গয়নার সোনাও প্রথম বার ৫৭,৭০০ টাকায় পৌঁছেছে। প্রতীকী ছবি।
দু’দিন আগেই প্রথম বার ৬০ হাজার পেরিয়ে কলকাতার বাজারে নজির গড়েছিল সোনার দাম। সে দিনের ৬০,৪৫০ টাকাকে পিছনে ফেলে সোমবার তা উঠল নতুন শিখরে। ১০ গ্রাম পাকা সোনা (২৪ ক্যারাট) এই প্রথম ছুঁল ৬০,৮০০ টাকা। নজর এ বার ৬১ হাজারে। গয়নার সোনাও প্রথম বার ৫৭,৭০০ টাকায় পৌঁছেছে।
আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় চাহিদা বাড়ায় সোনা আউন্স পিছু ২০০০ ডলার ছাড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মূল্যবৃদ্ধি, সুদবৃদ্ধি, ব্যাঙ্কের স্বাস্থ্য, শেয়ার বাজার ইত্যাদি নিয়ে অনিশ্চয়তাই এর কারণ। যার প্রভাবে ভারতেও ছুটছে দর। জিএসটি ধরে কলকাতায় পাকা সোনা ৬২,৬২৪ টাকা, গয়নার সোনা ৫৯,৪৩১ টাকা।
স্বর্ণ শিল্পমহলের দাবি, সাধারণ মানুষ এখন গয়নায় হাত ছোঁয়াতেই পারছেন না। বিয়ের কেনাকাটা পিছোচ্ছেন অনেকে। একাংশ দাম আরও বাড়ার আশঙ্কায় বরাদ্দ টাকা কমিয়ে অল্প কিনছেন। বহু দোকানে বিক্রি কার্যত উধাও। সকলেরই প্রশ্ন, দাম কোথায় ঠেকবে? ছোট ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে পাড়ার দোকানে গয়না কেনার ভিড় হয়। তাঁদের বাঁচাতে ছবিটা দ্রুত বদলানো জরুরি।
যদিও বিশেষজ্ঞদের অনেকেরই ধারণা, লগ্নির জন্য সোনার চাহিদা আপাতত কমবে না। ফলে দাম কমার সম্ভাবনাও কম। উল্টে বিশ্ব অর্থনীতির অবস্থা আরও ঘোরালো হলে তা চড়তে পারে। পণ্য লেনদেনের বাজার মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জের চিফ বিজ়নেস অফিসার ঋষি নাথানি বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় বিশেষত আর্থিক সমস্যা, রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং অনিশ্চিত মুদ্রার বাজারে সম্পদ হিসাবে সোনা গুরুত্ব পায়। চড়া মূল্যবৃদ্ধির আবহে ভবিষ্যৎ লোকসানের হাত থেকে বিনিয়োগকে সুরক্ষিত করতে তার আগাম লেনদেনে লগ্নির পথ নেন অনেকে।’’
বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দত্তের দাবি, এই কারণেই সোনার আরও চড়ার আশঙ্কা। তাঁর মতে, ‘‘গোটা তিনেকের কথা জানি। কিন্তু বিশ্বের ঠিক কতগুলি ব্যাঙ্ক সমস্যায়, তা স্পষ্ট নয়। এর সংখ্যা বাড়লে সোনায় লগ্নি এবং দাম বাড়তে পারে। ভারতীয় ব্যাঙ্কগুলির অবশ্য অবস্থা ভাল। তবে সোনা আমদানির খরচ বাড়লে পড়তে পারে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারে।’’