আইআরডিএআই-কে বিশেষ ভাবে সক্ষমদের জন্য দ্রুত স্বাস্থ্য বিমা চালুর নির্দেশ দিয়েছে দিল্লি হাই কোর্ট। প্রতীকী চিত্র।
কিছু রোগের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য বিমার সুবিধা না পাওয়া নিয়ে বহু মানুষের ক্ষোভ রয়েছে। এর মধ্যে বিশেষ ভাবে সক্ষম বা মানসিক রোগীদের চিকিৎসা খাতে নিয়মিত খরচের প্রয়োজন থাকায় সাধারণ রোজগেরে অসংখ্য পরিবার যে অনেক সময়েই অসহায় পরিস্থিতিতে পড়ে, সে ব্যাপারে বিভিন্ন সময় সরব হয়েছে সংশ্লিষ্ট মহল। আর্থিক ভাবে সুরক্ষিত থাকার এই অধিকার পাওয়ার দাবিও উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি আইআরডিএআই-কে বিশেষ ভাবে সক্ষমদের জন্য দ্রুত স্বাস্থ্য বিমা চালুর নির্দেশ দিয়েছে দিল্লি হাই কোর্ট। তিনটি সাধারণ বিমা সংস্থাকে ১৫ মে-র মধ্যে নিয়ন্ত্রকের কাছে প্রকল্প জমা দিতে বলেছে। বাদবাকি সাধারণ এবং স্বাস্থ্য বিমা সংস্থাগুলিকেও প্রকল্পের রূপরেখা জমা দিতে হবে। সেগুলি খতিয়ে দেখে প্রকল্প মঞ্জুর করবে আইআরডিএআই। একাধিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন সংস্থা বিশেষ ভাবে সক্ষমদের বিমা করাতে না চাওয়ায় আদালতে মামলা হয়েছিল। এই নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছেন বিমা বিশেষজ্ঞেরা। তবে তাঁদের মতে, আরও বেশ কিছু রোগে বিমার সুবিধা দেওয়া দরকার।
গত বছর এক মামলায় আদালত বলেছিল, জীবনের অধিকারের আওতায় স্বাস্থ্যরক্ষা পড়ে। স্বাস্থ্যরক্ষার অধিকারের অঙ্গ স্বাস্থ্য বিমা। তাই তা কেনার সুবিধা দিতে হবে বিশেষ ভাবে সক্ষমদেরও। আইআরডিএআই-কে তাঁদের জন্য আলাদা পলিসি আনতে বলা হয়। আইআরডিএআই এ নিয়ে বিমা সংস্থাগুলির সঙ্গে বৈঠক করে। গত মাসে জারি হয় বিজ্ঞপ্তি। সংস্থাগুলিকে প্রকল্প জমা দিতে বলা হয়। সেই কাজই আরও দ্রুত সারার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। বলেছে, ২০১৬ সালের ‘রাইটস অব পার্সনস উইথ ডিজ়এবিলিটিজ়’ আইন অনুসারেই বিশেষ ভাবে সক্ষমেরাও বিমা কেনার যোগ্য। নিয়ন্ত্রক যে ইতিমধ্যেই বিশেষ ভাবে সক্ষম, এইচআইভি/এডস এবং মানসিক রোগীদের জন্য পলিসি মঞ্জুরের বিষয়টি বাধ্যতামূলক করতে পদক্ষেপ করেছে, তা-ও মেনেছে।
ন্যাশনাল ইনশিয়োরেন্সের প্রাক্তন ডিরেক্টর সিদ্ধার্থ প্রধান বলেন, ‘‘বিশেষ ভাবে সক্ষমদের দ্রুত স্বাস্থ্য বিমার আওতায় আনার এই উদ্যোগ সামাজিক সুরক্ষার নিরিখে গুরূত্বপূর্ণ। তবে এইচআইভি/এডসে আক্রান্তদের বিমার শর্ত তৈরির ব্যাপারে সংস্থাগুলিকে সতর্ক হতে হবে। কারণ, এই ব্যক্তিদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকে না। তাই তাঁরা ঘনঘন নানা রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।’’ বিমা বিশেষজ্ঞ এন বাঞ্চুর-এর কথায়, ‘‘আদালতের নির্দেশের জন্য অপেক্ষা না করে বিমা সংস্থাগুলিকে সমাজের সব শ্রেণির মানুষের জন্য বিমা আনতে হবে। যুদ্ধ, পারমাণবিক কারণে ক্ষতি ছাড়া বাকি সব শারীরিক চিকিৎসাকেই বিমার সুরক্ষা দেওয়া জরুরি।’’