— ফাইল চিত্র
উন্নত প্রযুক্তির হাত ধরে দক্ষতা বাড়ছে পাটচাষে। বাড়ছে হেক্টর পিছু উৎপাদন। খরচ কমিয়ে চাষিদের ভাল আয়ের পথ দেখাচ্ছে কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রকের অধীন ন্যাশনাল জুট বোর্ডের প্রকল্প। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, সাফল্য দেখে রাজ্য কৃষি দফতরও এই উদ্যোগে সামিল হতে চলেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, প্রথাগত চাষের বদলে বিজ্ঞানসম্মত নিয়ম-নীতি ও সামান্য কিছু যন্ত্রের ব্যবহার যে পাটের ফলন ও তার মান বাড়াতে পারে, তা রাজ্যের অধিকাংশ কৃষকই জানতেন না। ন্যাশনাল জুট বোর্ডের ‘জুট আই-কেয়ার’ প্রকল্পের আওতায় এসে হাতে হাতে তার ফল পেতে শুরু করেছেন বহু চাষি। শুধু যে হেক্টর পিছু উৎপাদন বাড়ছে তা-ই নয়, পাটের রং, মান, দৈর্ঘ্য ও চাষের খরচ কমায় আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন তাঁরা। গত অর্থবর্ষে (২০১৬-’১৭) রাজ্যের প্রায় ৮০ হাজার চাষি ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে এই প্রকল্পের আওতায় বিজ্ঞানসম্মত পাট চাষ শুরু করেছেন। সূত্রের খবর, সাফল্যের খতিয়ান দেখে বোর্ডকে ২০ কোটি টাকা পর্যন্ত খরচের অনুমোদন দিয়ে রেখেছে কেন্দ্র, যার বেশির ভাগটা পাবে রাজ্য।
সুবিধার আওতায়
সাল চাষি জমি (হেক্টর)
• ২০১৫ ২১,৫৪৮ ১২,৩৩১
• ২০১৬ ৪১,৬১৬ ২৬,২৬৪
• ২০১৭ ১,০৩,১২২ ৭০,৩২৮
*পশ্চিমবঙ্গ-সহ অন্যান্য রাজ্যের
চাষিদের প্রাপ্তি
• পরীক্ষিত বীজ
•
জমিতে বীজ বসানো ও নিড়ানি দেওয়ার যন্ত্র
•
পাট পচাতে জীবাণুর মিশ্রণ
লাভ কী?
•
চাষের খরচ কমা
•
উৎপাদন বাড়া
•
পাটের দৈর্ঘ্য বেশি হওয়া
•
তার আঁশে সোনালি রং
দেশের ৮০% পাট উৎপাদনই হয় পশ্চিমবঙ্গে। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে পাট চাষ ও তার মান ধরে রাখায় প্রধান বাধা অপরীক্ষিত বীজ। এই প্রকল্পে চাষিদের সরকারি ভাবে পরীক্ষিত বীজ যেমন দেওয়া হচ্ছে, তেমনই যন্ত্রের সাহায্যে সারিতে বীজ বোনা থেকে শুরু করে নিড়ানি দেওয়ার প্রশিক্ষণ মিলছে। বোর্ড কর্তৃপক্ষের দাবি, নতুন পদ্ধতিতে চাষের মান বাড়ার সঙ্গেই পাট গাছ পচাতে বিশেষ এক ধরনের জীবাণুর মিশ্রণ ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে কম জলে, অনেক কম দিনেই পূর্ণ দৈর্ঘ্যের পাট তৈরি হচ্ছে। আঁশের রংও সোনালি হচ্ছে। বোর্ড ভতুর্কিতে চাষিদের মধ্যে বীজ, যন্ত্র, জীবাণুর মিশ্রণ সবই বণ্টন করছে বলে জানিয়েছে সংস্থা। বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যে আগে যেখানে হেক্টর পিছু ২৩-২৪ কুইন্টল পাট উৎপাদন হতো, সেখানে এই প্রকল্পের আওতায় আসার পরে কমপক্ষে তা ৩২ কুইন্টলে দাঁড়িয়েছে। বারাসত, শেওড়াফুলি, বেথুয়াডহরি, বহরমপুর, মালদহ, কোচবিহার, শিলিগুড়ির নানা ব্লকে এই প্রকল্পে চাষ হচ্ছে।
জুট আই-কেয়ােরর প্রধান কর্তা সুশান্ত পাল জানান, পরিকাঠামো ও লোকবলের অভাবে তাঁরা সর্বত্র প্রকল্প চালু করতে পারেননি। রাজ্য আগ্রহ দেখিয়েছে। ফলে তাঁরাও সুবিধা ছড়িয়ে দেবেন। দু’এক বছরে আরও এক-দেড় লক্ষ চাষি প্রকল্পে আসতে চলেছেন বলে তাঁর দাবি।
২০১৫ সালে বস্ত্রক মন্ত্রক সামান্য তহবিল গড়ে প্রকল্পটি চালু করে।