প্রথম বারে আগ্রহী লগ্নিকারীর দেখা মেলেনি। দ্বিতীয় দফাতেও বিনিয়োগ টানতে পারল না রাজ্যের হার্ডওয়্যার পার্ক।
সোনারপুরে ওই পার্ক গড়তে তুলে রাখা আছে প্রায় ১১ একর জমি। আগ্রহী লগ্নিকারীদের সেই জমি দিতে সেপ্টেম্বর নাগাদ ই-নিলাম ডেকেছিল রাজ্য। কিন্তু সে বার সাড়া না-মেলায় ফের দরপত্র চাওয়া হয় নভেম্বরে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, সেই নিলামেও সাড়া পাওয়া যায়নি। অথচ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মিলিয়ে এই বিনিয়োগের সঙ্গে আটকে ১০ হাজারের বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ।
হার্ডওয়্যার পার্কে লগ্নি টানতে এ ভাবে বারবার হোঁচট খাওয়ার কারণ হিসেবে উঠে আসছে জমির চড়া দাম। সঙ্গে গেরো আইনি জটিলতাও।
এখানে প্রতি একরের ন্যূনতম দর ধরা হয়েছিল প্রায় তিন কোটি টাকা। কিন্তু সংশ্লিষ্ট শিল্পমহলের মতে, এই দাম দেওয়ার মতো চাহিদা অন্তত এখন পশ্চিমবঙ্গের বাজারে নেই। ছ’বছর আগে যে-সব লগ্নিকারী আগ্রহ দেখিয়েছিলেন, তাঁদেরও জমি দিতে চেয়েছিল রাজ্য। এ বার দরপত্র না-দিলেও বাজিয়ে দেখা হয়েছিল তাঁদেরও। কিন্তু সাড়া মেলেনি। তাই অর্থ দফতরের কাছে জমির দর কমানোর আর্জি জানানো ছাড়া আপাতত আর কোনও উপায় নেই বলে মনে করছে তথ্যপ্রযুক্তি দফতর। পার্কের দায়িত্বে থাকা রাজ্য সরকারি সংস্থা ওয়েবেল অবশ্য বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ।
বছর তিনেক আগে জোরকদমে পার্ক গড়ার কাজ শুরু হয়েও থমকে গিয়েছিল আইনি লড়াইয়ের কারণে। প্রায় ১১ একরের পার্কে আইনি জটে জড়িয়ে গিয়েছিল পাঁচ একরের একটি জমি। তার সঠিক দাম দেওয়া হয়নি বলে রাজ্যের বিরুদ্ধে মামলা করেন একজন জমিদাতা। তার নিষ্পত্তি এখনও হয়নি।
আপাতত সেই আইনি লড়াইকে পাশে সরিয়ে রেখেই বাকি জমি বিপণন করতে মাঠে নামে রাজ্য। টানতে চাইছিল লগ্নিকারী। কিন্তু সাফল্য এখনও অধরা।
২০১০-এ পূর্বতন বাম জমানায় হার্ডওয়্যার পার্কের শিলান্যাস হয়। প্রায় ৯ কোটি টাকায় জমি কেনা হয়। পূর্ব পরিকল্পনা মতো পার্কে ২০টি সংস্থার জায়গা হওয়ার কথা। কিন্তু পরিকাঠামোর অভাব ও আইনি সমস্যায় দেরি হয় জমি নিলামে তুলতে। সংশ্লিষ্ট শিল্পের ক্ষোভ, তখন থেকেই টাকা ঢালতে আগ্রহীর সংখ্যা কমতে থাকে। আর এখন যা বাজার, তার তুলনায় অনেকটা চড়া জমির দর। তাই ২০১৫ সালে যে-পার্ক পুরোদমে চালুর পরিকল্পনা ছিল, এখনও পর্যন্ত তার লগ্নিকারীর খোঁজ পেতেই হন্যে হতে হচ্ছে রাজ্যকে।