—প্রতীকী ছবি।
হাঁসফাঁস করা গরম পড়ার আগেই নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ জোগানোর জন্য তৈরি থাকার বার্তা দিল রাজ্য। পরিষেবা স্বাভাবিক রাখা এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করার আগাম ব্যবস্থা নিতে বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ ভবনে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার সদর দফতরে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করলেন বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
গত কয়েক বছর ধরেই চড়া গরমের সঙ্গে সঙ্গে গোটা দেশে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট। ফলে উদ্বেগের পাশাপাশি ক্ষোভ চড়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। পশ্চিমবঙ্গে চাহিদা মতো বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে বলে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা দাবি করলেও, পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন তাদের আওতাভুক্ত বেশ কিছু অঞ্চলের গ্রাহকেরাও। সেই সঙ্গে প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে কখনও কখনও তীব্র হয় বিভ্রাট। বিদ্যুতের ছেঁড়া তারের কারণে দুর্ঘটনায় কিছু মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। যাকে কেন্দ্র করে বারবার উত্তপ্ত হয়েছে একাধিক এলাকা। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এ বার সেই সব অবাঞ্ছিত বিভ্রাটের পরিস্থিতি এড়ানোর ইঙ্গিত মন্ত্রী-সহ রাজ্য বিদ্যুৎ মহলের শীত যেতে না যেতেই বৈঠকে বসার ঘটনায়। তার উপর মাস কয়েকের মধ্যে লোকসভা নির্বাচন।
রাজ্য বিদ্যুৎ দফতর জানিয়েছে, বণ্টন সংস্থার জেলার আধিকারিকেরাও এ দিনের ভিডিয়ো-বৈঠকে যোগ দিয়েছেন। পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রেক্ষিতে বিদ্যুৎমন্ত্রীর নির্দেশ, খুঁটি, কন্ডাক্টর কেব্ল কিংবা ট্রান্সফরমার-সহ সব ধরনের সরঞ্জাম পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুত রাখতে হবে। বৈঠকে বিদ্যুৎ দফতরের সচিব তথা বণ্টন সংস্থাটির সিএমডি শান্তনু বসু এবং অন্যান্য পদস্থ কর্তারাও ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, যে সব সুরক্ষা সংক্রান্ত ঝুঁকির জেরে দুর্ঘটনা ঘটেছে বা অন্যান্য কারণে সমস্যা তৈরি হয়েছে, নিয়মমাফিক সে সবের তদন্ত করাই রেওয়াজ বণ্টন সংস্থাটির। গত এক বছরে এমন বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় যা যা পদক্ষেপ করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তার কাজ চলছে। যেগুলি বাকি রয়েছে, আগামী মাসের মধ্যে সেরে ফেলার বিষয়েও আলোচনা হয় এ দিনের বৈঠকে। বিশেষ করে জোর দেওয়া হয় আমজনতার বিদ্যুৎ সংক্রান্ত নিরাপত্তার উপর।
গত বছরে বণ্টন সংস্থার এলাকায় বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা উঠেছিল প্রায় ৯২০০ মেগাওয়াটে। তা সামাল দিতে রাজ্যের বিভিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্থার পাশাপাশি বাইরে থেকেও খানিকটা বেশি দামে তা কিনতে হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের দাবি, এ বার শুধু আবহাওয়াজনিত কারণে নয়, ভোটের জন্যও সেই সর্বোচ্চ চাহিদার সীমা পেরনোর সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সে কথা মাথা রেখে সুষ্ঠু ভাবে বিদ্যুৎ জোগানের পরিকল্পনা করতে হবে বণ্টন সংস্থাটিকে।