প্রতীকী ছবি।
এখন থেকে জাতীয় পেনশন প্রকল্পে (এনপিএস) গ্রাহক ইচ্ছা করলে আগের থেকে বেশি টাকা শেয়ার বাজারে খাটাতে পারবেন। এর জন্য এনপিএস তহবিলের টাকা শেয়ারে বিনিয়োগের বিধিনিষেধ শিথিল করল এই ক্ষেত্রের নিয়ন্ত্রক পেনশন ফান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রেগুলেটরি অথরিটি (পিএফআরডিএ)। তারা জানিয়েছে, গ্রাহক বাজারের ঝুঁকি নিয়ে আয় বাড়াতে ইচ্ছুক হলে এ বার পারবেন। নির্দিষ্ট একটি বয়সের পরে শেয়ারে লগ্নির জন্য নির্দিষ্ট করা তহবিলের টাকা বাধ্যতামূলক ভাবে ধাপে ধাপে কমানোর যে নিয়ম মানতে হয় এখন, তার আর প্রয়োজন হবে না। অর্থাৎ চাইলে তিনি ওই নিয়ম না-ও মানতে পারেন। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর্যন্ত চালিয়ে যেতে পারেন সেই বিনিয়োগ। তবে কেউ ঝুঁকি না নিতে চাইলে পুরনো নিয়ম অনুসরণ করতেও কোনও বাধা নেই।
এনপিএসে এখন দু’টি অ্যাকাউন্ট। টিয়ার-১ এবং টিয়ার-২। পেনশন প্রকল্পটিতে যাঁরা লগ্নি করতে চান, তাঁরা টিয়ার-১ অ্যাকাউন্ট খোলার পরে ইচ্ছে করলে টিয়ার-২ খুলতে পারেন জমানো টাকা তুলতে পারার মতো কিছু বাড়তি সুবিধা থাকায়। তবে প্রথমটি না খুলে দ্বিতীয়টি খোলা যাবে না। দুই অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রেই তহবিলের টাকা গ্রাহক সরকারি ঋণপত্র, কর্পোরট বন্ড, শেয়ার এবং বিকল্প বিনিয়োগ বা অলটারনেট ইনভেস্টমেন্ট প্রকল্পে (যেমন, রিয়াল এস্টেট ইনভেস্টমেন্ট ট্রাস্ট, ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ট্রাস্ট, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ইত্যাদি) বিনিয়োগ করতে পারেন। প্রকল্প চারটিতে জমার সর্বোচ্চ কত শতাংশ টাকা রাখা যাবে, তা নির্দিষ্ট করা আছে। বর্তমান নিয়মে, শেয়ারে তহবিলের সর্বোচ্চ ৭৫% টাকা রাখা যায় দুই অ্যাকাউন্টেই। তবে টিয়ার-১ অ্যাকাউন্টে গ্রাহকের ৫১ বছর বয়সের পর থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত প্রতি বছর তার থেকে বরাদ্দ ২.৫% করে কমে সরকারি ঋণপত্রের খাতে স্থানান্তরিত হতে থাকে। লক্ষ্য, ঝুঁকি কম রাখা।
পিএফআরডিএ জানিয়েছে, এই বাধ্যবাধকতাই আর থাকছে না। গ্রাহক চাইলে এনপিএসের মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত টিয়ার-১ অ্যাকাউন্টে তাঁর তহবিলের সর্বোচ্চ ৭৫% শেয়ারে খাটিয়ে যেতে পারবেন। টিয়ার-২ অ্যাকাউন্টে আরও এক ধাপ এগিয়ে শেয়ারে খাটানোর সুযোগ খুলেছে জমা টাকার পুরোটারই, অর্থাৎ বরাদ্দ হতে পারে ১০০%। সেখানেও এর সর্বোচ্চ সীমা ছিল ৭৫%।
লগ্নিকারীদের আয়ের সুযোগ বাড়াতেই বর্তমান নিয়ম শিথিল করা হল, ব্যাখ্যা পিএফআরডিএ-র চিফ জেনারেল ম্যানেজার কে মোহন গান্ধীর। তিনি বলেন, ‘‘এনপিএস গ্রাহকদের আবেদন শুনেই নিয়মের কিছু বদল আনা হয়েছে। অনেকের শেয়ার বাজারের ঝুঁকি নিতে আপত্তি নেই। তাঁরা আমাদের কাছে সেই পথ খোলার আবেদন করেছিলেন। তার ভিত্তিতেই নতুন নিয়ম। তবে কারও উপরে কিছু চাপিয়ে দিচ্ছি না। কেউ ইচ্ছা করলে পুরনো নিয়মেই থেকে ঝুঁকি কম নিয়ে লগ্নি করতে পারেন।’’