BSE SENSEX

বাজারের স্বপ্নের দৌড়, চোখ এখন সুদের দিকে

গত সপ্তাহে দুই সূচকের উত্থানের বড় কারণ ছিল ২০২০ সালের পরে আমেরিকায় প্রথম বার সুদ ছাঁটাই। প্রত্যাশা ছাপিয়ে সেই দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারাল রিজ়ার্ভ এক দফায় ৫০ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমিয়েছে।

Advertisement

অমিতাভ গুহ সরকার

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৭:০১
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

ভারতীয় শেয়ার বাজারের স্বপ্নের দৌড় অব্যাহত। ২৯ অগস্ট সেনসেক্স প্রথম বার ৮২ হাজারের ঘরে (৮২,১৩৪) থেমেছিল। এর মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে সূচকটি ৮৪ হাজার পার করেছে। গত শুক্রবার বাজারে লেনদেনের শেষে সূচকটি ছিল ৮৪,৫৪৪ অঙ্কে। নিফ্‌টির অবস্থান ২৫,৭৯১। দু’টিই রয়েছে রেকর্ড উচ্চতায়।

Advertisement

গত সপ্তাহে দুই সূচকের উত্থানের বড় কারণ ছিল ২০২০ সালের পরে আমেরিকায় প্রথম বার সুদ ছাঁটাই। প্রত্যাশা ছাপিয়ে সেই দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারাল রিজ়ার্ভ এক দফায় ৫০ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমিয়েছে। একই সঙ্গে সে দেশের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কর্মহীন মানুষের সংখ্যা কমেছে। এই দুই কারণে তেতে উঠেছে বিশ্ব বাজার। ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে ভারতেও। এ দেশে দরাজ হাতে পুঁজি ঢেলে চলেছে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি। আকর্ষণীয় হারে বাড়ে শেয়ার ভিত্তিক বিভিন্ন ফান্ডের ন্যাভও। সব মিলিয়ে উৎসবের মরসুমে খুশি লগ্নিকারীরা।

এত বড় উত্থানের পরে সবার স্বাভাবিক প্রশ্ন, এ বার সূচকের মুখ কোন দিকে থাকবে। তবে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে মনে হচ্ছে এখনই সংশোধনের সম্ভাবনা কম। কারণগুলি এক বার দেখে নেওয়া যাক—

Advertisement
  • পরপর দু’মাস দেশের খুচরো বাজারের মূল্যবৃদ্ধির হার ৪ শতাংশের নীচে। অগস্টে কমেছে পাইকারি বাজারের মূল্যবৃদ্ধির হারও।
  • বর্ষা ভাল হয়েছে। আশা, এ বার খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি মাথা নামাবে।
  • আমেরিকা, ব্রিটেন এবং ইউরোপের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক সুদ কমানোর পরে ভারতের রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক কোন পথে হাঁটে সে দিকেই চোখ শিল্প ও বাণিজ্য মহলের। শীর্ষ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি কমিটির পরবর্তী বৈঠক ৭-৯ অক্টোবর। সংশ্লিষ্ট মহলের ক্ষীণ আশা, এ বার ২৫ বেসিস পয়েন্ট হলেও সুদ কমানো হতে পারে। তা যদি হয়, তবে বাজারকে সংশোধনের কবলে পড়তে হবে না।
  • অনুমান, চলতি বছরে আমেরিকা আরও এক দফা সুদ কমাতে পারে।
  • দুর্গাপুজো শেষ হতে না হতেই সংস্থাগুলির জুলাই-সেপ্টেম্বরের আর্থিক ফলাফল ঘোষণা শুরু হয়ে যাবে। জিএসটি এবং কোম্পানি কর আদায়ের পরিসংখ্যান দেখে মনে হচ্ছে ফল সন্তোষজনক হতে পারে।
  • আমেরিকায় সুদ কমার আবহে ভারতে ঋণপত্রের দাম বাড়তে এবং ইল্ড পড়তে শুরু করেছে। গত পাঁচ মাসে ১০ বছরের ইল্ড ৭.২৩% থেকে ৬.৮৭ শতাংশে নেমে এসেছে। এর ফলে ঋণপত্র নির্ভর ফান্ডগুলির ন্যাভ বাড়ছে। যা বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে মুনাফার পথ দেখাবে।
  • ডলারের তুলনায় টাকার দাম বাড়তে শুরু করেছে।

সব মিলিয়ে বাজারের আবহাওয়া এখন সদর্থক। চলতি মাসের শেষে অক্টোবর-ডিসেম্বরে স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পগুলির সুদ জানা যাবে। অনুমান, রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক যত দিন পর্যন্ত সুদ কমানোর পথে না হাঁটছে, তত দিন অধিকাংশ প্রকল্পে সুদ অপরিবর্তিত থাকবে। শীর্ষ ব্যাঙ্ক সুদ কমাতে শুরু করলে ব্যাঙ্কের মেয়াদি জমা প্রকল্প আকর্ষণ হারাবে। ফলে চাহিদা বাড়লেও কমতে পারে নগদের জোগান। এই পরিস্থিতি তৈরি হলে ব্যাঙ্কগুলিকে জমায় সুদ কমানোর ব্যাপারে দু’বার ভাবতে হবে।

(মতামত ব্যক্তিগত)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement