—প্রতীকী চিত্র।
ডলারের সাপেক্ষে ফের নজিরবিহীন তলানিতে নামল টাকার দাম। সোমবার ১২ পয়সা বেড়ে ডলার এই প্রথম ছুঁল ৮৩.৩৮ টাকা। এর আগে কখনও এত নীচে নামেনি ভারতীয় মুদ্রা। ১৩ নভেম্বর এক ডলার হয়েছিল ৮৩.৩৩ টাকা। ওটাই ছিল টাকার সর্বনিম্ন মূল্য। এ দিন শেয়ার বাজারও পড়েছে। সেনসেক্স ১৩৯.৫৮ পয়েন্ট নেমে থামে ৬৫,৬৫৫.১৫ অঙ্কে। নিফ্টি হয়েছে ১৯,৬৯৪। পতন ৩৭.৮০।
পটনা আইআইটির অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামানিকের দাবি, ভারতের শেয়ার বাজার থেকে নতুন করে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির পুঁজি তুলে নেওয়ার ঘটনাই মূলত টাকাকে ধাক্কা দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘শেয়ার বেচে পাওয়া টাকা ডলারে রূপান্তরিত করেছে তারা। ফলে আমেরিকার মুদ্রার চাহিদা বেড়েছে। চড়েছে তার দাম। তলিয়ে গিয়েছে ভারতের মুদ্রা। এ ছাড়া, বিদেশি মুদ্রার ভান্ডার কমায় রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের সোনা কেনার প্রভাবও টাকার দামে পড়েছে।’’ সম্প্রতি আরবিআইয়ের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী ভারতের বিদেশি মুদ্রা ভান্ডার ৪৬.২০ কোটি ডলার কমে হয়েছে ৫৯,০৩২.১০ কোটি ডলার (১০ নভেম্বরের হিসাব)। বিশেষজ্ঞদের অনেকেই সতর্ক করে বলছেন, দীর্ঘ দিন ধরে ডলার ৮৩ টাকার উপরে। এটা দেশের অর্থনীতির জন্য আশঙ্কাজনক।
রফতানি সংস্থা নিপা এক্সপোর্টসের ডিরেক্টর রাকেশ শাহের দাবি, টাকার দাম কমায় রফতানির বাজার ধরতে তাঁদের কিছুটা সুবিধা হচ্ছে। তবে তা সাময়িক। অর্থনীতির নিরিখে পড়তি টাকায় দুশ্চিন্তার পাল্লা তুলনায় অনেক বেশি ভারী। চড়া ডলার অশোধিত তেল-সহ বিভিন্ন পণ্যের আমদানির খরচ বাড়াচ্ছে। তাতে দেশে জিনিসের দাম আরও বাড়ছে। আর এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে অর্থনীতিতে।
টাকার দামে স্থিতিশীলতা ফেরানোর ব্যবস্থা করার আর্জি জানিয়ে রাকেশের সতর্কবার্তা, ‘‘এখন বিদেশের বাজারে আগের থেকে কিছুটা কম দামে পণ্য বিক্রির বরাত নিতে পারছি। কিন্তু দাম আমরা হাতে পাব তা রফতানি হয়ে যাওয়ার পরে। যখন ওই পণ্য রফতানি করা হবে, তখন ডলারের দাম কমে এলে কিন্তু সমস্যায় পড়ব। তাই দীর্ঘ মেয়াদে টাকার দামের স্থিতিশীলতা জরুরি।’’