ইরান থেকে তেল কেনায় আমেরিকা নিষেধাজ্ঞায় ছাড় প্রত্যাহারের পর থেকে ভবিষ্যতে তেলের জোগান নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে বিশ্ব জুড়ে। সূত্রের খবর, জুনে সৌদি আরব হয়তো উত্তোলন বাড়াবে। কিন্তু রফতানির বদলে তা নিজেদের জন্যই ব্যবহার করবে তারা। সে ক্ষেত্রে জোগান না-বাড়লে অশোধিত তেলের দামের নিয়ে ফের অনিশ্চয়তা তৈরি হবে কি না, প্রশ্ন উঠছে সংশ্লিষ্ট মহলে।
মে থেকে ইরানের তেল আমদানিতে ভারত-সহ আটটি দেশের নিষেধাজ্ঞায় ছাড় তুলেছে আমেরিকা। আবার ডিসেম্বর থেকে উত্তোলন ছাঁটাই করছে ওপেক গোষ্ঠীর দেশগুলি। জোগান কমিয়েছে রাশিয়াও। তাই গত মাসে ছাড় তোলার ঘোষণার পরেই সৌদি আরব-সহ অন্যান্য দেশকে তেল উত্তোলন বাড়াতে আর্জি জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সৌদি আরব দিনে ১.০৩ কোটি ব্যারেল অশোধিত তেল উৎপাদন করলেও ডিসেম্বর থেকে জোগান কমিয়েছে। সূত্রের খবর, মে মাসে তারা উৎপাদন কিছুটা বাড়িয়ে ১ কোটি ব্যারেল করতে পারে। গ্রীষ্মে সে দেশে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ে। তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে তেল নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের উৎপাদন বাড়াতে সেই বাড়তি তেল ব্যবহার করে তারা। এ বারও সেই কারণে সামান্য তেলের উৎপাদন বাড়াতে পারে বলে খবর।
কিন্তু অনেকের মতে, ২৫-২৬ জুন ওপেকের বৈঠকের আগে রফতানির জন্য উত্তোলন বাড়াতে নারাজ সৌদি। পাশাপাশি উঠে আসছে সে দেশের আর্থিক অবস্থার কথাও। সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের দাবি, আর্থিক সংস্কার, ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি-সহ নানা কারণে সৌদি চায় আরও কিছু দিন তেলের দাম কমপক্ষে ৭০ ডলার বা তার বেশি থাকুক। তাদের বাজেট ঘাটতি জিডিপি-র ৪.২%। আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের পূর্বাভাস, তেলের দাম ব্যারেলে ৬০ ডলার হলে তা হবে ৭.৯%। তাই উৎপাদন বাড়িয়ে কি তেলের দাম নামাতে রাজি হবে তারা, প্রশ্ন রয়েছে অনেকের মনেই।
তবে এখনও ততটা না হলেও অদূর ভবিষ্যতে বিশ্ব জুড়ে তেলের চাহিদার কী হবে, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ থাকছে। কারণ ইরানের তেলে নিষেধাজ্ঞার পরে ভেনেজুয়েলা, লিবিয়া ও নাইজেরিয়ার সঙ্কটও জোগানে মাথাব্যথার কারণ। এর সঙ্গে তেলের মান নিয়ে সমস্যায় রাশিয়া থেকে আমদানি বন্ধের কথা জানিয়েছে ইউরোপের কিছু দেশ। ফলে সব মিলিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।