জেটলির মতে, দেশের অগ্রগতির কথা স্বীকার করেছে আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার। —ফাইল চিত্র।
ঘাড়ের উপরে নিঃশ্বাস ফেলছে পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোট। বছর ঘুরতেই লোকসভা নির্বাচন। অথচ তার আগে পেট্রল, ডিজেলের চড়া দর নিয়ে ক্ষুব্ধ মানুষ। ক্রমাগত আক্রমণ শানাচ্ছেন বিরোধীরা। মোদী সরকারকে সরিয়ে জোট সরকার গড়ার ডাক দিচ্ছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। এই আক্রমণের মুখে পড়ে দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কেন্দ্রে দৃঢ় নেতৃত্বের পক্ষে সওয়াল করলেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।
মঙ্গলবার বণিকসভা অ্যাসোচ্যামের ৯৮তম বার্ষিক সভায় তিনি বলেন, দারিদ্র দূর করতে এবং ভারতকে উন্নত অর্থনীতির দেশে পরিণত করতে দৃঢ় নেতৃত্ব জরুরি। অস্থায়ী জোট সরকার নয়।
জেটলির মতে, দেশের অগ্রগতির কথা স্বীকার করেছে আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার। জানিয়েছে, বৃদ্ধির নিরিখে ভারত উজ্জ্বলতম বিন্দু। তিনি বলেন, সেই অবস্থান অন্তত দু’দশক ধরে রাখার জন্য কী কী করতে হবে, সেটা যাঁরা জানেন, দেশের সে-রকম নেতৃত্বই প্রয়োজন। যারা প্রতি মুহূর্তে সরকারকে টেনে নামানোর চেষ্টা করছে, সে-রকম নয়। তা হলে দারিদ্র দূর করে ভারত উন্নত অর্থনীতিতে পরিণত হতে পারবে বলে তাঁর দাবি।
একই সঙ্গে বৃদ্ধির জন্য দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারার ক্ষমতার কথাও তুলে এনেছেন জেটলি। এই প্রসঙ্গে তাঁর দাবি, পরিকাঠামোয় ঋণদাতা সংস্থা আইএল অ্যান্ড এফএসের সমস্যা সামাল দিতে মোদী সরকার চটজলদি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেন্দ্রে যদি ‘দুর্বল নেতৃত্ব’ থাকতেন, তা হলে এত তাড়াতাড়ি সমস্যা মিটত না।
তবে পেট্রল, ডিজেলের দামে যে মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে, তা বিলক্ষণ জানে মোদী সরকার। আজও ‘ইচ্ছে করে’ অভাব তৈরির কারণেই অশোধিত তেলের দাম চড়ছে বলে দাবি করেছেন জেটলি। তাঁর মতে, এর জেরেই দেশে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। যার মোকাবিলায় দেশের অর্থনীতির ভিত আরও মজবুত করার পক্ষেও সওয়াল করেছেন অর্থমন্ত্রী। তবে এ দিনই আবার জেটলির বিরুদ্ধে ফের তোপ দেগেছেন কংগ্রেস মুখপাত্র মণীশ তিওয়ারি। তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী ব্লগ লিখছেন। আর অর্থনীতি ‘খারাপ সময়ের’ মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তেলের দাম, আইএল অ্যান্ড এফএস, টাকার পতন নিয়েও তোপ দেগেছেন তিনি।
বিশেষজ্ঞদের অনেকের মতে, গত লোকসভা নির্বাচনের আগে ৮-১০% বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী। বলেছিলেন কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার কথা। অথচ সেই হার ছোঁয়া তো দূর অস্ত্, ৮% পেরোতেই হিমশিম কেন্দ্র। ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বাড়লেও চাষিরা সন্তুষ্ট নন। যে কারণে মধ্যরাতে মুম্বই দখল বা সম্প্রতি গাঁধী জয়ন্তীতে দিল্লি যাত্রা দেখেছে দেশ। পেট্রল, ডিজেলে কর কমলেও ক্ষোভ কমছে না মানুষের। এই পরিস্থিতিতে অর্থনীতিতে মোদীর নেতৃত্বের পক্ষেই জেটলি জোরালো সওয়াল করলেন বলে ওই বিশেষজ্ঞদের অভিমত।