্যবৃদ্ধিকে ছাপিয়ে যাওয়ার কথা ভাবতে হবে আপনাকে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

ধৈর্যের অভাব

অনেকেই মানেন, বিশ্বাসে মিলায় বস্তু। আমি বলি, ধৈর্যে মেলে মুনাফা। এ কথা যে সাধারণ লগ্নিকারীরা জানেন না এমনটা নয়। কিন্তু অনেক সময়েই দেখা যায়, কোনও প্রকল্পে অল্প মেয়াদে পুঁজির দর কমে গেলে লগ্নিকারীর কপালে ঘাম জমতে থাকে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে ধৈর্য ধরতে না পেরে সেই অবস্থাতেই ফান্ডটি বিক্রি করে হাঁফ ছাড়েন। অথচ ধৈর্য ধরতে পারলে হয়তো ওই প্রকল্প থেকেই ভাল মুনাফা ঘরে তুলতে পারতেন তিনি।

উপযুক্ত সময়ের খোঁজ

সমুদ্রের সামনে বসে আছেন। শেষ ঢেউটা চলে গেলেই নামবেন। ঢেউ শেষ হয় না। আর আপনারও সমুদ্রে নামা হয়ে ওঠে না।

লগ্নির ক্ষেত্রেও এমন ঘটনা ঘটে। পুঁজি ঢালার উপযুক্ত সময়ের অপেক্ষা করতে করতে অনেকের বছরের পর বছর কেটে যায়। লগ্নির ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার ঘটে। মনে রাখবেন, লগ্নি করার এবং তোলার উপযুক্ত সময় চিহ্নিত করাটা বিশেষজ্ঞ এবং ট্রেডারদের কাজ।

এমনকি অনেক ক্ষেত্রে তাঁরাও এর থই খুঁজে পান না। তাই সাধারণ লগ্নিকারীদের এই নিয়ে চিন্তা করাই উচিত নয়। বরং তাঁদের উচিত প্রকল্পের ভাল-মন্দে নজর দেওয়া। এটা ঠিক, কোনও কোনও প্রতিকূল পরিস্থিতিতে (মন্দা ইত্যাদি) অনেক ভাল স্টক বা ফান্ডের দামও পড়তে থাকে। তবে সময় দেওয়া গেলে সেগুলিই ফের ঘুরে দাঁড়ায়।

শুরুতে টেস্ট ব্যাটিং

টেস্ট ম্যাচে ইনিংসের শুরুতে ব্যাটসম্যানরা উইকেট বুঝে ধীরেসুস্থে ব্যাটিং শুরু করেন। লগ্নির টেস্ট ম্যাচে কিন্তু স্ট্র্যাটেজি হবে অন্য রকম। সেখানে স্লগ ওভারের ব্যাটিংটা করতে হবে শুরুতেই। ভবিষ্যতে বিয়ে, সংসার, সন্তান, বাড়িঘরের দায়িত্বের কথা মাথায় রেখে। কারণ, রক্ষণশীল লগ্নিতে এত সব কিছুর খরচ তোলা সম্ভব নয়। এই সময়েই লগ্নি করতে হবে ইকুইটিতে। তবে প্রকল্পে নজরও রাখতে হবে নিয়মিত। এর পর বয়স বাড়লে ব্যাটিংয়ে ভারসাম্য আনতে হবে। ঝুঁকি কমাতে হবে লগ্নিতে।

অনেকে পেশাদারি জীবনের শুরুতেই বাড়ি-গাড়ি কিনে ইএমআইয়ের বাঁধুনিতে আটকা পড়ে যান। ফলে তাঁদের কাছে আলাদা ভাবে লগ্নি করার মতো টাকা বিশেষ থাকে না। তাই ওই দু’টি পরিকল্পনা একটু পিছিয়ে দেওয়া সম্ভব কি না, তা একটু খতিয়ে ভাবতে পারেন। আবার বাজারের পরিস্থিতি সব সময়ে সমান যায় না। তাই সব সময়ে ঘরে তোলা যায় না একই অঙ্কের মুনাফা। আবার কয়েক বছর লগ্নি করার পরে হয়তো মনে হতেও পারে, কিছু সিদ্ধান্ত ভুল হয়েছে। সেই ভুল যেন আর না হয়।

তা হলে করণীয়?

• পেশার শুরু থেকেই লগ্নিতে গতি আনতে পারলে ভাল। তবে যখনই লগ্নি করুন না কেন, ভাল করে ভেবে নিন আপনার লক্ষ্য কী। শুধু দীর্ঘমেয়াদি নয়, ভাবুন স্বল্পমেয়াদি লক্ষ্যগুলির কথাও।

• কোন ধরনের লগ্নি কী প্রয়োজনে, সেটা বোঝার চেষ্টা করতে হবে। ধরা যাক, অবসর জীবনের জন্য ২০ বছর ধরে টাকা জমাতে চান। সেই টাকা যদি ঋণপত্র নির্ভর ফান্ডে রাখেন তা হলে সেটা বিচক্ষণতার পরিচয় নয়।

• যদি মনে করেন শেয়ার বাজার বা মিউচুয়াল ফান্ডে লগ্নি করবেন, তা হলে সেগুলি সম্পর্কে ন্যূনতম জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। যে সংস্থার শেয়ার কিনতে চান, তার ব্যবসা কী, গত কয়েক বছরে পারফরম্যান্সই বা কেমন, তা জানতেই হবে। আবার মিউচুয়াল ফান্ডে লগ্নি করলে অন্তত ‘ন্যাভ’ কী, সে সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। জানা দরকার সংশ্লিষ্ট ফান্ডের প্রকৃতি, লগ্নির ক্ষেত্র, অতীতের রিটার্ন সম্পর্কেও।

• যে সমস্ত লগ্নির পুঁজি কিস্তিতে দিতে হয়, তার টাকার জোগান রয়েছে তো? সেটা এক বার যাচাই করে নিন। ধরা যাক, বছরের কোনও সময়ে অফিস থেকে ইনসেনটিভ পেলেন। করে দিলেন লগ্নি। সেই লগ্নি যদি এককালীন না হয়ে কিস্তিতে করতে হয়, তা আপনার পক্ষে সম্ভব তো?

• লগ্নি করুন। কিন্তু দেখে নিন দৈনিক প্রয়োজন, হঠাৎ এসে পড়া সমস্যার মোকাবিলা করার জন্য ব্যাঙ্ক বা লিকুইড ফান্ডে যথেষ্ট টাকা আছে তো?

লেখক লগ্নি বিশেষজ্ঞ

মতামত ব্যক্তিগত

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement