শ্যাম স্টিলের ডিরেক্টর ললিত বেরিওয়ালের দাবি, মাত্র এক মাসে ইস্পাতের দাম প্রায় ২৫% বেড়েছে। এর কারণ এই শিল্পে ব্যবহৃত কয়লা। যার বড় অংশ এতদিন ইউক্রেন থেকে আসত। সেখানে রাশিয়ার সামরিক হামলার কারণে তা বন্ধ।
ফাইল চিত্র।
একে তো ইস্পাতের দাম অনেকখানি বেড়েছে। তার উপরে নাগাড়ে চড়ছে জ্বালানি। উপদেষ্টা সংস্থা স্টিল-মিন্ট ইন্ডিয়ার দাবি, পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, আগামী তিন মাসে (এপ্রিল-জুন) দেশে ইস্পাতের চাহিদা তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সেটা হলে বিক্রিও ধাক্কা খাবে। ইতিমধ্যেই সাহায্যের আর্জি নিয়ে কেন্দ্রের দ্বারস্থ হয়েছে এই শিল্প। তাদের বক্তব্য, পরিস্থিতি ক্রমশ হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে। এখনই নির্দিষ্ট পদক্ষেপ না করলে ভবিষ্যতে সমস্যা হতে পারে। আর্থিক স্বাস্থ্য ভেঙে পড়তে পারে বহু ইস্পাত সংস্থার। বিশেষত ছোট-মাঝারিদের।
দেশে পেট্রলের দাম নজিরবিহীন উচ্চতায়। ডিজ়েলও দেশের কোথাও ১০০ টাকা ছাড়িয়েছে, কোথাও সেই দিকে ছুটছে। স্টিল-মিন্ট বলছে, এতে ইস্পাত পণ্য সরবরাহের খরচ বাড়ছে। ইস্পাতের চড়া দামের সঙ্গে মিলে তা চাহিদাকে টেনে নামাতে পারে। তাদের অনুমান, চলতি অর্থবর্ষে (২০২১-২২) দেশে ইস্পাত বিক্রির সম্ভাব্য অঙ্ক হতে পারে ৯.৮০ কোটি টন।
শ্যাম স্টিলের ডিরেক্টর ললিত বেরিওয়ালের দাবি, মাত্র এক মাসে ইস্পাতের দাম প্রায় ২৫% বেড়েছে। এর কারণ এই শিল্পে ব্যবহৃত কয়লা। যার বড় অংশ এতদিন ইউক্রেন থেকে আসত। সেখানে রাশিয়ার সামরিক হামলার কারণে তা বন্ধ। ফলে চাহিদার নিরিখে জোগান কম। বেড়েছে দাম। তার উপরে সংস্থাগুলি দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশ থেকে কয়লা আমদানি করতে বাধ্য হচ্ছে। যেগুলি বেশি দামি। সঙ্গে যোগ হয়েছে জ্বালানির চাপ। তেলের চড়া দামে জাহাজে করে কয়লা আনতে অনেক বেশি খরচ হচ্ছে। বেরিওয়াল বলছেন, ‘‘আগে যেখানে টন পিছু কয়লা কেনা যেত ১৫০ ডলারে (প্রায় ১১,৩৬১ টাকা), সেখানে এখন লাগছে ৩৫০ ডলার (প্রায় ২৬,৫০৯ টাকা)।’’
বিক্রি কমে আগামী দিনে লোকসানে ডোবার পরিস্থিতি এড়াতে বিকল্প পথ খুঁজছে ইস্পাত শিল্প। তারা কেন্দ্রের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে। যার মধ্যে একটি, চড়া আমদানি খরচ কমাতে দেশে সস্তায় কয়লা জোগাড়ের ব্যবস্থা হোক। সে জন্য দাম কমানো হোক নিলামে ওঠা কয়লা ব্লকের। কারণ, ছোট-মাঝারি ইস্পাত সংস্থাগুলি বেশি দামের জন্যই তা কিনতে পারছে না। অথচ চাহিদার ৫০% কেনে তারাই। অন্য দাবিটি হল, পেলেট রফতানিতে রাশ টানুক সরকার। ইস্পাতজাত পণ্য তৈরির অন্যতম কাঁচামাল এটি। কিন্তু বেশিরভাগটাই বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে চড়া দামে বিকোচ্ছে দেশে। উৎপাদন শুল্ক ছেঁটে জ্বালানির দামে সুরাহার দাবিও তুলেছে একাংশ।